প্রতিবন্ধকতা কাটলে দ্রুত শেষ হবে মেট্রোরেল মতিঝিল-কমলাপুর অংশ

  • অভিজিত রায় (কৌশিক) স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

রাজধানীর যানজট নিরসন করে দ্রতগতির যান হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে মেট্রোরেল। যানজটের শহর ঢাকায় মানুষের চলার গতি বৃদ্ধিতে অনস্বীকার্য ভূমিকা রাখা মেট্রোরেল আরও কয়েকটি রুটে চালুর তোড়জোড়ও চলছে বেশ। মেট্রোরেলকে শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রসারণের লক্ষ্যে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে রাজধানীর মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের কাজ।

তবে এই অংশের কাজে দেখা দিয়েছে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা। এই প্রতিবন্ধকতা কেটে গেলেই দ্রুত গতিতে এই অংশের কাজ শেষ করে আগামী ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে রাজধানীর মতিঝিল অংশে মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর ঠিক মতিঝিল মোড়ের উপরেই অবস্থিত মেট্রোরেল লাইন ৬ প্রকল্পের ৬৩২ নাম্বার পিলার। মতিঝিল মেট্রোরেল স্টেশনটি গিয়ে শেষ হয়েছে ৬২৬ নাম্বার পিলার। অর্থাৎ মেট্রোস্টেশন থেকে মতিঝিল মোড়ে অবস্থিত পিলারটির দূরত্ব ৬টি পিলারের। এর মধ্যে স্প্যান বসানো হয়েছে ৬৩১ নাম্বার পিলার পর্যন্ত। আর মাত্র একটি পিলার পর্যন্ত স্প্যান বসানো হলেই মতিঝিল মোড় পর্যন্ত দৃশ্যমান হবে মেট্রোরেল চলাচলের লাইন।

মতিঝিলের শাপলা চত্বর পর্যন্ত দৃশ্যমান হতে আর েএকটি স্প্যান বাকি, ছবি: বার্তা২৪.কম

এদিকে, মেট্রোরেলের লাইনের কাজের জন্য যাবতীয় প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি লাইনের ঠিক নিচের অংশে রেখে দেয়ার চিত্রও দেখা গেছে। এছাড়া মেট্রোরেলের ৬২৮ নম্বর পিলারের সাথে একটি ওঠা নামার সিঁড়িও দেখা গেছে। এছাড়া উপরে নবনির্মিত লাইনের উপর একটি ক্রেন যা ভারী যন্ত্রাংশ উঠানো-নামানোর জন্য এবং নিচে একটি স্কেভেটর মেশিনও দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ বার্তা২৪.কমকে বলেন, মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশ আগামী ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে খুলে দেওয়ার প্লান আছে। এই লক্ষ্যেই কাজ এগিয়ে চলছে। আমাদের কাজগুলো যথারীতি এগিয়ে যাচ্ছে। সিভিল ওয়ার্কগুলো ভালোভাবে আগাচ্ছে। আমাদের ইলেকট্রিক্যাল মেকানিক্যাল কাজে কিছু চ্যলেঞ্জ আছে। ভায়াডাক্টের উপর যে ট্রাকগুলো তার ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালিং যে বিষয়গুলো আছে সেখানে আমোদের কিছু চ্যালেঞ্জ আছে।

ছবি: বার্তা২৪.কম

চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় বিকল্প কোন ধরনের চিন্তা করছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের প্রস্তুতি চলছে। এটা তো এক্সটেন্ডেন্ট ওয়ার্ক যারা আগের কাজগুলো করেছে তারাই করছে। এই কাজের জন্য আমরা ঠিকাদার নিয়েগের কাজগুলো এখনও ফাইনাল করতে পারি নাই। এটা চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এটা যতদ্রুত করতে পারবো তাহলে আমাদের ডিসেম্বরে এই রুট চালুর কাজটি ততোটাই সহজ হবে। এখানেই আমাদের একটু চ্যালেঞ্জ।

বর্তমানে মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, মেট্রোরেল লাইন-৬ এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. জাকারিয়া এই বিষয়ে আপনাকে সাহায্য করতে পারবেন।

স্প্যানের নিচে পড়ে আছে মেট্রোরেলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

পরে প্রকল্প পরিচালক মো. জাকারিয়া এর কাছ থেকে সঠিক তথ্য সংগ্রহের পরামর্শ দেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ।
তবে ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-৬) এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. জাকারিয়া কাছে এই অংশের অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি ওয়েবসাইট থেকে দেখে নেন কথা বলে ফোন কেটে দেন।

উল্লেখ্য, জাইকা ও ডিএমটিসিএল ২০৩০ সাল নাগাদ ১২৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মোট ৬টি মেট্রো লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে। এই নেটওয়ার্কে ৫১টি উড়াল স্টেশন ও ৫৩টি ভূগর্ভস্থ স্টেশন থাকবে। ছয়টি লাইন মিলিতভাবে দিনে ৪৭ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে।