রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় সাড়ে চার ঘণ্টার বিশেষ সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ৪০ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ৮টা হতে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এই বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
মোহাম্মদপুর থানা সূত্রের বরাতে তালেবুর রহমান বলেন, মোহাম্মদপুর থানার চৌকস টিম কর্তৃক সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়। মোহাম্মদপুরের রায়ের বাজার, বোর্ডঘাট, নবীনগর হাউজিং, চাঁদ উদ্যান ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধে ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় গ্রেফতারকৃতদের হেফাজত থেকে অবৈধ মাদকদ্রব্য ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছে মাদক কারবারি, পেশাদার সক্রিয় ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসী, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধী।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
বান্দরবানের আলিকদম উপজেলা সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকালে ৫৮ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ সময় দালাল চক্রের পাঁচ সদস্যকেও আটক করা হয়।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) উপজেলার নয়াপাড়া ইউনিয়নের বুচি তং এলাকায় অনুপ্রবেশের সময় ১২ পুরুষ, ১০ নারী, ৩৭ শিশুসহ মিয়ানমারের ৫৮ রোহিঙ্গা নাগরিক ও অনুপ্রবেশে সহায়তাকারী পাঁচ বাংলাদেশিকে আটক করে বিজিবি।
আটক বাংলাদেশিরা হলেন, উপজেলার দক্ষিণ নয়াপাড়া এলাকার মো. আরিফুল ইসলাম (২৫), জালাল উদ্দীন (২৭), বাজারপাড়া এলাকার মো. নজুরুল ইসলাম (৪০), চৈক্ষ্যং ইউপির আলী মেম্বারপাড়ার মো. আবু হুজাইফা (৩২) ও খুইল্যা চেয়ারম্যানপাড়া এলাকার মো. খোরশেদ আলম (৫৭)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বাংলাদেশি কয়েকজনের সহায়তায় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বেশ কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার ৩ নম্বর নয়াপাড়া ইউনিয়নের বুচি তং এলাকায় অভিযান চালান বিজিবির সদস্যরা।
পরে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের সময় ৫৮ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। এ সময় পাঁচ দালালকেও আটক করা হয়। একই সঙ্গে তাদের ব্যবহৃত একটি ডাম্প ট্রাক, একটি প্রাইভেট কার ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা জহির উদ্দিন জানান, আটক মিয়ানমার নাগরিকদের পুশবেক করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাঁচ দিন পর দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে চারজনের মৃত্যু হলো।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডেঙ্গুতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ব্যক্তি ময়মনসিংহ বিভাগের হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এর আগে গত ৬ জানুয়ারি দুই জনের প্রাণ যায়।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৫ জন। এ নিয়ে নতুন বছরে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা দাঁড়াল ৫৭৩ জনে।
ভর্তি রোগীদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ২৬ জন, ঢাকা বিভাগে সাতজন, ময়মনসিংহ বিভাগে একজন, চট্টগ্রাম বিভাগে চারজন, খুলনা বিভাগে একজন, রাজশাহী বিভাগে পাঁচজন এবং বরিশাল বিভাগের হাসপাতালে একজন ভর্তি হয়েছেন।
ডেঙ্গু নিয়ে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৩২০ জন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ১৭২ জন, ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে রয়েছেন ১৪৮ জন।
শখের বসে ছোটবেলায় পাখি পালন শুরু করেন। ২০০৭ সালে তার বাবা বিদেশি পাখি কিনে দেন তাকে। বাসার ভেতর লালন পালন শুরু করেন। ধীরে ধীরে সেই পরিসর বড় হতে থাকে। ২০১৮ সালে অনেকটা বড় পরিসরে চলে যায় তার শখের এই পাখি পালন। ৫ হাজার থেকে শুরু করে ৬০ হাজার টাকা দামের পাখি রয়েছে তার খামারে।
পাখি পালনে স্বপ্ন বুনছেন তরুণ উদ্যোক্তা টাঙ্গাইল শহরের কান্দিলা এলাকার অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ুয়া ছাত্র সোহান খান। সোহান খান ওই এলাকার মৃত মাহবুবুর রহমান খানের ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লাভবার্ড, ককাটেল, কুনুর, লরিকেট, মং পেরাকিট ও ভার্জিনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৬০ জোড়া বিদেশি পাখি রয়েছে তার খামারে। পাখি দেখতে অনেকেই ছুটে আসছেন তাঁর পাখির খামারে। ২০২৫ সালেই পুরোপুরি বাণিজ্যিকভাবে বাজারে ছাড়বেন এসব পাখি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে তিনি ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছেন এসব পাখি নিয়ে।
জানা যায়, টাঙ্গাইলে ব্যাপক সম্ভাবনার ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে পাখি পালনে। জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিদেশি পাখি পালন। এ পেশায় এগিয়ে আসছেন তরুণ উদ্যোক্তারা। কেউ কেউ ব্যাপক পরিসরে পাখি পালন করতে যাচ্ছেন। দেশেই উৎপাদন করা হচ্ছে লাখ লাখ টাকা দামের পাখি।
পাখির খামার দেখতে আসা হাবিবুল্লাহ শেফুল বলেন, কলেজ পড়ুয়া ছাত্র সোহানের পাখির খামার দেখে ভালো লেগেছে। আমি খুব উদ্ভুদ্ধ হয়েছি। আশা করছি যে যত বেকার সমাজ আছে তারা সোহানের মতো পাখি পালন করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে। আমিও ভবিষ্যৎতে পাখির খামার করবো।
পাখির খামার দেখতে আসা নাহিন বলেন, সোহান ভাইয়ের বাড়ির পাশাপাশি আমার বাড়ি।আমি মাঝে মাঝে খামার দেখতে আসি। আমারও ইচ্ছে আছে সোহান ভাইয়ের পরামর্শ নিয়ে পাখি পালন করার।
পাখি খামার দেখতে আসা আরিফ বলেন, আমি বিভিন্ন জায়গায় দেখতে যেতাম পাখি দেখতে। পাখি দেখতে দেখতে পাখির প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়ে গেছে। আমি নিজেও পাখি পালন করি।
তরুণ উদ্যোক্তা সোহান খান বলেন, আমি ছোটবেলা থেকে পাখি পালন করতেছি। ২০১৮ সালে অনেকটা বড় পরিসরে পাখি পালন শুরু করি।যখন আমার এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হয়। তখন আমি ভাবতে ছিলাম কিছু একটা করা দরকার। পাখি পালনে আমার ছোটবেলার অভিজ্ঞতা ছিল। তাই পাখি পালনকে বেছে নেই। তখন থেকেই পাখি পালন শুরু করি।
তিনি বলেন,বাংলাদেশে পাখির খুব চাহিদা আছে। পাখি পালন যদি কেউ বাণিজ্যিক ভাবে করতে পারে খুবই ভালো। আমি এখন বাণিজ্যিক ভাবে শুরু করতেছি। আমার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভালো অবস্থান রয়েছে। আমার কাছে মানুষ প্রচুর পাখি চায়। আমি মানুষের চাহিদা পূরণ করতে পারি না। বাংলাদেশে প্রচুর পাখি আমদানি হয়। দেশে থেকে যদি পাখির চাহিদা পূরণ করা যায় তাহলে খুবই ভালো। আমাদের দেশে নতুন অনেক পাখির খামার হচ্ছে।
সোহান আরও বলেন, আমি আমার খামারে পাখি বাড়াচ্ছি। আমার খামারে অনেক পাখির জন্ম নিয়েছে। আমার খামারে পাঁচ হাজার টাকা থেকে ষাট হাজার টাকা দামের পাখি রয়েছে। আমার পরিকল্পনা পাখি আরও বাড়ানো। কেউ বেকার বসে আছে। কেউ কাজ পাচ্ছে না। তারা কিন্তু পাখি পালন শুরু করতে পারে। অবশ্যই জেনে পাখি পালন শুরু করতে পারে। কেউ না বুঝে শুরু করলে সমস্যা হবে। ভালো ভাবে জেনে শুরু করলে সফল হবে। তার আর মনে হয় না চাকুরী করার দরকার আছে।
টাঙ্গাইল প্রকৃতি ও জীবন ক্লাবের উপদেষ্টা হারুন অর রশিদ বলেন, পাখির খামার করে বাংলাদেশে তরুণরা সফলতা অর্জন করছে। লাভবার্ড বা বিদেশী যে পাখি এই পাখি গুলো যখন বাংলাদেশে আমদানি করে থাকি। তখন দেখা যায় যে ডলার সংকট। যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সেখানে আঘাত লাগে। সেখানে যদি আমরা বাংলাদেশে বেকার যুবক যারা রয়েছে। যারা তরুণ উদ্যোক্তা রয়েছে তাদেরকে যদি আমরা অনুপ্রাণিত করতে পারি। তাহলে তারা পাখির খামার করে সফলতা অর্জন করতে পারবে। বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।