চোরাচালানের চলন্ত স্বর্গ!



মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা বাই মৈত্রী এক্সপ্রেস: ভারতের সীমান্ত পয়েন্ট গেদে হয়ে বাংলাদেশের দর্শনা সীমান্ত পয়েন্ট পার হলো- মৈত্রী এক্সপ্রেস। ভ্রমণ ক্লান্তির ঘুম থেকে আড়মোড়া দিয়ে উঠে টয়লেট যাবো ভেবে বের হলাম।

কেবিন থেকে বের হলে পথরোধ করে রেলওয়ে পুলিশ। জানতে চায়, কোথায় যাবেন? টয়লেটের কথা শুনে চেয়ার সিটের বগির বাথরুমে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বললেন, এখানকার টয়লেটগুলো বন্ধ।

ওদিকে রেলের দরজার দিকে বেশ হট্টগোল। এগিয়ে গিয়ে দেখা গেলো, ট্রেনের দরজা ও বাথরুমের সামনে ঠাসাঠাসি করে ভারতীয় পণ্যের লাগেজ, বস্তা ও গাট্টি রাখা। সাধারণ যাত্রীদের বাথরুম যাওয়া বন্ধ। পণ্যের গাট্টির সামনে ব্যবসায়ী ও পুলিশ আর্থিক লেনদেনে ব্যস্ত। দেখে বুঝতে অসুবিধা হলো না, এগুলো ভারত থেকে আনা চোরাচালান পণ্য। ট্রেনের গতি কমিয়ে রেল পুলিশের সহায়তায় চোরাকারবারিরা একের পর এক গাট্টি-বস্তা ফেলছে ট্রেন থেকে।

 

দায়িত্বরত রেল পুলিশ (উপ-পরিদর্শক) মনিরের কাছে ‘কি হচ্ছে’ -জানতে চাইলে বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা ভারতীয় কাস্টমসকে ম্যানেজ করে মাল এনেছে আমাদের কিচ্ছু করার নেই। আপনি ভেতরে যান।’

প্রতিবেদকের সঙ্গে কথোপকথনের সময় এক চোরাকারবারির আকুতি, ‘স্যার আমার কাছে আর টাকা নেই, তিন হাজারই নেন।’ সাধারণত পুলিশের ইউনিফর্মের সঙ্গে বুকে নাম লেখা থাকে। কিন্তু দায়িত্বপালনরত ওই পুলিশের নেমপ্লেট গায়েব। এমতাবস্থায় ওই পুলিশ সদস্য জানায়, ‘তোরে না বলছি, পাঁচ হাজার দে- ম্যানেজ করে দেবো।’ চোরাকারবারি দাবী, ‘তাহলে মির্জাপুরে একটু স্লো কইরেন, গাট্টিগুলো ফেলবো।’

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী ট্রেনে এভাবে অবাধে চলছে চোরাচালানি। সপ্তাহে দু'দিন চলাচলকারী এ ট্রেনে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দেশে প্রবেশ করছে কোটি কোটি টাকার চোরাই পণ্য। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। সামনে রোজার ঈদকে কেন্দ্র করে বহুগুণে বেড়েছে এ চোরাচালান।

চোরাচালানের কাজে সহায়তা করছে ভারত-বাংলাদেশ রেলওয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা, শুল্ক কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ রেল পুলিশ। চোরাকারবার পরিচালনা করতে দুই দেশের কর্মকর্তা নিজেদের মধ্যে ‘সখ্যতা’ গড়ে তুলেছেন। দেখে মনে হবে, দু’দেশের পুলিশ, কাস্টমস ও রেল কর্মকর্তারা চোরাচালানের জন্য ‘মৈত্রী বন্ধনে’ আবদ্ধ হয়েছেন।

চলন্ত মৈত্রী ট্রেনে কথা হয় কয়েকজন চোরাকারবারির সঙ্গে। তারা জানায়, ২০-২৫টি সিন্ডিকেট চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করছে। সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে দুই দেশের ট্রেন চালক, টিটি, অ্যাটেনডেন্টরা জড়িত। তাদের ইশারায় দর্শনা বর্ডার পার হওয়ার পর ঈশ্বরদী, মির্জাপুর ও টঙ্গিসহ বিভিন্ন স্থানে ২ থেকে ৫ মিনিট করে ট্রেন স্লো করা হয়। এ সময় পণ্যের গাট্টি, লাগেজ দ্রুত গতিতে ফেলে দেওয়া হয়। আরেকদল পণ্য সংগ্রহ করে নেয়।

চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতরা ঢাকা থেকে যাওয়ার সময় পাসপার্ট নিয়ে খালি হাতে ভারতে প্রবেশ করে। ফেরার সময় ট্রেনে অবৈধভাবে পণ্য ওঠায়। পরে আবার সাধারণ যাত্রীর মতোই ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চোরাচালানের সঙ্গে দু’দেশের লোকই জড়িত। ১৫ মে মঙ্গলবার ১০-১২ জন ভারতীয় অবৈধ ব্যবসায়ী দেখা যায়। যারা ট্রেনে করে মালামাল এপারে পৌঁছে দিয়ে ওইদিন রাতেই বাসে করে ফের কলকাতা ফেরত যাবেন।

মৈত্রী ট্রেনের টিকিট পেতে হাজারো ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ যাত্রীদের। সেখানে কলকাতা থেকে ফিরতি ট্রেনের ৮০ শতাংশ কেবিন চোরাকারবারিদের দখলে থাকে। ২০ শতাংশ সাধারণ যাত্রীরা হাতে। দুই দেশের কাস্টমসকে ম্যানেজ করে অবৈধ এসব ব্যবসায়ী কেবিন ভর্তি করে পণ্য ওঠায়। বগিগুলোর অবস্থাও প্রায় একই।

চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ভারতের ব্যবসায়ী সামির। কলকাতার খিদিরপুরের বাসিন্দা। সামির বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘পুরো ব্যাপারটা চলে একটা সিস্টেমের ওপর। এখানে দুই দেশের পুলিশ, কাস্টমস, রেলের চালক ও টিটিসহ নানা পর্যায়ের কর্মকর্তা জড়িত। এমনকি টিকিট পর্যন্ত তারা ম্যানেজ করে দেয়।'

সামির আরও জানায়, মালের দামের ওপর নির্ধারণ করা হয় ঘুষের পরিমাণ। এক লাখ টাকার পণ্যের বিপরীতে অসাধু কর্মকর্তারা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ টাকা ঘুষ নেয়। অনেক সময় আলাপ-আলোচনা করে টাকা কম-বেশ করা যায়।

এ সব বিষয়ে কথা হয় ঢাকা কাস্টমস হাউসের উপ-কমিশনার (প্রিভেন্টিভ) ওথেলো চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ট্রেনে আমরা নিয়মিত অভিযান চালাই। কাস্টমস কর্মকর্তারা চোরাকারবারিদের সঙ্গে জড়িত না। রেলওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে কর্মকর্তাদের ছত্রচ্ছায়ায় এসব হচ্ছে। অনিয়ম করে যেখানে-সেখানে ট্রেন স্লো করা হচ্ছে।’

প্রতিবেদকের মৈত্রী ট্রেনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরলে, তিনি বলেন, ‘হয়তো আপনি অন্যকোনো বগিতে ছিলেন, এ জন্য অভিযান দেখেননি। আমরা চেষ্টা করি। এরপরও অনিয়ম আটকানো অনেক সময় সম্ভব হয় না।'

২০০৮ সালে ভারতের কলকাতা ও বাংলাদেশের ঢাকার মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু হলে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হতো ভারতের সীমান্তে গেদে ও বাংলাদেশের দর্শনায়। যাত্রীদের সুবিধা ও চোরাচালান বন্ধ করতে ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর থেকে ট্রেনে ওঠা -নামার সময় ঢাকা রেলওয়ের ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন ও কলকাতা রেল স্টেশনে (চিৎপুর) কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয় । এতে যাত্রী হয়রানি কিছুটা কমলেও চোরাচালান বন্ধ হয়নি।

এমসি/এমএইউ/

   

শ্রমিক সঙ্কটে শেষ মুহুর্তে বিপাকে নরসিংদীর কৃষকরা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নরসিংদী জেলা কৃষি নির্ভর এলাকা। এখানকার মাটি আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় দিন দিন কৃষিতে ঝুঁকছেন চাষিরা। এখন বোরো ধান কাটার মৌসুম চলছে। তাই প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত পুরোদমে চলে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। ধান ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার চাষিরা।

তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলনেও শ্রমিক সঙ্কট ও তাদের উচ্চ মজুরীতে বিপাকে চাষীরা। জেলার রায়পুরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ভোরে সূর্য ওঠার আগেই কাস্তে হাতে শ্রম বিক্রির হাট থেকে শ্রমিক নিয়ে মাঠে ছুটছেন কৃষক। মাঠে মাঠে ধান মাড়াই ও শুকানো হচ্ছে।

ধানের শ্রমিকরা জানান, ময়মনসিংহ নেত্রকোনা কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে দৈনিক মজুরিতে কাজ করতে এ এলাকায় আসেন। এলাকায় ধান কাটা থাকায় অনেকেই আসতে পারেননি।
যার জন্য এই মুহুর্তে ধান কাটার শ্রমিকের সঙ্কট রয়েছে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, বাম্পার ফলনেও শ্রমিকের মজুরি বেশি শ্রমে-ঘামে ফলানো ধান নিয়ে বাজারে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষকের হাসি মলিন হচ্ছে। ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জের শ্রমিকরা এখনো পুরোদমে না আসার কারণে শ্রমিকের সংকটে তীব্র। ফলে বেশি মজুরি দিয়েই ধান কাটতে হচ্ছে কৃষকদের।

রায়পুরার কৃষক আব্দুল করিম জানান, 'আগে দৈনিক ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা মজুরিতে শ্রমিক নিতাম। এবার তারা এক দিনের জন্য ৮ শ থেকে ১ হাজার টাকা নিচ্ছে।

একই কথা বলছেন কৃষক মো. সোহেল মিয়া, তিনি জানান, ধান কাটার মৌসুমে জেলার আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চলের শ্রমিকরা কাজ করতে আসে। এ বছর তারা যে পরিমাণ মজুরি চাচ্ছে তাতে লাভ দূরের কথা ফসল ফলানোর খরচ তোলা যাবে না। আড়াই বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। ফলন ভালো হলেও লাভ নেই বলে জানান তিনি।

রায়পুরা উপজেলার নলবাটা গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম জানান, 'চলতি মৌসুমে বড় কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়নি। ২বিঘা জমিতে ধান চাষ করে ইতিমধ্যে ধান ঘরে তুলেছেন। ২ বিঘা জমিতে ৬০ মণ ধান পেয়েছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। শ্রমিক, সেচ, সার কীটনাশকের যে দাম সেই তুলনায় ধানের দাম কম। ধার দেনা দিতেই ধান বিক্রি করতে হবে। খরচ তুলতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে অনেকেই ধান চাষে মুখ ফিরিয়ে নেবে।

নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৫৬ হাজার ৫৪২ হেক্টর জমিতে ধানের ফলন হয়েছে। উফশী জাতের ধান ৫১ হাজার ৪৬৩ হেক্টর, হাইব্রিড ৫ হাজার ও স্থানীয় জাত ৫০ হেক্টর চাষাবাদ করা হয়। উৎপাদনের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৮০৫ মেট্রিক টন। বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচে ২২ থেকে ২৪ মণ ধান পাবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ।

নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো.আজিজুর রহমান বলেন, সারাদেশে একযোগে ধান কাটা চলছে যার ফলে শ্রমিক কিছু সংকট থাকতে পারে। যার জন্য শ্রমিকের মজুরি একটু বেশি। এছাড়া কম্ভাইন্ড হারভেস্টার দিয়েও ধান কাটা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৭৫ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। এর আগে কৃষকের বিনামূল্যে বীজ ও সারসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়।

;

প্রয়োজনের তুলনায় সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন পাট বীজ কম উৎপাদন হয়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রয়োজনের তুলনায় সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন পাট বীজ কম উৎপাদন হয়

প্রয়োজনের তুলনায় সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন পাট বীজ কম উৎপাদন হয়

  • Font increase
  • Font Decrease

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, দেশে ছয় হাজার মেট্রিক টন পাট বীজ প্রয়োজন, অথচ উৎপাদন হয় মাত্র এক হাজার পাঁচশত মেট্রিক টন। বাকী সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন বীজ ভারত থেকে আমদানি করতে হয়। কাজেই ব্যাপকভাবে পাট বীজ উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহিত করতে হবে। 

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার পাটের গৌরবময় সোনালী ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে কাজ করছে। এজন্য পাট বীজের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনতে হবে।

শনিবার (১৮ মে) দুপুরে খুলনা মহানগরীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশন (বিজেএ)’র সঙ্গে কাঁচাপাট রপ্তানি সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বিজেএ দেশব্যাপী কৃষকদের পাট বীজ উৎপাদনে উৎসাহিত করার জন্য কর্মশালার আয়োজন করছে। এ ধরনের কার্যক্রমে আমিও শামিল হবো।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হস্তশিল্প মেলায় অংশ নিতে আমাকে জার্মানীর ফ্রাস্কফুর্টে পাঠান। সেখানে আমাদের দেশের পাটপণ্যের ৫০টি স্টল ছিলো। বিদেশি ক্রেতারা সেখানে ক্রয় আদেশ দিচ্ছে। বিদেশে পাটপণ্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে।

কাঁচাপাট রপ্তানি যেন বাধাগ্রস্ত করা না হয়- ব্যবসায়ীদের এরকম আবেদনের প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের কথা বিবেচনা করে কাঁচাপাট রপ্তানি অব্যাহত রাখা হবে এবং তাদের সমস্যাসমূহ সমাধানে সাহায্য করা হবে।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী চান সোনালী আঁশের আভিজাত্য ফিরিয়ে আনতে। সেজন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

বিজেএর চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ আহমেদ আকন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন- খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য এসএম কামাল হোসেন প্রমুখ।

;

মারামারি-চাঁদাবাজি: চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
মারামারি-চাঁদাবাজি: চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

মারামারি-চাঁদাবাজি: চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

  • Font increase
  • Font Decrease

চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা ও আধিপত্য নিয়ে মারামারির পর চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।

শনিবার (১৮) রাতে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি বিলুপ্তের বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, সাংগঠনিক অনিয়ম এবং বিশৃঙ্খলার কারণে বিগত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে মাহমুদুল করিমকে সভাপতি এবং সুভাষ মল্লিক সবুজকে সাধারণ সম্পাদক করে ঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম কলেজ শাখা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হল।’

বেশ কিছুদিন ধরে চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে অস্থিরতা চলছিল। এক পক্ষের তোপের মুখে পড়ে কয়েক মাস আগেই ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত হন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম। তার এক সময়ের অনুসারীরা শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে নতুন করে সংঘবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। তবে মনিরের সঙ্গে মিলে রাজনীতি করতে অস্বীকৃতি জানান সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার মারামারির পর মনিরের অনুসারীরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনকেই ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। এই সময়ে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিভিন্ন কুর্কীতির ভিডিও ফাঁস হয়। বিশেষ করে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় এক তরুণকে স্ত্রীর সামনে মারধর, কলেজের প্রধান সহকারীকে থাপ্পড় দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তের ঘোষণা আসল।

কমিটি বিলুপ্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম কলেজে সাম্প্রতিককালে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া এই কমিটির মেয়াদও ছিল না। তাদের এমন কর্মকাণ্ডের কারণে সংগঠনের ইমেজ নষ্ট হচ্ছিল। সবকিছু বিবেচনা করে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এখন নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।’

;

কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ঘরে থাকার পরামর্শ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কিরগিজস্তানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের হোস্টেলে হামলার ঘটনায় দেশটিতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

শনিবার (১৮ মে) রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ পরামর্শ দেওয়া হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের দূতাবাস কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে একযোগে কাজ করে। সেখান থেকে বিশকেকের সহিংসতার ঘটনায় বর্তমানে কিরগিস্তানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও দূতাবাস যোগাযোগ করছে। কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের প্রাসঙ্গিক কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, পরিস্থিতি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়ে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের এই মুহূর্তের জন্য বাড়ির ভেতরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং এ বিষয়ে যেকোনো সমস্যায় ২৪ ঘণ্টা উজবেকিস্তানে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার মো. নাজমুল আলমের সঙ্গে (+998930009780) যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলো।

জানা গেছে, গত ১৩ মে একদল মিশরীয় শিক্ষার্থীর সঙ্গে কিরগিজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে কী নিয়ে তাদের মধ্যে এই বিরোধ বেঁধেছিল তা নিশ্চিত নয়। তবে ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে কিরগিজ রাজধানীতে বেশকিছু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল ও বেসরকারি আবাসনে হামলা চালায় স্থানীয়রা। এসব হোস্টেল ও ভবনে মূলত বিদেশি শিক্ষার্থীরা বসবাস করেন।

;