বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নিয়েছেন- নিজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠার পর তা তদন্তের আহ্বান জানালেন যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা (ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অব মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস) লাউরি ম্যাগনাসের কাছে সোমবার একটি চিঠি পাঠিয়েছেন টিউলিপ। খবর বিবিসি’র
চিঠিতে আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি লিখেছেন, ‘আমি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গণমাধ্যমে খবরে বিষয়বস্তু হয়েছি। আমার আর্থিক বিষয় এবং বাংলাদেশের সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে আমার পরিবারের সম্পৃক্ততার কিছু বিষয় উঠে এসেছে, যার অনেকটাই সঠিক নয়। আমি ভুল কিছুই করিনি, এ ব্যাপারে পরিষ্কার। তবে সন্দেহ এড়ানোর জন্য আমি চাই এসব বিষয় সম্পর্কে সত্য তথ্যটা স্বাধীনভাবে আপনি সামনে আনবেন।’
লাউরি ম্যাগনাস উপদেষ্টা হিসেবে মন্ত্রী হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় মানদণ্ডের বিষয়টি দেখভাল করেন। এখন ম্যাগনাস তদন্ত করে দেখবেন- মন্ত্রী হিসেবে টিউলিপ কোনো বিধি লঙ্ঘন করেছেন কিনা। বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) টিউলিপ সিদ্দিক। দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন তিনি। টিউলিপ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। তবে তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করার কোনো সময়সীমা তিনি নির্দিষ্ট করে বলেননি।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিকের বসবাস করা একাধিক ফ্ল্যাট নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। গত শুক্রবার প্রকাশিত সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের খবরে বলা হয়, লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকার কাছে টিউলিপের মালিকানায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। ২০০৪ সালে তাঁকে বিনা মূল্যে ফ্ল্যাটটি দিয়েছিলেন আবদুল মোতালিফ নামের একজন আবাসন ব্যবসায়ী। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল তাঁর।
পরে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আরেক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড এলাকায় টিউলিপ সিদ্দিকের বোনকে বিনা মূল্যে আরেকটি ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন মঈন গনি নামের এক আইনজীবী। তিনি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। হ্যাম্পস্টেডের ওই ফ্ল্যাটে একসময় বসবাস করেছিলেন টিউলিপ। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাটে টিউলিপ ও তাঁর পরিবারের বসবাসের খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে বাংলাদেশে ৯ প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে টিউলিপ, তাঁর খালা শেখ হাসিনা, মা শেখ রেহানা ও শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।