দ্বিতীয় ধাপে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া ও রাউজানে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও রাউজানে সবকটি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হওয়ায় বাকি তিনটি উপজেলায় আগামীকাল মঙ্গলবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সার্বিক নিরাপত্তা দিতে আড়াই হাজারেরও বেশি পুলিশ কাজ করবে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ৮টা থেকে একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই তিন উপজেলায় ভোটগ্রহণ চলবে। প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে ১৯ মে মধ্যরাতে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ২১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন। নির্বাচনে তিন উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ২০ হাজার ৭৩৪জন। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৪৩টি এবং ভোট কক্ষের সংখ্যা দুই হাজার ৯৯৬টি। ভোটগ্রহণে ৯ হাজার ৬৭৪ জন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সব উপজেলায় ২ প্লাটুন করে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও পুলিশ, র্যাব এবং আনসার সদস্যরা রয়েছেন।
এদিকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মধ্য দিয়েই ভোট গ্রহণ করা হবে জানিয়েছে পুলিশ। শান্তিপূর্ণ এবং সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি। তিন উপজেলার ৫ থানায় মোতায়েন করা হয়েছে আড়াই হাজারেরও বেশি পুলিশ সদস্য।
চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রত্যেকটিতে উপজেলায় ৪ জন করে সিনিয়র অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া মোট আড়াই হাজার পুলিশ মাঠে রয়েছে। রোববার মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। তারা আজকে কেন্দ্রে চলে গেছে। এর বাইরেও আমরা থানায় রিজার্ভ রেখেছি। কোনো সমস্যা হলে তারা সাথে সাথে সেই কেন্দ্রে যাবে।
ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র প্রসঙ্গে তিনি জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এখন আমরা বলি না। তিন উপজেলায় কিছু কেন্দ্রকে আমরা বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি। সেগুলোতে সেভাবে ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে এখনো।
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে ২ হাজার ৯৪৫ জন। এর মধ্যে আনসার ২ হাজার ৩৬ জন, ব্যাটালিয়ন আনসার থাকবে ১০ জন, পুলিশ সদস্য থাকবে (ফটিকছড়ি ও ভূজপুরে ৭৬৯, র্যাব থাকবে ২০ জন এবং বিজিবি সদস্য থাকবে ১১০ জন। এছাড়া এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন ২৬ জন।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হাটহাজারীর সবগুলো কেন্দ্রের জন্য ১ হাজার ৭২৯জন আনসার মোতায়েন থাকবে। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে ৩ জন করে পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। পুরো উপজেলায় দায়িত্ব থাকবেন ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে তিন উপজেলায় মোট ৬০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনকালে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন ও অন্যান্য অপরাধ রোধ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে থাকবেন। এর মধ্যে ফটিকছড়িতে ২৬ জন, হাটহাজারীতে ১৭ ও রাঙ্গুনিয়ায় ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করবেন।
এদিকে সোমবার সকালে নিজ নিজ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে নির্বাচনী সামগ্রী কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তবে দুর্গম কেন্দ্রগুলো ছাড়া সব ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পাঠানো হবে ভোটের দিন সকালে।