ঘন কুয়াশার কারণে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং সাড়ে ১১টা থেকে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশন আরিচা কার্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের ডিজিএম নাসির হোসেন চৌধুরী বলেন, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই পদ্মা-যমুনা নদী এলাকায় কুয়াশা পড়তে শুরু করে। রাত ১০টার দিকে কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে এলাকা।
ঘন কুয়াশার কারণে নৌরুটের দিক নির্ণয় করতে না পেরে রাত সাড়ে ১০টা থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং সাড়ে ১১টা থেকে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। নদী এলাকায় কুয়াশা কমে গেলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে জানান নাসির হোসেন চৌধুরী।
নারী হয়রানি ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের নির্দেশ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
|
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয়
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে দেখতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) গিয়ে নারী হয়রানি ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের নির্দেশ দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রোববার (৯ মার্চ) সকালে শিশুটিকে দেখতে তিনি সিএমএইচ এ যান।
এ সময় উপদেষ্টা শিশুটির চিকিৎসার খোঁজখবর নেন ও সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। তখন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মাগুরায় আট বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় মাগুরা সদর থানায় চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং মামলার এজাহারভুক্ত চার আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। দোষীরা যেন কোনভাবেই ছাড় না পায় সেবিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোচ্চার রয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নারী হয়রানি ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এ পর্যন্ত যত নারীর প্রতি সহিংসতা হয়েছে সেগুলোর তালিকা করে দ্রুত তদন্ত সম্পন্নপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দিয়েছি।
তিনি বলেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্ষণের ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা হবে। কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। নারীরা নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে ঘরে-বাইরে দায়িত্ব পালন করবে। এতে যারা তাদের বাধা দিতে আসবে, সহিংসতা করতে আসবে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন ও সোচ্চার থাকতে হবে। পারিবারিক, সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধ লালন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনার বিষয়টি জানতে পেরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শিশুটির মাকে ফোন দিয়ে খোঁজখবর নেন ও সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, শনিবার শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
বাংলাদেশে অবৈধ পথে কাজ করতে এসে বিজিবির হাতে আটক হয়েছে সতিশ রায় নামে এক ভারতীয় নাগরিক।
শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার মাঝিপাড়া টয়াগছ এলাকা থেকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাকে আটক করেন।
ভারতীয় নাগরিক আটকের বিষয়ে শনিবার রাতেই পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
বিজিবির বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায় , আটক সতিশ রায়ের বাড়ি ভারতের জলপাইগুঁড়ি জেলার ময়নাগুঁড়ি থানার দক্ষিণ ডাঙ্গাপাড়া এলাকায়। তিনি ওই এলাকার দেবিন রায়ের ছেলে। আটকের পরে তাকে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
সতিশ রায় ১৫ থেকে ২০ দিন আগে ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে তেঁতুলিয়া উপজেলার মাঝিপাড়া এলাকায় দিনমজুরের কাজ করছিলেন। এর আগেও একইভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে দিনমজুরের কাজ করেছে সতিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েছে মাঝিপাড়া টয়াগছ এলাকার রমজান আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সতিশকে আটক করেন মাঝিপাড়া বিওপির বিজিবি সদস্যরা।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে কর্নেল মনিরুল ইসলাম বলেন, ওই ভারতীয় নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে দিনমজুরের কাজ করে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়।
ব্রহ্মপুত্র নদের ধু-ধু বালু চরে দূর থেকে দেখে মনে হবে সাদা কোন ফুলের বাগান। কিন্তু কাছে গিয়ে একটু ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যাবে সেটি ফুলের বাগান নয়, কলি থেকে বের হয়ে আছে তুলা বা কৃষকের ভাষার সাদা সোনা। সে তুলা সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে ময়মনসিংহের কৃষকরা। এবার তুলা চাষে বাম্পার ফলনে খুশি চাষিরা।
ময়মনসিংহ তুলা উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায় ময়মনসিংহ জুনের আওতায় ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল জেলায় তুলা চাষ করা হয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫মৌসুমে তুলা উন্নয়ন বোর্ড ময়মনসিংহ জোনে ২ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে তিন হাজার ৭২৫ জন কৃষকের মাধ্যমে তুলা চাষ করছে।
মাঠ জুড়ে তুলা চাষ
এ বছর সিবি হাইব্রিড-১, সিবি-১২, সিবি-১৩ -১৪সহ বিদেশি কোম্পানির সুপ্রিম সিট হোয়াটগোল-১, ২ ও রূপালি-১, ইস্পাহানি কোম্পানির শুভ্র- ৩, লাল তীর কোম্পানির ডিএম-৪ জাতের তুলা চাষ করা হয়েছে।
প্রতি বিঘা জমিতে তুলা উৎপাদন হয় ১৫ থেকে ১৬ মণ। প্রতিমণ তুলার মূল্য ৪ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে চাষাবাদের খরচের পরও কৃষকরা ৪৫ হাজার টাকা মুনাফা পাচ্ছে।
ময়মনসিংহ জুনের গফরগাঁও উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চল ঘুরে দেখা যায় তুলা চাষিরা গাছ থেকে তুলা সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে। তুলা গাছ থেকে তুলা সংগ্রহের পর তা বস্তায় করে সরাসরি চলে যাবে কারখানায়, তৈরি হবে সার্জিক্যাল গজ-ব্যান্ডেজ। বীজ থেকে তৈরি হবে ভোজ্যতেল, খইল, জ্বালানি উপজাতও পাওয়া যায়।
আবার একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে লাল শাক, লাউ শাক বাদামসহ বিভিন্ন শাক-সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষ করেও বাড়তি আয় করছে কৃষকরা। নিস্ফলা জমিতে তুলা চাষ করায় একদিকে যেমন জমির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে কৃষকরা বেশ টাকা পাচ্ছেন, তাদের পরিবারে আসছে স্বচ্ছলতা। তবে তুলা উত্তোলনে শ্রমিক সংকট থাকায় তুলা উত্তোলনের জন্য মেশিন চায় চাষিরা।
তুলা সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা
প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ তুলা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তুলা এ দেশে উৎপাদন করতে পারলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব। জলবায়ুসহনশীল এ তুলা চাষে বেশি লাভ পাওয়ায় ময়মনসিংহে বড় ও মাঝারি শ্রেণির কৃষকরা তুলা চাষে ঝুঁকছেন।
চরআলগী ইউনিয়নের তুলা চাষি আনিসুর রহমান বলেন, তুলা একটি লাভবাবন ফসল। এ বার তুলার বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে শ্রমিকের সংকট রয়েছে। আগামীতে আরও বেশি পরিমাণ জমিতে তুলা চাষাবাদ করবো।
কলি থেকে বের হয়ে আছে তুলা
চরআলগী ইউনিয়নের জয়ার চরের জালাল উদ্দিন বলেন, সরকারি সহায়তায় গত ৪ বছর ধরে তুলা চাষ করেছি। এ বছর তুলার ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তুলা চাষ করে আমি মোটামুটি লাভবান। গাছ থেকে তুলা উঠানোর শ্রমিক সংকট রয়েছে। এজন্য তুলা উন্নয়ন কতৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবি তুলা উঠানোর একটা মেশিন যেন প্রদান করা হয়।
তুলা উন্নয়ন বোর্ডের মাইজহাটি কটন ইউনিট কর্মকর্তা সরকার নাজমুল ইসলাম জানান, চরাচঞ্চলের কৃষকদের উন্নয়নের জন্য প্রদর্শনী ও প্রণোদনা দেওয়া হবে। প্রদর্শনীর মাধ্যমে বিনামূল্যে সার ও বীজ দেওয়া হয়। এবং সাধারণ চাষিদের জন্য বিভাগীয় লোনের ব্যবস্থা আছে। আমাার এরিয়াতে ৬৯ একর জমিতে তুলা চাষাবাদ হয়েছে। এবার তুলার খুব ভালো ফলন হয়েছে।
তুলার বাম্পার ফলন
তুলা উন্নয়ন বোর্ড, ময়মনসিংহ জুনের প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা খালেদা ইয়াসমিন জানান, ময়মনসিংহ জুনে এ বছর ২ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে ৩ হাজার ৭২৫ জন কৃষক তুলা চাষ করছে। এবার তুলার ফলন ভালো হয়েছে। ২০২৪-২৫ মৌসুমে তুলা চাষিদের সরকারি প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। প্রণোদনা প্রদানের ফলে চাষিদের মধ্যে তুলা চাষে আগ্রহ বেড়েছে। আশা করছি আগামী বছরে ময়মনসিংহ জুনে তুলার ফলন দ্বিগুন হারে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছি।