চট্টগ্রামের হাজারী গলির পরিবেশ শান্ত, খুলে দেওয়া হচ্ছে দোকান
দুদিন আগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী হাজারী গলিতে শান্তি ফিরেছে। সংঘাত আর পুলিশ-সেনাবাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় সিলগালা করে দেওয়া কয়েকশ দোকান খুলে দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকাল থেকে যৌথবাহিনীর উপস্থিতিতে দোকানে লাগানো সিলগালা খুলে নেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে স্বস্তি ফিরেছে পাইকারি ওষুধ বাজার ও স্বর্ণ পট্টি হিসেবে খ্যাত হাজারী গলির ব্যবসায়ীদের মুখে।
এর আগে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ওসমান আলী নামের একজন ব্যবসায়ীর ইসকনবিরোধী একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে হাজারী লেনে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। আনুমানিক ৫০০-৬০০ জন দুষ্কৃতিকারী হাজারী লেনে ওসমান আলী ও তার ভাইকে হত্যা এবং দোকান জ্বালিয়ে দেওয়ার উদ্দেশে জড়ো হন। স্থানীয় কন্ট্রোল রুম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং বিজিবি সদস্যদের ৬টি টহল দল উক্ত এলাকায় পৌঁছায়। বিশৃঙ্খলাকারীদের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় জানমাল রক্ষা এবং মব জাস্টিস রোধে যৌথবাহিনী ওসমান আলী ও তার ভাইকে উক্ত এলাকা থেকে উদ্ধার করে।
উত্তেজিত জনতাকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধানের বিষয়টি আশ্বস্ত করা সত্ত্বেও এক পর্যায়ে উগ্র বিশৃঙ্খলাকারীরা আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। এ সময় দুর্বৃত্তরা যৌথবাহিনীর ওপর অতর্কিতভাবে জুয়েলারির কাজে ব্যবহৃত এসিড হামলা চালায় এবং ভারী ইট-পাটকেলসহ ভাঙা কাচের বোতল ছুড়তে শুরু করে। এর প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীর ৫ জন সদস্যসহ ৭ পুলিশ সদস্য আহত হন।
- চট্টগ্রামে যৌথবাহিনীর ওপর এসিড হামলা, আটক ৮০
- ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলায় ইসকন সমর্থকরা জড়িত’
- ‘বাংলাদেশ ফিলিস্তিন-কাশ্মীর-মিয়ানমার হোক সেটা আমরা চাই না’
- চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে দুর্বৃত্তের হামলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১২ সদস্য আহত
যৌথবাহিনীর ওপর দুই দফায় এসিড হামলা ও ভারী ইট-পাটকেলসহ ভাঙা কাচের বোতল ছুড়ে মারার ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন ৮০ জনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে সিলগালা খুলে দেওয়ার সময় দোকানি আর ব্যবসায়ী সমিতির নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
বুলিয়ান সমিতির সভাপতি কৃষ্ণ কর্মকার বলেন, ‘একটা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঘটে গিয়েছিল। যৌথবাহিনীর সহযোগিতায় আমরা আবারও আগের পরিবেশ ফিরে পেয়েছি। এখানে প্রায় ৩০০-৪০০ দোকান আছে। মঙ্গলবারের সমস্যার কারণে দোকানগুলো সিলগালা করে দেওয়া হয়েছিল। এখন সবার সহযোগিতায় আমরা আবার দোকানে বসতে পারছি। কোন সন্ত্রাসীরা যৌথ বাহিনীর ওপর অ্যাসিড হামলা করেছে তা চিহ্নিতে আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তাদের দিয়ে সহযোগিতা করব।’
আরেক ব্যবসায়ী নেতা চন্দন দত্তও একই কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, সোনার দাম বাড়ার কারণে এমনিতেই ব্যবসায়ীদের করুণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আশা করছি হাজারী গলির পরিস্থিতি এখন থেকে শান্ত থাকবে। আমরাও শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা করতে পারব।’
যৌথবাহিনী তদন্তের স্বার্থে সেখানকার বিভিন্ন দোকানের সিসি ক্যামরার ফুটেজ সংগ্রহ করে।