যৌথ বাহিনীর অভিযানে নিহত যুবদল নেতার মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটকের পর যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় নিহত যুবদল নেতার মরদেহ নিয়ে বিক্ষুব্দ জনতা বিক্ষোভ মিছিল করেন।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় নিহত যুবদল নেতা তৌহিদের মরদেহ নিয়ে মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচারের দাবিতে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের হাজারো বিক্ষুব্ধ জনতা কুমিল্লা প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনেনিহত যুবদল নেতার মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় বিক্ষুব্দ লোকজন তৌহিদের মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি শাস্তি চান।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে নিহতের স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনী ও সিভিল পোষাক পরিহিত বেশ কিছু লোকজন তাদের বাড়িতে প্রবেশ করেন। এ সময় তৌহিদের পিতার কুলখানির রান্নার আয়োজন চলছিল। ওই রাতে সেনাবাহিনীর লোকজন তৌহিদ ও তার স্ত্রী সহ অন্যদের মোবাইল ফোন জব্দ করেন। তখন সেনা সদস্যরা জানান ঘরে অস্ত্র আছে। এরপর ঘর তল্লাশি করে কোন অস্ত্র না পেলেও তৌহিদকে যৌথ বাহিনী আটক করে।

তিনি আরও বলেন, সেনা সদস্যরা জানান, কাউসার ও তার স্ত্রীকে ধরিয়ে দিলে তৌহিদকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিছুক্ষণ বাড়িতে অবস্থানের পর সেনা সদস্যরা তৌহিদকে নিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে আবার চলে যায়। বেলা সাড়ে বারোটার দিকে কোতোয়ালি থানার একজন পুলিশ অফিসারের ফোন পেয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে তৌহিদকে তারা মৃত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে তৌহিদের স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার তার স্বামীর মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ঘটনা সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তৌহিদের ভাগ্নি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহাবুবা উদ্দিন বলেন, এই ঘটনার বিষয়ে সেনাবাহিনীর সিইও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের সেনা আইনে বিচারের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

সেনাবাহিনীর আটক প্রসঙ্গে, ইটাল্লা গ্রামের লুৎফুর রহমান নামের এক যুবক জানান, ওই রাতে তৌহিদের সঙ্গে তাকেও সেনাবাহিনী আটক ও মারধর করে। পরে তাকে সকালে ছেড়ে দেওয়া হলেও রাতভর তৌহিদকে সেনা সদস্যরা পিটিয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

এদিকে কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যু প্রসঙ্গে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনাটি তদন্তে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এঘটনায় কুমিল্লা সদর সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডারকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনের জন্য একটি উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।