মাদকাসক্ত ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন বিধবা মা ও পরিবারের লোকজন। মাদকের নেশা থেকে ছেলেকে ফেরাতে নানা চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তারা। পরে ছেলের বিরুদ্ধে মা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলে তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা সরকার প্রমা ভ্রাম্যমাণ আদালতে বসিয়ে এই দণ্ডাদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ছেলে মেহেদি হাসান অন্তর (২১) পৌর শহরের মধ্যবাজার এলাকার মৃত নিমাই মিয়ার ছেলে।
জানা গেছে, ১৭ বছর আগে অন্তরের বাবা মারা যান। এরপর থেকে তার মা তিন ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে কষ্টে জীবনযাপন করছিলেন। সম্প্রতি অন্তর মাদকাসক্ত হয়ে মাদকের টাকার জন্য সংসারে অশান্তি ও পরিবারের ওপর অত্যাচার শুরু করে। পরে সোমবার প্রশাসনের কাছে অন্তরের মা অভিযোগ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ জানান, সোমবার এক নারী তার ছেলেকে নিয়ে এসে বলেন, প্রায় ১৭ বছর ধরে তিনি স্বামী হারা। তিন ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে জীবন সংগ্রাম করছেন তিনি। এর মধ্যে এক ছেলে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। চাহিদা মতো টাকা না দিলেই নির্যাতন করে।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুনন্দা দরকার প্রমা বলেন, মা ও ভাইয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হয়। এ সময় অভিযুক্ত অন্তর মাদক সেবনের কথা স্বীকার করেন। তখন মা ও ভাইয়ের সাক্ষীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে জমি সংক্রান্ত ঝামেলা মীমাংসা করতে গিয়ে কারাগারে গেলেন জয়নাল আবেদীন বাবলু নামে এক প্যানেল চেয়ারম্যান। জয়নাল আবেদীন বাবলু কালিগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ও প্যানেল চেয়ারম্যান।
সোমবার (২ নভেম্বর) দুপুরে কালিগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
আটককৃত ইউপি সদস্যের পরিবার জানায়, ভোটমারি ইউনিয়নের শৌলমারী এলাকার রনজিৎ কুমার ও আমিনুর রহমানের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত তিনদিন আগে তাদের মধ্যে ঝগড়া বিভাত সৃষ্টি হয়। বিষয়টি মীমাংসার জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মীমাংসা করার চেষ্টা করেন। পরে আমিনুর রহমান বাদী হয়ে কালিগঞ্জ থানায় জয়নাল আবেদীন ও রঞ্জিত কুমারসহ ১০ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সোমবার দুপুরে কালিগঞ্জ থানা পুলিশ জয়নাল আবেদীন কে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম মালিক গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে এজাহারের সূত্র ধরে ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এক্স স্টুডেন্ট ফোরাম অব ফেনী (জুয়েসফফ) এর প্রথম কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন গোলাম ও হোসেন রাজু ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মো. শরিফুর রহমান আদিল।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) সংগঠনের উপদেষ্টা মো. ওমর ফারুক ও এডভোকেট শৈবাল দত্ত কমিটির অনুমোদন দেন।
কমিটির অন্যান্য পদে রয়েছেন সহ সভাপতি পদে মঈন কিরণ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে নিজাম উদ্দিন শামিম, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে হারুনুর রশিদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মহি উদ্দিন ও আমজাদ হোসেন, অর্থ সম্পাদক পদে হাসান আহমেদ, সহ অর্থ সম্পাদক পদে আবু নুর কাওসার, এডভোকেট আনোয়ার হোসেন ফরহাদ, আতাউর রহমান ও প্রচার সম্পাদক পদে রয়েছেন এহসানুল মাহবুব যোবায়ের।
এই কমিটি আগামী তিন বছরের জন্য কাজ করবে বলে জানানো হয়। এছাড়াও দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেয়া হয়।
তীব্র ভাঙনে মেঘনায় বিলীন হচ্ছে চরফ্যাশন উপজেলার মূল ভূখণ্ডের বাহিরে বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন ঢালচর। এই ইউনিয়নটিতে বর্তমানে প্রায় ১২ হাজার মানুষের বসবাস। ভাঙনে দিন দিন বিলীন হচ্ছে বসতঘর, রাস্তা-ঘাট ও ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। বসতঘর হারিয়ে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে রাস্তার পাশে সরকারি জমিতে ঝুঁপড়ি ঘর তুলে বসবাস করছেন।
কিন্তু দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর ধরে ঢালচর ইউনিয়ন মেঘনার ভাঙনের শিকার হলেও এখনো ভাঙন রোধের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে দ্রুত ভাঙন রোধ না করলে মেঘনার ভাঙনের শিকার হয়ে ইউনিয়নটি অচিরেই বিলীন হয়ে যাবে মনে করছেন বাসিন্দারা। ইউনিয়নের তিন দিকে মেঘনা নদী ও একপাশে বঙ্গোপসাগর মোহনা।
চরফ্যাশন উপজেলার মেঘনা নদীর বুকে জেগে উঠা বিচ্ছিন্ন ঢালচর ইউনিয়ন আগে চর কুকরি-মুকড়ি ইউনিয়নের সাথে থাকলেও ২০১০ সালের দিকে পৃথক ইউনিয়ন হিসেবে ঢালচর ইউনিয়ন গঠিত হয়। শুরু থেকে ঢালচর ইউনিয়নে প্রায় ১৭ হাজার মানুষের বসবাস থাকলেও বর্তমানে প্রায় ১২ হাজার মানুষ বসবাস করছেন। ঢালচর ইউনিয়নে রয়েছে তারুয়া সমুদ্র সৈকত। এখানকার মানুষের একমাত্র আয়ের উৎস মৎস্য ও কৃষি কাজ। বেশ কয়েক বছর ধরে অল্প অল্প করে ভাঙন শুরু হয় ঢালচর ইউনিয়নটি। কিন্তু গত ৫ বছর ধরে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ঢালচর ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা মেঘনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। একাধিকবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে অনেক পরিবার বসতঘর, ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে সরকারি জমিতে ঝুঁপড়ি ঘর তুলে কোনো রকম বসবাস করছেন। আবার কেউ কেউ ছেড়েছেন ঢালচর।
তবে স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘ দিন ধরে ভাঙন রোধে কার্যকরী পদক্ষেপের জন্য দাবি জানালেও এখনো কোনো ভাঙন রোধের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এতে করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঢালচর ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
ঢালচর ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা আবু তাহের, মো. রফিক ও মো. রিয়াজ জানান, তারা ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে ঢালচরে বসবাস করছেন। তাদের বসতঘর একবার ভাঙে আর কিছু দূরে গিয়ে আবারও বসতঘর করলে আবার ভাঙনের শিকার হন। এভাবে তারা পৃথক পৃথকভাবে কেউ ১০ বার, কেউ ৭ বার আবার কেউ ৩ বার মেঘনা নদীর ভাঙনের শিকার হয়েছে। নদী ভাঙনের কারণে কয়েক দফায় বসতঘর ও ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। বর্তমানে তারা সব হারিয়ে সরকারি জমিতে ঝুঁপড়ি ঘর তুলে বসবাস করছেন।
মাইনুর ও রেনু বেগম জানান, তাদের স্বামীরা নদীতে মাছ শিকার করে কোন রকম সংসার চালান। কিন্তু নদী ভাঙনের কারণে তারা শান্তিতে নেই। এ পর্যন্ত তারা ৭ থেকে ৮ বার ভাঙনের শিকার হয়েছেন। গত ৩ বছর আগে আনন্দ বাজার সংলগ্ন এলাকায় বসতঘর তুলে বসবাস করছেন। কিন্তু এখন নদী তাদের বসতঘরের সামনে চলে আসছে। আর যেভাবে ভাঙছে হয়ত একমাস তারা এখানে থাকতে পারেন কিনা সন্দেহ রয়েছে। তবে এতবার ঢালচর ভাঙছে, কিন্তু সরকার কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও শাহে আলম জানান, নদী ভাঙনের কারণে হাজার হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। অনেক পরিবার ঢালচর থেকে চলেও গেছে। এখনও প্রায় ১২ হাজার মানুষ বসবাস করছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভাঙন রোধের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দ্রুত ভাঙন রোধের ব্যবস্থা নেওয়া জন্য বর্তমান সরকারের কাছে জোর অনুরোধ জানান তারা। এছাড়াও ভাঙনের শিকার হয়ে সব হারিয়ে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে সরকারি জমিতে ঝুঁপড়ি ঘর তুলে বসবাস করছেন। তারা সরকারের কাছে পুনর্বাসন করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো-২) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদৌলা জানান, ভোলায় বর্তমানে মেইন ল্যান্ড ভাঙন রোধে কয়েকটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। সেগুলোর কাজ শেষ হলে প্রকল্পের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ঢালচরকে মেঘনা নদীর ভাঙন রোধের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ভোলা জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান জানান, ঢালচর ভাঙন রোধের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও ভাঙন কবলিতে পুনর্বাসনের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা আশ্বাস দেন তিনি।