'প্রবাসীদের রক্ষায় মিশনের প্রো-একটিভ ভূমিকা জরুরি'



খুররম জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রবাসী কর্মীদের অধিকার রক্ষায় বিদেশে বাংলাদেশি মিশনকে প্রো-একটিভ ভূমিকা রাখতে হবে। শুধু তাই নয় দেশে ফেরা শ্রমিকদের যথাযথ নিরাপত্তা ও সম্মান দিতে হবে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ন কবীর চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে একান্ত সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রবাসী কর্মীদের অধিকার নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। আমরা আন্তর্জাতিক অধিকার সংক্রান্ত জাতিসংঘের যেসকল কনভেনশন বা প্রটোকল রয়েছে তা সই করেছি। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়নের জন্য যে পরিমাণ উদ্যোগ দরকার সেটা এখনও নেওয়া হয়নি বা নেওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি এমনিতোও জটিল। কারণ অধিকারের বিভিন্ন ধাপ আছে। যেমন একটা হচ্ছে বেতনের বা মজুরির অধিকার, নিরাপত্তার অধিকার, আইনি অধিকার। এসবকে সম্মন্বিতভাবে রক্ষা করার জন্য বিদেশে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। অন্য যে কোন দেশের জন্যও চ্যালেঞ্জ।

রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর বলেন, প্রবাসে বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিটা হল তারা বাংলাদেশে টাকা পাঠাক নির্ধিদায় বা নির্বিঘ্নে। এটাই আমাদের প্রায়ারোটি। তারই অংশ হিসেবে আমাদের যে মিশনগুলো আছে আমরা তাদের যেটুকু কনস্যুলার সহায়তা দেওয়া যায় তার চেষ্টা করি। কিন্ত অধিকার রক্ষাটার বিষয়টি প্রো-একটিভ কাজ। সে প্রো- একটিভ কাজ করার জন্য মিশনগুলোর জনশক্তি নেই, এমনকী আমাদের মানুষিকতাও নেই। সেটা আমাদের প্রশাসনিক সংস্কৃতির অংশ হিসেবে মনে করতে পারি।

হুমায়ুন কবীর বলেন, যেমন আমি একটা উদাহরণ দিতে পারি – ধরুন বিদেশ একটা কারখানায় শ্রমিকরা কাজ করে। সেখানে কতজন মিশনকর্মী গিয়ে আমরা দেখি তারা কী অবস্থায় রয়েছেন। কী কাজ করেন, কী তাদের সমস্যা। এরকম প্রো- একটিভ মুভমেন্ট আমাদের মধ্যে কম। এক্ষেত্রে কিছু ফিজিক্যাল সাপোর্টের বিষয়ও রয়েছে। আমাদের বিদেশে যে মিশনগুলো আছে সেখানে যথেষ্ট জনবল নেই।

মিশনে আমরা যে জনবল পাঠাই তারা মুলত প্রশাসনিক সংস্কৃতির মানুষ। তারা সেখানে গিয়ে নিজ থেকে স্বপ্রনোদিত হয় উদ্যোগী ভূমিকা পালন করবে সেটা সবাই করতে পারে না। সেটার জন্য তারা যে সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত সেটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সংস্কৃতির অংশ। বিদেশে বেশকিছু কাজ করতে গিয়ে যে দক্ষতার প্রয়োজন হয় সেটাও সব সময় থাকে না। ফলে যেটা হয় অধিকার রক্ষার বিষয়টা একটা বড় বিষয়। সেটায় আইনি প্রক্রিয়া আছে, তারা যেখানে কাজ করে সেখানকার সঙ্গে সংযুক্ত হবার বিষয় আছে। কর্মীরা যারা ঘরের বাইরে কাজ করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলার চেয়ে গৃহে যারা কাজ করেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলা কঠিন। সেখানেও আমাদের যে পরিমাণ উদ্যেগ প্রয়োজন সেখানে আমরা পৌছাতে পারিনি। কিন্তু এটার দরকার পড়বে। যতই মানুষ যেতে থাকবে ততই প্রতিযোগীতামূলক বাজারে সম্মুখীন হবেন এবং ততই এ বিষয়গুলোতে মনযোগী হতে হবে। বিশ্ব শ্রমবাজার বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রণ করে না। এটি অনেকটা লোকাল কন্ডিশনের ওপর নির্ভর করে। জনশক্তি রফতানিকারক অন্যান্য দেশও আছে। প্রতিযোগীতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হলে বাংলাদেশের যেটি শক্তি, দক্ষতা সেটার ওপর জোর দিতে হবে। আমি মনে করি যেটুকু পটেনশিয়ালিটি আমাদের পাওয়া উচিত ছিল সে জায়গায় পৌছাতে আরো কাজ করতে হবে।

রাষ্ট্রদূত কবীর আবারও উদাহরণ দিয়ে বলেন, ফিলিপাইন কর্মীদের বিশ্ববাজারে বেশ চাহিদা রয়েছে। কারণ তারা শিক্ষিত ও দক্ষ। তারা গত বছর ৩০ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। বাংলাদেশ করেছে ১৪ বিলিয়ন। যদিও তাদের কর্মী বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম। কিন্তু তারা টাকা ও সম্মান দুটোয় পায়। কারণ তাদের সুরক্ষা ও অধিকার রক্ষায় দেশটি সরকার সোচ্চার। তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিছুদিন আগে কুয়েতে ফিলিপাইনের এক গৃহকর্মীর লাশ ফ্রিজে পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর ফিলিপাইন তাদের সমস্থ কর্মী কুয়েত থেকে ফিরিয়ে নিয়েছে। এ যে শক্তিশালী সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং বিষয়টির প্রতি সংবেদনশীল থাকা তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু একটি শ্রমিককে হত্যা করল তা একটা শ্রমিকের বিষয় নয়, গোটা জাতীয় সম্মানের বিষয়। সে দৃষ্টিভঙ্গিটা থাকা দরকার। সেটা না থাকলে আপনি মানুষকে শুধু টাকার অংকে বিচার করবেন। লক্ষ্য করুণ আমরা অনেক বড় বড় কথা বলি জনশক্তি নিয়ে, বক্তুতা বিবৃতি চলে- কিন্তু এখানে এয়ারপোর্টে যখন একজন শ্রমিক নামেন, তাকে যেভাবে হেনস্থা করা হয় সেটা দেখার কেউ নেই এবং এটা না থাকার কোনোও কারণ আমি দেখি না।

 

   

মালয়েশিয়ায় প্রতারিত হওয়া শ্রমিকরা পাচ্ছেন আড়াই কোটি টাকা



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাউথ ইস্ট এশিয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মালয়েশিয়ার জোহরবারুতে প্রতারিত হওয়া ৭৩৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিককে তাদের পাওনা বেতন বাবদ আড়াই কোটি টাকার বেশি প্রদান করা হবে।

গত ফেব্রুয়ারিতে জোহরবারুতে ৭৩৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের খোঁজ মেলে। তাদেরকে প্রায় ৪ মাস ধরে বিনা বেতনে কাজ করানো হচ্ছিল এবং প্রতিশ্রুত কাজও দেয়া হয়নি। এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি জোহর শ্রম অধিদফতর এই শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করার জন্য ৪৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ে নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করেনি কর্তৃপক্ষ।

শ্রম বিভাগ জানিয়েছে মোট অপরিশোধিত বেতনের পরিমাণ ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৫৫৭ বাথ। যা বাংলাদেশি অর্থে আড়াই কোটি টাকারও বেশি।

মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় শুক্রবার (১৭ মে) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কর্মসংস্থান আইন ১৯৫৫ এর ধারা ৬৯(৪) এর অধীনে জোহর শ্রম অধিদফতর এখন নিয়োগকর্তাকে দায়রা আদালতে এনে শ্রম আদালতের জারি করা আদেশ কার্যকর করবে।

মালিকপক্ষ দোষী সাব্যস্ত হলে, কোম্পানি প্রতিটি অপরাধের জন্য ৫০ হাজার রিঙ্গিত বা ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে এবং শ্রমিকদের পাওনা মজুরি নিষ্পত্তি করতে হবে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কোম্পানিটির বিরুদ্ধে চলা মোট ১০টি তদন্তের মধ্যে ৪টিতে মামলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। বাকি ৬টি অধিকতর তদন্তের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও কোম্পানিটিতে বিদেশি কর্মী নিয়োগের কোটা প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং নিয়োগকর্তাকে নতুন বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, একটি বিশেষ ‘নিয়োগকর্তা পরিবর্তন প্রক্রিয়া’ (পিটিএম) এর মাধ্যমে মোট ৬৯২ জন ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি কর্মীকে এরই মধ্যে নতুন কর্মস্থলে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

;

সকাল ৯টার মধ্যে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা কিছুদিন বৃষ্টিপাতের পর গত ২-৩ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় সিলেট বিভাগে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে। 

শুক্রবার (১৭ মে) রাত সাড়ে ১১টা থেকে শনিবার (১৮ মে) সকাল ৯টার মধ্যে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। 

নদীবন্দরের জন্য দেয়া সতর্কবার্তায় বলা হয়, সিলেট অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে সন্ধ্যায় দেয়া আবহাওয়া বার্তায় জানানো হয়, সিলেটে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এ ছাড়া রাজশাহীতে ৩, নওগাঁর বদলগাছী ও পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ২, বগুড়ায় ১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় রংপুরেও সামান্য বৃষ্টি হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের দুই এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। 

এর পরের ২৪ ঘণ্টা ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। 

;

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের আনন্দ শোভাযাত্রা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা করেছে চট্টগ্রামের ওমরগণি এম ই এস কলেজ ছাত্রলীগ।

শুক্রবার (১৭ মে) নগরীর জিইসি মোড় থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এতে এম.ই.এস কলেজ ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে যোগ দেয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশরত্ন শেখ হাসিনা যখন বঙ্গবন্ধু বিহীন বাংলাদেশে ফিরে আসে তখন থেকে বাঙালি স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। শেখ হাসিনাকে বারবার হত্যাচেষ্টা করে বাঙালির সেই স্বপ্নকে নষ্ট করতে চেয়েছিল খুনিরা। কিন্তু শত বাধা,ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে একটি স্বনির্ভর রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন।

'আজকে শেখ হাসিনা মানেই উন্নত বাংলাদেশ, শেখ হাসিনা মানেই উন্নয়ন, শেখ হাসিনা মানেই তারুণ্যের চোখে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন। ১৯৮১ সালে আজকের দিনে বিদেশের মাটি থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা স্বদেশে এসে খুনি, স্বৈরাচার জিয়ার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ঘোষণা করেন, আমার হারানোর কিছুই নাই, এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য আমি লড়াই করবো।'

তারা আরও বলেন, আজ বাংলার মানুষ ভোট এবং ভাতের অধিকার ফিরে পেয়েছে, তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। সমুদ্র জয় থেকে মহাকাশ জয় শুধু শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং সাহসিকতার জন্য সম্ভব হয়েছে। আজকে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমরা এম ই এস কলেজ ছাত্রলীগ ধন্য।

শোভাযাত্রায় কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ইমাম উদ্দীন নয়ন, রাকিব হায়দার, নুরুন নবী সাহেদ, আব্দুল্লাহ আল নোমান, সাজ্জাদ হোসেন, রবিউল ইসলাম খুকু, আব্দুর রাজ্জাক, সাজ্জাদ আলম, নুর মোহাম্মাদ সানি, আওরাজ ভূইয়া রওনক, নুরুজ্জামান বাবু, তৌফিক চৌধুরী প্রমুখ।

;

লালমনিরহাটে নির্মিত হলো দেশীয় প্রযুক্তির প্রথম টার্ন টেবিল



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

লালমনিরহাট রেল বিভাগে ব্রিটিশ আমলের প্রযুক্তি সরিয়ে দেশেই তৈরি হলো প্রথম টার্ন টেবিল। ফলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে।

ব্রিটিশ আমলে তৈরি করা লালমনিরহাটে রেলের ইঞ্জিন ও কোচ ঘোরানোর টার্ন টেবিলটি প্রায় তিন দশক আগে বিকল হলে তা ব্যবহার বন্ধ করে রেল বিভাগ। তাই ইঞ্জিন বা কোচ ঘোরানোর জন্য ঢাকায় যেতে হত। লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনের সিক লাইন এলাকায় প্রস্তুত দেশে তৈরি এ টার্ন টেবিলটি উদ্বোধন হলে সময় ও অর্থ দু'টোই সাশ্রয় হবে রেলওয়ের।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে দফতর জানায়, রেলের কোচ বা ইঞ্জিনকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর টার্ন টেবিলের ওপর রেখে ঘোরানো হয়। এতে বাঁ দিকের চাকা ডান দিকে, ডান দিকের চাকা বাঁ দিকে চলে যায়। ফলে দুই পাশের চাকা সমানভাবে ক্ষয় হয়। এতে চাকার স্থায়িত্ব বাড়ে ও দুর্ঘটনা ঝুঁকি কমে। ব্রিটিশ আমলে তখনকার কর্মকর্তারা যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে লালমনিরহাটে টার্ন টেবিল প্রস্তুত করেন। যা ১৯৯৩ সালে বিকল হয়ে পড়লে ব্যবহার বন্ধ করে রেলওয়ে দফতর।

'এরপর থেকে লালমনিরহাট বিভাগের কোচ ও ইঞ্জিন ঘোরানোর জন্য কোচ ও ইঞ্জিনগুলো কয়েক মাস পর পর ঢাকায় নেয়া হত। যাতে সময় ও অর্থ অপচয় হত। তাই দেশেই টার্ন টেবিল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে। লালমনিরহাটে সিক লাইন এলাকায় এটি নির্মাণের জন্য ৯শতক জমি নেয়া হয়। নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া ২৫ লাখ টাকা। বিভাগীয় রেলওয়ে দফতরের প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামানের (বাবু) নকশা ও প্রযুক্তিতে এ টার্ন টেবিলটি তৈরি হয়েছে। নির্মাণকাজ শুরু হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে আর শেষ হয়েছে গত মার্চ মাসে। খুব শীঘ্রই এটি উদ্বোধন করা হবে।

বিভাগীয় রেলওয়ে দফতরের প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামানের (বাবু) বলেন, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এ টার্ন টেবিলের কার্যকারিতা সফলভাবে যাচাই করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশে নির্মিত প্রথম টার্ন টেবিল। ৩৫০ টন ওজনের ভার বহনে সক্ষম এ টার্ন টেবিলে ১৪ টন ওজনের একটি ব্রিজ রয়েছে। এটি এই যন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর ওপরে ইঞ্জিন ও কোচ তুলে ঘোরানো হয়। স্থাপনাটির তিন ধাপে পাকা দেয়াল রয়েছে, যা সীমানা প্রাচীর, সুরক্ষা প্রাচীর ও লাইন দেয়াল নামে পরিচিত। এর মেঝে আরসিসি ঢালাই দেওয়া। এতে পানি জমলে পানির পাম্প দিয়ে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, টার্ন টেবিলটি নির্মাণে ৩৫০ টন ভার বহনে সক্ষম একটি রোলার থ্রাস্ট বিয়ারিং, আটটি এক্সেল বিয়ারিং, ব্রিজ নির্মাণের জন্য এমএস লোহার তৈরি এইচবিম, অব্যবহৃত রেললাইন, ট্রেনের অব্যবহৃত চারটি চাকা, এমএস টপ প্লেট, চেকার প্লেট, বলস্টার প্লেট, এমএস অ্যাঙ্গেল ও জিআই পাইপের রেলিং ব্যবহার করা হয়েছে। চলতি মাসের শেষ দিকে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আবদুস সালাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, সম্পূর্ণ দেশি প্রযুক্তিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে স্বল্প টাকা ব্যয়ে টার্ন টেবিলটি নির্মিত হয়েছে। এতে অব্যবহৃত লাইন, চাকাসহ অন্য লৌহজাত নির্মাণ উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। রেলের কর্মকর্তারা সব সময় নিজেদের মেধা দিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন। এটি তার উদাহরণ।

;