যেখানে চাঁদাবাজি-দখল, সেখানে গণপরিবহণ বন্ধের সিদ্ধান্ত মালিক-শ্রমিকদের

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি, দখলবাজি এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ না হলে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৃহত্তর চট্টগ্রামের গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা।

তারা বলেন, যেখানে চাঁদাবাজি ও কাউন্টার দখল হবে সেখানে গণপরিবহণ বন্ধ থাকবে। শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রশাসন দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে সেক্টরে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরীর বিআরটিসি স্টেশন রোডে আন্তঃজেলা গণপরিবহন মালিক সমিতির হলরুমে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে ৬৬টি পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি কফিল উদ্দিন আহমেদ।

গণপরিবহণ নেতারা বলেন, চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বহিরাগত সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে বাস কাউন্টার দখলের চেষ্টা এবং চাঁদাবাজির ঘটনা বেড়েছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে কর্ণফুলী শাহ-আমানত ব্রিজ এলাকায় একদল চাঁদাবাজ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঈগল স্পেশাল সাভিস লিমিটেড কাউন্টার দখল করে। হামলায় কাউন্টারের মালিক ও শ্রমিকরা আহত হন। এ ধরনের ঘটনা পরিবহন সেক্টরের জন্য ভয়াবহ হুমকি। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হলেও এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

বিজ্ঞাপন

নেতারা চাঁদাবাজি এবং দখলবাজির দৌরাত্ম্য বন্ধে দ্রুত প্রশাসনের পদক্ষেপ দাবি করেন। তাঁরা বলেন, যদি এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে, তাহলে পরিবহন সেক্টরে অচলাবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। গণপরিবহন বন্ধ হয়ে গেলে এর দায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ওপর চাপানো যাবে না। যেখানে গণপরিবহনে চাঁদাবাজি হবে বা বাস কাউন্টার দখলের চেষ্টা করা হবে, সেসব এলাকায় পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে।

নেতারা জানান, দেশের পট পরিবর্তনের সময় অনেক জায়গায় তাঁদের সংগঠনের অফিস এবং বাস কাউন্টার দখলের চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা আগের মতো ঐক্যবদ্ধ রয়েছি। কোনো চক্রান্ত আমাদের বিভক্ত করতে পারবে না।

পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা বলেন, সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনকে দ্রুত কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিস্ক্রিয়তার কারণেই সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে।

নেতারা সতর্ক করে বলেন, শৃঙ্খলা ফেরানো না গেলে এবং প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে পরিবহন সেক্টরে বড় সংকট দেখা দেবে। তখন সৃষ্ট পরিস্থিতির জন্য পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দায়ী করা যাবে না।

পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা জানান, তারা শীঘ্রই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সবার সামনে তুলে ধরবেন। চাঁদাবাজি এবং দখলবাজি বন্ধের পাশাপাশি পরিবহন সেক্টরে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কার্যকর পরিকল্পনা প্রয়োজন। দুই-এক দিনের মধ্যেই আমরা সংবাদ সম্মেলন করে পরিবহন সেক্টরের সঙ্কট, চাঁদাবাজি এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। সকলকে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিতে হবে।

সভায় উপস্থিত শ্রমিকরা জানান, পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি এবং দখলবাজির কারণে শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মধ্যে কাজ করছেন। কোনো নির্ধারিত অভিযোগের ব্যবস্থা না হওয়ায় তাঁরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। 

পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা বলেন, এই সেক্টর দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই এর সুরক্ষা নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব। পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং চাঁদাবাজি বন্ধে প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তাঁরা সভা শেষ করেন।

এসময় সভায় ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোরশেদুল আলম কাদেরী, মৃনাল চৌধুরী,অলি আহমেদ, আহসানুল্লাহ চৌধুরী, ফারুক খান , মোঃ জাফর, মোঃ মনসুর রহমান, নুরুল ইসলাম, মোঃ হাবিবুর রহমান, মো জাফর ভি.পি,মো খোরশেদ, মো শাহজাহান, অহিদুনুর কাদেরী, মোঃ মাহবুব, মোঃ জাহাঙ্গীর, কামাল উদ্দিন আলী চৌধুরী, নাজিমউদ্দিন, মোহাম্মদ আজম, জিয়া শরিফ মিজান এয়াককব,মো হারুন,আনোয়ার ও মহানগর উত্তর দক্ষিণের ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।