মোংলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৫০ জন
বাগেরহাটের মোংলায় হঠাৎ করে বেড়েছে ডায়রিয়ার রোগী সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। আর প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন অনেকেই। হঠাৎ করে ডায়রিয়ার রোগীর চাপ বাড়ায় ৫০ শয্যার এ হাসপাতালের ফ্লোরে জায়গা হচ্ছে রোগীদের। তবে রোগীদের সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিবার ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাহীন জানান, হঠাৎ করেই বাড়ছে মোংলায় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় এ রোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন ৫০ জন রোগী। এসকল রোগীর মধ্যে রয়েছে শিশু ও বয়স্করা। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের রয়েছে পাতলা পায়খানা, পেটে ব্যথা ও বমির মত উপসর্গ। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার এক-দুইদিন পর হাসপাতালে আসেন এসব রোগীরা। হাসপাতালে ভর্তি হলেও এখনও অনেকেরই শারীরিক অবস্থার তেমন উন্নতি ঘটেনি। বেশির ভাগই চরম অসুস্থতায় রয়েছেন। প্রত্যেকেরই শরীরে দেয়া হচ্ছে স্যালাইন, ইনজেকশনসহ ওষুধও। ডায়রিয়ায় বেশির ভাগ রোগীই যেন নাজেহাল হয়ে পড়েছেন। কোনো কোনো রোগীর ৩ ০বারও বাথরুম হয়েছে। তাই এ সকল রোগীদের ভিড়ে বাড়তি চাপে রয়েছেন হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সরা। দেখা দিয়েছে চরম শয্যা সংকটও। তাই হাসপাতালে ফ্লোরে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী মানিকের (১৪) মা আমেনা বেগম বলেন, হঠাৎ ভোর রাত থেকে পেটে ব্যথা ও বমির পাশাপাশি পাতলা পায়খানায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তার ছেলে। ৬/৭ বার বাথরুম হওয়ার পর বুধবার সকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এখন অবস্থা কিছুটা ভালো।
ডায়রিয়া আক্তার হয়ে ফ্লোরে চিকিৎসা নেয়া মো. ইদ্রিস বলেন, রাত থেকেই পাতলা পায়খানা, পেটে ব্যথা ও বমি শুরু হয়। এরপর সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।
হাসপাতালের বেডে থাকা রোগী দেলোয়ার হোসেন বলেন, মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত থেকে ডায়রিয়া শুরু হয়। এরপর স্যালাইন ও ওষুধ খেলেও কমেনি। প্রায় ৩০বারের মত বাথরুম হওয়ার পর নিরুপায় হয়ে রাতে হাসপাতালে ভর্তি হই।
বেড না পেয়ে ফ্লোরে জায়গা হওয়া আল-আমিনের পিতা মনিরুজ্জামান বলেন, হঠাৎ রাত থেকে পাতলা পায়খানা শুরু হয় তার ছেলের। সাথে বমি ও পেটে ব্যথাও। পরে অবস্থা খারাপ দেখে সকালে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. বুলেট সেন বলেন, মূলত পানির সমস্যার কারণেই একসাথে এতো রোগী আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই রোগীদের খাবার পানি ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
উপকূলীয় মোংলায় দীর্ঘদিনের বড় সমস্যা সুপেয় পানি। নিরাপদ পানির সংকটে প্রতিনিয়তই পেটের পীড়ায় আক্রান্ত থাকেন এখানকার মানুষ। তাই নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা এ এলাকার বাসিন্দাদের জন্য এখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।