‘সরকারি অনুদান নয়, জাকাতের টাকায় চলছে আহতদের চিকিৎসা’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আহত হয়ে জাতীয় অর্থোপেডিক ও পূর্ণবাসন কেন্দ্র বা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আন্দোলনকারীদের চিকিৎসা ও ঔষধের খরচ চলেছে বিভিন্ন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দানের টাকায়।

আহতদের দাবি, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে এর বাইরে সরকার আমাদের চিকিৎসা ও ঔষধের জন্য কোনো অনুদান দেয়নি। বরং পঙ্গু হাসপাতালের সমাজ কার্যালয়ে সাধারণ মানুষের দেওয়ার জাকাত ও অনুদানের টাকায় চিকিৎসা চলেছে। সেই টাকা শেষ হয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীতে মিরপুর রোড অবরোধ করে আন্দোলন করা আহতদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। তারা জানিয়েছেন, বিকেল ৪টা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। এর মধ্যে কোনো সিদ্ধান্ত না আসলে সচিবালয় ঘেরাওর কথা জানিয়েছেন তারা।

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আহতদের সুচিকিৎসার দাবিতে আন্দোলন করছেন মিরপুর ২ নম্বর এলাকায় বাম হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহদ মো. দুলাল।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমাদের কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না। চিকিৎসা হলে কি আমরা রাস্তায় নামতাম। বরং চিকিৎসার নামে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। বাংলাদেশের চিকিৎসাকরা বলে দিয়েছে, আমাদের জন্য এ দেশে আর কোনো চিকিৎসা নেই। তারা আমাদের বিদেশে পাঠানোর সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে কাগজ পাঠিয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের লোকজন উল্টো বলছে, দুই মিনিট দেখে বলে দিচ্ছে আমরা সুস্থ হয়ে গেছি। এটা কীভাবে সম্ভব?

তিনি আরও বলেন, আমরা তো দেশের জন্যে আন্দোলনে নেমেছিলাম। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা খালি হাতে আন্দোলন করেছি। আমাদের হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না। ফ্যাসিবাদ মুক্তির পর আমরা কী পেলাম। না পাচ্ছি সম্মান, না পাচ্ছি ভালো চিকিৎসা। আমরা গতকাল রাত থেকে আন্দোলন করছি। অথচ কেউ আমাদের কাছে আসে নাই। তারা যদি চিকিৎসা না করাতে পারে তাহলে সাধারণ মানুষের কাছে বিষয়টা ছেড়ে দিক। জুলাই ফাউন্ডেশনে মিলিয়ন মিলিয়ন টাকা আছে। এই ফাউন্ডেশন থেকে মাত্র ২ হাজার লোক সহযোগিতা পাচ্ছে।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, পঙ্গু হাসপাতালে এখনো ১০৪ জন চিকিৎসা নিচ্ছে। চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে আছে ১৫০ জন। এছাড়া প্রতিদিন হাসপাতালের বহি র্বিভাগেও ১০০ থেকে ১৫০ জন চিকিৎসা নিতে আসে। হাসপাতালে সিট না থাকায় তারা ভর্তি হতে পারছে না।

আহত দুলাল আরও বলেন, সবচেয়ে কষ্টের কথা কী জানেন, আমরা দেশের জন্য নেমেছি। এ দেশে এখন জাকাতের টাকা দিয়ে আমাদের ঔষধ চলছে। জাকাতের টাকায় আমাদের খাবার চলছে। সরকারি কোনো অনুদান নেই। সাধারণ মানুষ যে সহযোগিতা দিয়ে গেছে সেটা দিয়ে চলছে। হাসপাতালের সমাজ সেবা কার্যালয়ে অনেকে অনুদান দিয়ে গেছে। সেই টাকা দিয়ে আমরা চলেছি। এখন টাকা নেই, তারা বলছে সব শেষ। সরকার কোনো অনুদান দেয় নাই। পরিচালকের এখানে কিছুই করার নেই। আমরা চাই রাষ্ট্র আমাদের সম্মান করুক।

এ দিকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আহতদের অবরোধের কারণে মিরপুর সড়ক ও আগারগাঁও এলাকার রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকেই বাধ্য হয়ে পা হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন আগারগাঁও এলাকায় বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অসুস্থরা। গাড়ি না পেয়ে কষ্ট করে পথ চলছেন তারা।