শুক্রবার সারা দেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা

  • শাদরুল আবেদীন নিউজরুম এডিটর বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: শাদরুল আবেদীন

ছবি: শাদরুল আবেদীন

গত দুই সপ্তাহ ধরে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহে অসহনীয় হয়ে উঠেছে জনজীবন। সূর্যের খরতাপে পুড়ছে পুরো দেশ। গরমের প্রচণ্ডতায় রাস্তা-ঘাটে চলাচল ব্যাপক বেগ পেতে হচ্ছে। এছাড়া কৃষকরাও বের হতে পারছেন না মাঠে। গরমে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়েও মানুষ দিশেহারা। তাই বৃষ্টির দেখা কবে মিলবে তার দিকে চোখ গোটা দেশের মানুষের।

তবে এবার আশার কথা জানাচ্ছে আবহাওয়া অফিস। বলছে, আগামী শুক্রবার (৩ মে) রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির ৯০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে আগামী পাঁচ দিনে দেশের কিছুটা তাপমাত্র হ্রাস পেতে পারে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১ মে) সকালে প্রচণ্ড রাজধানীতে রোদের তাপ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদের ফাঁকে ফাঁকে মেঘ উঁকি মারে । ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে। গত দুইদিন ধরে বিকেল থেকে বাতাসের এ গতি অনুভব করা যায়। তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পায়। তবে গরমের প্রখরতা এখনো খুব একটা কমেনি।

বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় ২২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সিলেটে ২০ দশমিক ৬। সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়া, ডিমলায় ২১ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিজ্ঞাপন

 

এদিকে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় ফোনির প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত এ ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমেই শক্তি সঞ্চার করে অগ্রসর হতে থাকায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর থেকে বাড়িয়ে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মাছ ধরার নৌযানগুলোকে উপকূলের নিকটবর্তী থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নদীবন্দরে ১ নম্বরে সতর্কতা সংকেত  দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ নাজমুল হক বার্তা২৪.কমকে জানান, দেশের তাপমাত্রা কমছে। সামনে ধীরে ধীরে আরও কমে আসবে। আগামী ৩ মে ও ৪ মে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির ৯০ শতাংশ সম্ভবনা রয়েছে। এছাড়া আবার ১০ মে’তেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে তিনি জানান, সমুদ্রবন্দরে এখন ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থা বুঝে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ৫, ৬ অথবা ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হতে পারে। আর নদীবন্দরগুলোতেও ১ নম্বর সতর্কতা থেকে আরও বাড়তে পারে। এটি যদি গভীর সমুদ্র থেকে সরাসরি মংলা হয়ে বাংলাদেশে আঘাত হানে, তাহলে ভয়াবহ ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে। আর যদি এটি ভারতের পশ্চিম বঙ্গ এবং ওড়িশা হয়ে আমাদের দেশে আসে তাহলে তা অনেকটাই হালকা হয়ে যাবে। এতে ক্ষতির শঙ্কা কম থাকবে।’

নাজমুল হক আরও জানান, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা রংপুর হয়ে দিনাজপুরের দিকে যেতে পারে। একই সঙ্গে কক্সবাজার ও চট্রগ্রামে আঘাত হানতে পারে। তবে ফনি ৪ মে আঘাত হানতে পারে।  

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

ঢাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। দক্ষিণ/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বুধবার ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা ২৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে, রাজশাহী, পাবনা ও রাঙামাটি অঞ্চলসহ ঢাকা ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা অব্যাহত থাকতে পারে।