পান চাষে মঞ্জু মিয়ার বছরে আয় ৫ লাখ টাকা

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পান চাষে মঞ্জু মিয়ার বছরে আয় ৫ লাখ টাকা/ছবি: বার্তা২৪.কম

পান চাষে মঞ্জু মিয়ার বছরে আয় ৫ লাখ টাকা/ছবি: বার্তা২৪.কম

পান চাষে ঝুঁকছেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের কৃষকেরা। এ অঞ্চলের বেলে দোআঁশ মাটি হওয়ায় সব ধরনের ফসলের ভালো ফলন হয়ে থাকে। চলতি বছরে পান চাষ করে হাসি ফুটেছে এ অঞ্চলের কৃষকদের মুখে। এ অঞ্চলের কৃষিজমিতে পানি জমার সম্ভাবনা কম থাকায় পানের বরজে পানি জমার সম্ভবনা থাকে না। এতে লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলে কৃষকেরা মিঠা জাতের পান চাষ করে সাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন ।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পান চাষ করে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কয়েকজন কৃষক নিজের কয়েক বিঘা জমিতে পান চাষ করেছেন। সেখানে ছোট-বড় মিলে প্রায় ১০টি পানের বরজ রয়েছে। ধান, গম, ভূট্টা চাষের থেকে পান চাষে খরচ কম ও অধিক লাভ হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকেরা পান চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

তবে পান চাষীদের অভিযোগ, কৃষি অধিদফতর চাষীদের কাছে কোনো ধরনের সহায়তা পৌঁছান না। নিয়মিত পান চাষিদের পরামর্শ কিংবা সহায়তা করলে আরও ভালো ফলন হবে বলে আশা করছেন তারা।

আরও জানা যায়, চাষ হওয়া এ অঞ্চলের পান ৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যে তুলে স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন বাজারে পাইকাররা নিয়ে সরবরাহ করেন। এক পানের বরজ তৈরি করে ১৫ থেকে ২০ বছর পান সংগ্রহ করা যায়।

বিজ্ঞাপন
মঞ্জু মিয়ার পানের বরজ/ছবি: বার্তা২৪.কম

মাগুড়া সবুজপাড়া এলাকার পান চাষি মঞ্জু মিয়া জানায়, আমার এক বিঘা জমিতে পানের বরজ করেছি। পানের বরজ তৈরির ৬ বছর হচ্ছে, আমি পান তুলে বাজারে বিক্রি করছি। এসব পান চাষে অন্যান্য ফসলের থেকে খরচ খুবই কম। পানের এক বরজ চাষ করে ১৫-২০ বছর পান সংগ্রহ করা যায়। পান চাষের আগে আমি ধান, ভূট্রা থেকে তেমন লাভ করতে পারিনি কখনো কখনো লস হয়ে যেত। পান চাষে করে আমি ব্যাপক আর্থিক লাভবান হয়েছি। এখান থেকে আমি চাইলে সপ্তাহে কিংবা মাসে পান তুলে বিক্রি করতে পারি। আমার এক বিঘার জমির পানের বরজে বছরে ৫ লাখ টাকা আয় হয়। এখন পান চাষ করে আমি সাবলম্বী হচ্ছি।

আরেক পান চাষী আব্দুর সালাম বলেন, বর্তমান সময়ে পান চাষ লাভজনক হয়ে উঠেছে। আমি আমার ২০ শতক জমিতে পান চাষ করেছি। সেখানে পান চাষ করে আমি সাবলম্বী হচ্ছি, আমি সপ্তাহে সপ্তাহে পান তুলি। আমার এখানে এসে বাজারের পাইকাররা পান কিনে নিয়ে যায়। আমাদের এলাকায় এখন অনেকে পান চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। তবে কৃষি অফিস থেকে আমাদের তেমন সহায়তা করা হয় না ভালোভাবে সহায়তা করলে আমাদের ফলন আরও ভালো হত আমরাও লাভবান হতাম। আমাদের পাশের উপজেলায় মানুষ পান চাষ করেছে সেটা দেখে আমরা অনেকে পান চাষ চাষে আগ্রহী হয়েছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, এ অঞ্চলের কৃষকেরা পান চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। তারা বাজারে পান নিয়ে যান বাসায় টাকা নিয়ে আসেন। পানের বরাজ তৈরির ৬-৭ মাসের মধ্যে তা তুলে বাজারে বিক্রি করা যায়। যেভাবে পান চাষ এগিয়ে যাচ্ছে সেটা অচিরে স্থানীয় বাজার জাত হয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাবে। কৃষি অফিস থেকে পান চাষীদের পরামর্শ দিয়ে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করছি। আমরা ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছি সেখান থেকে কিছু সহায়তা আসলে তাদের দেওয়া হবে।