ঢাকা জেলায় ভাড়ায় চালিত সিএনজি অটোরিক্সা ‘ঢাকা থ’ রাজধানীতে চলাচলের অনুমতি প্রদানসহ সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকা জেলা ভাড়ায় চালিত সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতি।
রোববার (৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই দাবি জানানো হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ঢাকা মহানগর হতে ২০০২ সালে ৩৬ হাজার বেবীটেক্সী উচ্ছেদ করে মাত্র ১৩ হাজার সিএজি অটোরিক্সা অনুমোদন প্রদান করা হয়। ঐসময় প্রায় ৭০ হাজার চালক বেকার হয়ে পড়ে। অবশেষে প্রায় ৩০ হাজার চালকের কাজের ব্যবস্থা হলেও অবশিষ্ট চালকদের কিভাবে দিন কেটেছে বা কাটছে তা হয়তো সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন।
বক্তারা আরও বলেন, ঢাকা জেলার জন্য অনুমোদনপ্রাপ্ত ভাড়ায় চালিত সিএনজি অটোরিক্সা সমূহ জেলার সর্বত্র চলাচল করতে পারছে না। ঢাকা মেট্রো এলাকা জেলার বুকের উপর অবস্থান করায় জেলাটি কয়েক খন্ডে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এই জেলার উপরদিয়ে কয়েকটি মহাসড়ক হওয়ায় খন্ড থেকে বর্তমানে কয়েক টুকরায় জেলাটি বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া জেলায় বেড়ীবাধসহ কিছু কিছু রাস্তায় সিএনজি, অটোরিক্সা চলাচল বন্ধ রয়েছে। মহানগরীর আশেপাশের ১৬টি ইউনিয়ন জেলা থেকে কেটে নিয়ে ২৬টি নতুন ওয়ার্ড গঠন করা হয়েছে। ফলে বর্তমানে নিতান্তই এলাকা সংকুচিত হয়ে খুপড়ি ঘরে পরিনত হয়েছে। অন্য দিকে জেলার এক এলাকা হইতে অন্য এলাকায় সিএনজি অটোরিক্সা চলাচলে ঢাকা মেট্রো এলাকা প্রধান বাধা। যার কারনে মহানগরীর উপরদিয়ে ঢাকা জেলার গাড়ি চালাতে আমরা বাধ্য হচ্ছি।
মানববন্ধনে সংগঠনটির সভাপতি মো. রাশেদ হাওলাদার বলেন, মালিকরা ১০০ থেকে ৩০০ মেট্রো গাড়ির মালিকরা সিন্ডিকেট তৈরী করে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান সহ অন্যান্য আমলারা, দালাল শ্রমিক নেতা ঢাকা মহানগরী হতে ঢাকা জেলার সিএনজি অটোরিক্সা সমূহ উচ্ছেদ করে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার করে এবং মহানগরীতে একচেটিয়া ব্যবসা করার পায়তারা প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছে। অথচ আমাদের ঢাকা জেলার গাড়ি সমূহ মেট্রো গাড়ির ন্যায় এবং সমান সমান সরকারের রাজস্ব রোড পারমিট ফি, আয়কর, ফিটনেস ফি, টেক্স টোকেন ইত্যাদি প্রদান করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে মহানগরীতে মেট্রো ১৫ হাজার, ঢাকা জেলায় ৫ হাজার এবং অন্যান্য জেলায় ২ হাজারসহ মোট ২২ হাজার গাড়ি ঢাকা মহানগরীতে চলাচল করছে যা চাহিদার চেয়ে অনেক কম। তারপরেও শহরের বিভিন্ন স্টান্ড, রাস্তার মোড় মার্কেট সমূহের সামনে, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল সহ সকল সামাজিক স্থানে শতশত যাত্রী ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থেকেও সিএনজি অটোরিক্সা পাচ্ছেন না। ফলে, ঢাকা মহানগরীতে ৪০ থেকে ৫০ হাজার সিএনজি অটোরিক্সা প্রয়োজন রয়েছে।
এমতাবস্থায় আমাদের দাবী গুলো হলো,
১. আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাই নাই, বর্তমান বাংলাদেশে ছাত্র জনতা মিলে আমরা যে শ্লোগান দিয়েছি তার সঠিক বাস্তবায়ন চাই। জেলা গাড়ী এবং মেট্রো গাড়ীর মধ্যে বৈষম্য দূর করতে হবে, অর্থাৎ এই দুইটাই ঢাকার নাম্বার প্লেট।
২. ঢাকা জেলা ভাড়ায় চালিত সিএনজি অটোরিক্সা 'ঢাকা-থ' সমূহ ঢাকা মহানগরীতে চলাচলের অনুমতি প্রদান করতে হবে।
৩. জেলার অর্ন্তগত হাইওয়ে রোড সমূহের পাশে বাইলেন তৈরী করে অথবা অন্য যে কোন উপায়ে সিএনজি অটোরিক্সাসহ ধীরগতির গাড়ী সমূহ চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪. সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একচেটিয়া ব্যবসা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে চালকদের নামে ৫ হাজার রেজিষ্ট্রেশন, জেলার গাড়ী সহ অন্যান্য গাড়ী বিরোধী মেট্রো মালিকদের অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
৫. কথায় কথায় জেলার গাড়ী ট্রাফিক সার্জেন্ট কর্তৃক রেকারী, ড্রাম্পিং করা বন্ধ করতে হবে।
৬. ঢাকা জেলার গাড়ী সমূহ, চালকদের নামের ৫ হাজার সহ আরো নতুন নাম্বার মিলে চালকদের নামে ঢাকা মহানগরীতে সিএনজি অটোরিক্সা চলাচলের বৈধতা প্রদান করে স্বল্প ব্যয়ে নিরাপদ ও আরাম দায়ক যাত্রী চলাচলের সুযোগ করে দেওয়ার দাবি করছি।
৭. মেট্রো মালিকদের সাথে শ্রমিক নেতা নামধারী দালাল চক্র সুর মিলিয়ে জেলা গাড়ীর বিরোধীতার নামে হাজার হাজার চালক বেকার করা যাবে না।