ফিঙ্গারপ্রিন্ট হোক পর্দানশীন নারীদের পরিচয়ের মাধ্যম
-
-
|

ফিঙ্গারপ্রিন্ট হোক পর্দানশীন নারীদের পরিচয়ের মাধ্যম
জাতীয় পরিচয়পত্রে ছবির বদলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পরিচয় শনাক্তের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পর্দানশীন নারী সমাজ।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা নির্বাচন কমিশন অফিসের সামনে পর্দানশীন নারীদের বঞ্চিত নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়ার ৩ দফা দাবিতে এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে জেলার পর্দানশীন নারী সমাজ।
এ সময় তারা বলেন, মানুষের মুখের ছবি পরিবর্তনশীল। সময় ও অবস্থার সঙ্গে মানুষের চেহারা পরিবর্তণ হয়। এ থেকে প্রমাণিত হয় মুখচ্ছবি পরিচয় যাচাইয়ের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নয়। অথচ সেই মুখচ্ছবির অজুহাতেই পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব বঞ্চিত করা হচ্ছে, শিক্ষা ক্ষেত্রেও করা হচ্ছে বেপর্দা। ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে শনাক্তকরণ দুর্নীতিরোধক হলেও, ছবি ও চেহারা মিলিয়ে দুর্নীতিবান্ধব শনাক্তকরণ পদ্ধতি বিগত সরকারগুলো অনুসরণ করে এসেছে। পর্দানশীন নারীরা এসব হেনস্তার অবসান চান।
তারা আরও বলেন, পরিচয় যাচাইয়ে জোর করে বেগানা পুরুষের সামনে চেহারা খুলতে বাধ্য করা হচ্ছে। শুধুমাত্র পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে পর্দানশীন নারীরা বৈষম্যের শিকার। চেহারার বদলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পরিচয় যাচাইয়ের দাবি তুলেন তারা। আর তাই অসংখ্য পর্দানশীন নারীদের বঞ্চিত নাগরিকত্ব ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে ফিরিয়ে দেয়ার জোর দাবি জানান প্রতিবাদ সমাবেশে আগত পর্দানশীন নারীরা।
সমাবেশে তারা বলেন, গত ১৬ বছর যাবৎ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সাবেক কতিপয় স্বৈরাচারী কর্মকর্তা শুধুমাত্র মুখচ্ছবি না তোলার অজুহাতে পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখেছে। এতে পর্দানশীন নারীরা মৌলিক ও নাগরিক অধিকার বঞ্চিত হয়ে নিদারুণ কষ্টে দিনযাপন করছেন। অনেক পর্দানশীন নারী অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন, কিন্তু এনআইডি ছাড়া ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রি করতে পারছেন না। বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তা পর্দানশীন নারীরা এনআইডির অভাবে বাসাভাড়া নিতে পারছেন না, বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করতে পারছেন না। এসব প্রতিবন্ধকতা অনতিবিলম্বে দূর হওয়া জরুরি বলে মত প্রকাশ করেন নারীরা। আর তা না হলে আগামীতে আরও কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন বক্তারা।
সমাবেশে মুসাম্মদ তৌফিয়া খাতুন, আহমদ নূরজাহান মতি ও মাকসুদা খাতুনসহ প্রায় ৩ শত পর্দানশীন নারী অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশ শেষে জাতীয় পরিচয়পত্রে ছবির বদলে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে পরিচয় শনাক্তের দাবিতে জেলা শিক্ষা অফিসারকে এবং জেলা নির্বাচন কমিশনারের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে স্মারকলিপি প্রদাণ করেন মানববন্ধনে আগত নারী সমাজ।