সংযোগ সড়ক নেই, পড়ে আছে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সেতু
সংযোগ সড়ক না থাকায় ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের সোহাগী ইউনিয়নের বগাপুতা খালের ওপর নির্মিত সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সেতুটি কোন কাজে আসছে না। যানবাহন চলাচল না করায় ধান মাড়াই ও শুকানো সহ সেতু ব্যবহার করা হচ্ছে পারিবারিক কাজে।
স্থানীয়রা জানান, ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ি আঞ্চলিক সড়কের ১৫ কিলোমিটার ঝকঝকে। কিন্ত ওই সড়কের দুঃখ হল বগাপুতা খালের ওপর নির্মিত সেতুটি। দুইপাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি জনগণের কোন কাজে আসছে না। বাধ্য হয়েই পাশের পুরোনো নড়বড়ে সেতু দিয়ে যানবাহন ও পথচারীরা চলাচল করছে। এতে যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালে ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ঈশ্বরগঞ্জ- আঠারবাড়ি ১৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে ২০২২ সালের শুরুতেই সোহাগী এলাকার বগাপুতা খালের ওপর নির্মিত হয় ৩১.৮২৮ মিটার এই সেতুটি। যার ব্যয় ধরা হয় ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তাহের এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠানটি এই সেতুর কাজ করেন।
দরপত্র অনুযায়ী যথা সময়ে কাজ শেষ করা হলেও সময় বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৬ সাল পর্যন্ত। কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, দুই বছর আগেই সড়কসহ সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতায় ঠিকাদার সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক করতে পারছে না। সেতুর অবকাঠামো নির্মাণ শতভাগ শেষ হলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ আটকে আছে।
জমি ও স্থাপনার মালিকরা বলছেন, প্রায় দুই বছর ধরে ক্ষতিপূরনের টাকা পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার ধন্না দিয়েও কাজ হচ্ছে না।
জমির মালিক আব্দুল গফুর, মিরাস উদ্দিন ও মজিবুর রহমান জানান, তাদেরকে জমি অধিগ্রহণের নোটিশ দিয়ে জমি নিলেও পরে আর কোনো খবর নেয়নি। এই জন্য তারা ক্ষতিপূরনের টাকা না পেয়ে এক ধরনের ভোগান্তিতে পড়েছেন। যার কারণে টাকা না পাওয়া পর্যন্ত এখন আর কাজ করতে দেওয়া হবে না।
বগাপুতা গ্রামের জমির মালিক হেলিম মিয়া জানান, সেতু নির্মাণ ও প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা এবং অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হলেও ভূমি অধিগ্রহণ আর স্থাপনার ক্ষতিপূরনের টাকা দুই বছরেও বুঝে পাননি। ক্ষতি পূরনের টাকা না পাওয়ায় কাজে বাধা দিয়েছেন। তারপরও কর্তৃপক্ষের কোনো টনক নড়ছে না।
সেতুর কাজটির তদারকির দায়িত্বে আছেন কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী বিজয় বসাক বলেন, আমরা জমি অধিগ্রহণের জন্য ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখা হয়েছে। এখন সেখান থেকে ইস্টিমেট অনুযায়ী ভূমির মালিকদের টাকা বুঝিয়ে দিলেই আমরা কাজ শুরু করতে পারবো।