এলসি খুলতে না পারায় কাঁচামালের অভাবে ৯ কারখানা বন্ধ
ঋণপত্র (এলসি) খুলতে না পারায় কাঁচামালের অভাবে চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের ৯টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আগের এলসিতে সরকারের স্থগিতাদেশ এবং নতুন করে এলসি খুলতে না পারায় সম্প্রতি এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এ কারণে কারখানা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে দেশের স্বনামধন্য এ শিল্প গ্রুপটি।
এদিকে কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শ্রমিকরা। তারা কারখানা বন্ধ হওয়ার জন্য পরোক্ষভাবে সরকারকে দায়ী করেন। অবিলম্বে কারখানা খোলা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শিল্পগ্রুপটির মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘মূলত এলসি খুলতে না পারা ও কাঁচামালের অভাবে কারখানাগুলো বন্ধ রাখতে হচ্ছে। আমাদের বিভিন্ন কারখানার জন্য গত ৫ আগস্টের (সাবেক সরকারের পতনের দিন) আগে যত এলসি (ঋণপত্র) খোলা হয়েছিল সেগুলো স্থগিত করা হয়েছে। এরপর নতুন করে এলসি খোলাও সম্ভব হয়নি। এ কারণে কারখানাগুলোতে উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের সংকট দেখা দিয়েছে। তিনি জানান, উৎপাদন না করে কারখানা খোলা রাখলে খরচ বাড়ে। তাই এই সিদ্ধান্ত।’
বন্ধ ঘোষণা করা এস আলম গ্রুপের চট্টগ্রামের ৯টি কারখানার মধ্যে রয়েছে- কর্ণফুলীর এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বাঁশখালীর এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল নফ, এস আলম পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড, ইনফিনিটি সিআর স্ট্রিপস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, চেমন ইস্পাত লিমিটেড, এস আলম ব্যাগ ও এস আলম স্টিল। এসব প্রতিষ্ঠানে ১২ হাজারের বেশি লোক কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে এস আলম গ্রুপের মানবসম্পদ ও প্রশাসনের প্রধান মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিনের সই করা নোটিশে বলা হয়, কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে অনিবার্য কারণবশত বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারখানাগুলো বন্ধ থাকবে। তবে কারখানার নিরাপত্তা, সরবরাহ ও জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে। কারখানা খোলার পরবর্তী তারিখ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী নোটিশে জানানো হবে।
এমন ঘোষণার পরই চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। অবিলম্বে কারখানা খোলা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
দীর্ঘদিন এস আলমের কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা ছিল। এখন হঠাৎ কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবার কীভাবে চলবে, তা নিয়ে সংশয়ের কথা জানিয়েছেন শ্রমিকরা। এলসি খোলার সুযোগ দিয়ে কারখানা চালু রাখার দাবিতে তারা বিক্ষোভ করেছেন। শ্রমিকরা হুঁশিয়ার করে বলেছেন, দ্রুত কারখানা খোলার ব্যবস্থা না করলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। শ্রমিকরা আরও জানান, কাঁচামাল আনতে না দিয়ে সরকারই পরোক্ষভাবে কারখানাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এখন আমাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হবে।