জাতীয় ফ্রন্ট থেকে এরশাদের জাপা



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৮৫ সালের ১৬ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এরশাদের নীতি ও আদর্শ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারে নিয়ে জাতীয় ফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল। জোটের শরীকদল হিসেবে ছিল জনদল, ইউপিপি, গণতান্ত্রিক পার্টি, বিএনপি (শাহ) মুসলিম লীগ (সা)।

রাজনৈতিক দলের বাইরেও বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষ ও রাজনৈতিক নেতা ফ্রন্টে যোগ দিয়েছিলেন। ক্ষেত্র বিশেষ চাপ প্রয়োগ করে যোগদানেও বাধ্য করা হয়। জাতীয় ফ্রন্ট গঠনের ৪ মাস ১৪ দিনের মাথায় ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি ফ্রন্ট বিলুপ্ত করে জাতীয় পার্টি গঠন করা হয়।

আরও পড়ুন:  এরশাদ মারা গেছেন

জাতীয় ফ্রন্টের ধানমণ্ডিস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয় পার্টি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে শরিক দলের নেতারা তাদের নিজেদের দল বিলুপ্ত করে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।

নবগঠিত পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং মহাসচিব নিযুক্ত হন অধ্যাপক এমএ মতিন। পার্টির কাউন্সিল না হওয়া পর্যন্ত-জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আনোয়ার জাহিদ। ২১ সদস্যের প্রেসিডিয়াম, ৫৭ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটিসহ ৬০১ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

পার্টি গঠনের ঘোষণায় বলা হয় দেশের সকল গণতন্ত্রকামী জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক শক্তিগুলোর বিভক্তির প্রবণতা কাটিয়ে একটি একক রাজনৈতিক দলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা থেকে জাতীয় পার্টি গঠন করা হয়েছে।

সামরিক শাসকের ‍হাত ধরে প্রতিষ্ঠা পাওয়া জাতীয় পার্টি শুরু থেকেই এরশাদকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়ে আসছে। দু-একবার যারাই এরশাদের সিদ্ধান্তে দ্বিমত করতে গেছেন তাদের দল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আবার অনেক নেতা একাধিক দফায় শোকজ নোটিশ পেয়েছেন বা সাময়িক বহিষ্কারের শিকার হয়েছেন। শোকজের ক্ষেত্রে এরশাদ ছাড় দেননি আপন ভাই জিএম কাদের ও সহধর্মিনী রওশন এরশাদকেও।

আরও পড়ুন:  রংপুরই হোক এরশাদের শেষ ঠিকানা

নানা কারণে জাতীয় পার্টির মতো আর কোনো রাজনৈতিক দল সম্ভবত এতো বেশি দফায় ভাঙনের শিকার হয়নি। প্রথম দল জাতীয় পার্টি থেকে বের হয়ে গিয়ে পৃথক জাতীয় পার্টি (মিম) গঠন করেন মিজানুর রহমান ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। এরপর আরেক দফায় ভাঙনের শিকার হয় নাজিউর রহমান মঞ্জু ও কাজী ফিরোজ রশীদের নেতৃত্বে।

সর্বশেষ এরশাদকে বহিষ্কার করে নিজে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হন প্রয়াত কাজী জাফর আহমেদ। বর্তমানে জাতীয় পার্টি, জাপা, জেপি, বিজেপি ও জাপা (জাফর) নামে চারটি ধারা বিদ্যমান।

চারটি খণ্ডিত অংশের মধ্যে জাতীয় পার্টি জাপা, জাতীয় পার্টি (জেপি) আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে সম্পৃক্ত। অপর দুই অংশ বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) ও জাতীয় পার্টি (জাফর) বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে যুক্ত।

গণ অভ্যত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত এই দলটিকে নানা চড়াই উৎরাই পাড়ি দিতে হয়েছে। কয়েক দফায় ভাঙন আর নেতাদের দল ছেড়ে যাওয়া কারণে ক্ষয়িষ্ণু হয়ে পড়েছে দলটি। ভোটের সমীকরণেও দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে। আসনের সংখ্যায় কিছুটা হেরফের হলেও ভোটের সূচক দিনকে দিন কেবলই নিম্নগামী।

গণ আন্দোলনের মুখে বিদায়ের পর ১৯৯১ সালে নির্বাচনে যতো ভোট পড়েছিল তার ১১.৯২ শতাংশ পেয়েছিল জাতীয় পার্টি। এরপর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ১০.৬৭ শতাংশ, আর ২০০১ সালের ইসলামী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিয়ে তারা ভোট পেয়েছে ৭.২৫ শতাংশ। সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনে পেয়েছে মাত্র ৭.৪ শতাংশ।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন অংশ নেয়। কিন্তু যে আসনেই জোট ছাড়া নির্বাচন করেছে সেখানেই ধরাশায়ী হয়েছেন দলটির প্রার্থীরা।

জাতীয় পার্টির দুর্গ বলে খ্যাত রংপুর ও গাইবান্ধার তিনটি আসনেও বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছেন দলটির হেভিওয়েট প্রার্থীরা। রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনে আওয়ামী লীগ নেতা টিপু মুনশির কাছে পরাজিত হন টানা কয়েকবারের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির ডোনার বলে খ্যাত আরকে গ্রুপের কর্ণধার প্রেসিডিয়াম সদস্য করিম উদ্দিন ভরসা।

অন্যদিকে রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে আওয়ামী লীগ নেতা এইচএন আশিকুর রহমানের কাছে পরাজিত হন  আরডি গ্রুপের কর্ণধার আখম জাহাঙ্গীর হোসেন। রংপুরের পর গাইবান্ধাকে ধরা হয় জাতীয় পার্টির দ্বিতীয় দুর্গ বলে। সেখানেও জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার কাছে পরাজিত হন জাপার সেকেন্ড ইন কমান্ড বলে খ্যাত সাবেক ফার্স্ট লেডি রওশন এরশাদ। সর্বশেষ নির্বাচনে রংপুর ও গাইবান্ধায় জাতীয় পার্টির মাত্র তিনজন এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।

বিগত নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়। জোট থেকে ২৬টি আসন দেওয়া হয়। আর ১৪৬টি আসন রাখা হয় উন্মুক্ত। জোটগত আসনে ২১টি, উন্মুক্ত একটি নিয়ে মোট ২২টি আসনে বিজয়ী হয় এরশাদের প্রার্থীরা। সংসদে মহিলা এমপির সংখ্যা তাদের চারজন। ২৬ আসন নিয়ে বিরোধীদলের চেয়ার অলংকৃত করে আসছেন।

নানা টানা পোড়েনের মধ্য দিয়ে যাওয়া পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা নিয়েও অনেক জটিলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয় এরশাদকে। একবার ঘোষণা দিয়েও প্রত্যাহার করেছিলেন। পরে রংপুরের নেতাদের আন্দোলনের মুখে ছোটো ভাই জিএম কাদেরকে দ্বিতীয় দফায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন। বিষয়টিতে ভালো ভাবে দেখছেন না রওশন পন্থীরা। যে কারণে এরশাদের অবর্তমানে পার্টির মধ্যে আরেকটি জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নেতারা।

আরও পড়ুন: 

 এরশাদের দাফন ঢাকায়!

৪ স্থানে এরশাদের জানাজা

এরশাদের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক

   

ইউনিয়ন ভিত্তিক প্রতিবন্ধী স্কুল বাস্তবসম্মত নয়: দীপু মনি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ইউনিয়ন ভিত্তিক প্রতিবন্ধী স্কুল করা বাস্তবসম্মত নয়। প্রতিবন্ধীদের জন্য আমাদের চেষ্টা হলো মূলধারার বিদ্যালয় গুলো সবার জন্য উন্মুক্ত করা। যারা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বা অটিজম বা যাদের এই ধরনের সমস্যা আছে তাদের মধ্যে যাদের সাধারণ স্কুলে যাওয়ার নুন্যতম সক্ষমতা আছে, তাদেরকে সেখানেই দিয়ে দেওয়া। সেই স্কুলের শিক্ষকদেরকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেন তারা একসাথে পড়াতে পারেন। এতে সাধারণ শিশুরাও সহমর্মী মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে। আর যাদের পক্ষে কোনভাবেই সাধারণ স্কুলে যাওয়া সম্ভব না, প্রতিবন্ধী বা বিশেষ স্কুল শুধুমাত্র তাদের জন্য। সেজন্য শিক্ষক তৈরি করা বা কেয়ারগিভার তৈরি করা কিন্তু খুব সহজ কাজ নয়। কাজেই প্রতি ইউনিয়নে এরকম একটি করে স্কুল তৈরি করা খুব দুঃসাধ্য একটি ব্যাপার হবে।

শনিবার(১৮ মে) বিকেলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনি কুড়িগ্রাম সদরের উত্তরবঙ্গ জাদুঘর পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

দীপু মনি এব্যাপারে আরও বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের কিছু বিশেষ স্কুল আছে। আমরা হুজুকে জাতি। একটা কিছু করা শুরু হলে আমরা সবাই মিলে সেটা করা শুরু করি। সারাদেশে এমন অনেক স্কুল গজিয়ে যাচ্ছে। সেগুলোর মধ্যে যে সবগুলোই খুব ভালো বা শিশুদের জন্য বিশেষ স্কুল তা নয়। আমরা সেটারও একটা যাচাই বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। যেগুলো প্রকৃত অর্থেই বিশেষ স্কুল সেগুলোকে স্বীকৃতি দিয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা আমরা নিশ্চয়ই দেব। কিন্তু আমাদের চেষ্টা থাকতে হবে সাধারণ বিদ্যালয়ে যতদূর সম্ভব বিশেষ শিশুদেরকে আমরা যেন নিয়ে যেতে পারি।

সামনের অর্থবছরের জন্য আসন্ন বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় থাকা নাগরিকদের ভাতার অর্থ বৃদ্ধি করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এই মুহূর্তে ভাতার পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব হবে না। ভাতার পরিমাণটা আসলে কোনও ভাতাভোগীর জন্য একমাত্র অবলম্বন নয়। অনেকগুলো কারণে ভাতা দেওয়া হয়। তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো তিনি (সুবিধাভোগী) যেন নিজেকে অসহায় মনে না করেন। যেন ভাবেন, সরকার তার পাশে আছে।’ অবশ্যই দেশ ও সরকারের সক্ষমতা বাড়ার সাপেক্ষে ভবিষ্যতে ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের তথ্য নিয়ে লুকোচুরি ও বিভিন্ন অনিয়মের ব্যাপারে সাংবাদিকদের অভিযোগের বিষয়ে দীপু মনি বলেন, ‘অবশ্যই এ ধরনের অভিযোগ গুরুতর। বিষয়টি নিয়ে আমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবো।’ তবে ভাতাভোগীদের তালিকা প্রকাশ কিংবা তথ্যের সহজলভ্যতার বিষয়ে অধস্তন কার্যালয়কে তাৎক্ষণিক স্পষ্ট কোনও নির্দেশনা দেননি মন্ত্রী।

উত্তরবঙ্গ জাদুঘর পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী জাদুঘরে রক্ষিত ১৯৭৩ সালে কুড়িগ্রামে দেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের লিখিত প্রতিলিপি দর্শনার্থীদের জন্য আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করেন। এরপর তিনি শেখ রাসেল পৌর অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত কুড়িগ্রামের কৃতিসন্তান অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকনকে দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। পরে রাত ৯ টার দিকে মন্ত্রী কুড়িগ্রাম সরকারি শিশু পরিবার পরিদর্শন করেন।

;

কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতির মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চিকিৎসাধীন অবস্থায় গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের এক হাজতি মারা গেছেন। মারা যাওয়া হাজতি নীলফামারীর ডোমার থানার মটুকপুর গ্রামের রুমেল হোসেনের মেয়ে আমিনা বেগম (৪০)। কারাগারে তার হাজতি নং- ৩৯৪/২৪।

শনিবার (১৮ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, মহিলা কারাগারে বন্দি আমিনা বেগমের হঠাৎ বুকে ব্যথা হয়। পরে তাৎক্ষণিক কারাগার থেকে তাকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার শাহজাহান মিয়া বলেন, বুকে ব্যথা উঠলে আমিনাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। কারাবিধি মেনে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

;

শিশু জায়েদ হাসানের দায়িত্ব নিচ্ছেন না মামা, দেওয়া হচ্ছে দত্তক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ভালুকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নিহত মা ও বেঁচে যাওয়া দেড় বছরের শিশু জায়েদ হাসান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা এখন পুরাপুরি সুস্থ। উচ্চ আদালত শিশুটিকে তার মামার জিম্মায় দেওয়ার নির্দেশ দিলেও জায়েদের সুন্দর ভবিষ্যত ও নিজের পরিবারের অবস্থার কথা চিন্তা করে দায়িত্ব নিচ্ছেনা মামা রবিন মিয়া। এ কারণেই দেওয়া হবে দত্তক।

আগামীকাল রবিবার(১৯ মে) শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভার আগ পর্যন্ত দত্তক দেওয়ার জন্য আবেদন গ্রহণ করা হবে ও সব আবেদন বোর্ড সভায় পেশ করা হবে এবং আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে একটি পরিবারের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হবে।

শিশু জায়েদের মামা রবিন মিয়া বলেন আমি পেশায় একজন পিকআপ চালক। মা, বাবা পরিবার ও তিন সন্তান নিয়ে অনেক কষ্ট করে দিন চলে। তাই আমি চাই না আমার কাছে এসে ভাগিনার সুন্দর জীবনটা নষ্ট না হয়। আমি চাই সে একজন ভালো মানুষের ঘরে গিয়ে মানুষের মত মানুষ হোক আমি শান্তি পাবো। সেজন্যই শিশু কল্যাণ বোর্ডের কাছে একটি অনাপত্তি পত্র দিয়েছি।

ময়মনসিংহ জেলা সমাজসেবা বিভাগের উপপরিচালক ও শিশু কল্যাণ বোর্ডের সদস্য সচিব আব্দুল মজিদ বলেন জায়েদের মামা চান ভাগ্নের সুন্দর ভবিষ্যত। এজন্য শিশু কল্যাণ বোর্ডের প্রতি আস্থা রেখে একটি অনাপত্তিপত্র দিয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি পরিবার জায়েদকে পেতে আবেদন করছে। তাদের মধ্যে থেকে যাচাই-বাছাই করে আগামীকালের বোর্ড সভা সিদ্ধান্ত হবে জায়েদকে কোন পরিবারে দেওয়া হবে ।

উল্লেখ্য, গত ১০ মে রাত তিনটার দিকে ভালুকা উপজেলার স্বয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় শিশু জায়েদ ও তার মা জায়েদা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ভোররাতেই সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। শিশুটিকে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ও শিশুর মা'কে হাসপাতালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। পরদিন সকালে শিশুটির মা মারা যায়। তবে,আহত শিশুটি হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডেই চিকিৎসাধীন থাকে।

;

যশোরে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করায় যশোর সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের আহবায়ক ও যশোর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফাতেমা আনোয়ারকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

শনিবার (১৮ মে) বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

জানাযায়, গত বৃহস্পতিবার ১৬ মে প্রেসক্লাব যশোরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জামাতাও বিএনপি করেন। তার এমন একটি বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যে বক্তব্য দেওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছিলো যশোর জেলা আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে দলীয় পদ থেকে বাতিল ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখিত সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

শুক্রবার রাতে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদারের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদারের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যশোর সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের আহবায়ক ও আসন্ন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফাতেমা আনোয়ার বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করেন। এই সাংবাদিক সম্মেলনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

তার বক্তব্যের বিষয়টি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন এবং সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে তাকে যুব মহিলা লীগের আহবায়ক পদ ও প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিলসহ কেন্দ্রের কাছে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর সুপারিশও করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ফাতেমা আনোয়ারের স্বামী আনিসুর রহমান লিটন ওরফে ফিঙ্গে লিটন পুলিশের মোস্ট ওয়ান্টেডভুক্ত আসামি। তিনি খুন-গুম, মাদক, সোনা, অস্ত্র চোরাচালানসহ একাধিক অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে দেশের বাইরে পলাতক অবস্থায় আছেন। দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকায় তার নাম রয়েছে। তিনি ইন্টারপোলেরও ওয়ান্টেড আসামি।

এই বিষয়ে ফাতেমা আনোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, একজন রাষ্ট্রনায়ককে নিয়ে কেউ কথা বা মন্তব্য করবে এটা রাষ্ট্রের নাগরিকের অধিকার। আমার বিরুদ্ধে জেলা আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটা আমাকে অবিচার করছে বলে মনে করছি।

;