‘আগের সেই দিন আর নেই সৌদি আরবে’



জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

 

সৌদি আরব (মক্কা)থেকে: বেকারত্ব আর আর্থিক মন্দায় বিপাকে পড়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের প্রবাসী ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। সেই সঙ্গে নতুন নতুন ফরমান জারি আর আর্থিক সংস্কারের কারণে যত দিন যাচ্ছে ততই কঠিন থেকে কঠোরতর পরিস্থিতি দাঁড়াচ্ছে সৌদি প্রবাসীদের।

সৌদি আরবে এসে চাকরি না পেয়ে যারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হয়ে মুদি, দর্জি, সেলুন, বোরকার দোকান, মাছ, সবজি,মোবাইল ফোনের দোকান ও হোটেল-রেস্তোঁরা খুলেছিলেন ভালো নেই তারাও। একদিকে যেমন ব্যবসা কমেছে অন্যদিকে বেড়েছে ব্যবসা পরিচালনার ব্যয়। সব মিলিয়ে বেশ বিপাকেই রয়েছেন এসব ব্যবসায়ীরা।

সৌদি আরবে নিজের দোকান বা হোটেল দৃশ্যমান থাকলেও আসলে কোন মালিক নয় তারা। বিনিয়োগ থেকে ব্যবসা পরিচালনা, ঝুঁকি মোকাবেলা, কঠোর শ্রমের বিনিময়ে টিকে থাকার অদম্য চেষ্টাসহ সব কিছুই করতে হয় প্রবাসীদের। তবে কাগজে কলমে এর মালিক সৌদি নাগরিক। যার লাইসেন্সে মূলত চলে ব্যবসা।

এই লাইসেন্সধারীদের ‘কফিল’ বা নিয়োগ কর্তা বলা হয়। ফলে তাদের হাতেই এক রকম জিম্মি জীবন ব্যবসায়ীদের। সৌদিতে থাকতে হলে কফিলকে মাসোয়ারা হিসেবে বছর শেষে দিতে হচ্ছে আয়ের একটি বড় অংশ। তার সঙ্গে রয়েছে ফি বছর দোকান ভাড়া ও ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় বেড়ে যাওয়া। সব মিলিয়ে বর্তমান পরিস্থিতির  সঙ্গে  তাল মিলিয়ে চলতে হিমশিম খাচ্ছেন প্রবাসী উদ্যোক্তরা।

সৌদিতে ব্যবসা করে টিকতে না পেরে দীর্ঘদিনে গড়ে তোলা ব্যবসা ছেড়ে দেশে পাড়ি দেওয়া মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। তবে দেশে ফিরছেন রিক্ত আর নি:স্ব হয়ে। যারা রয়েছেন তারাও দেশে ফেরার  প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ব্যবসার এমন মন্দা পরিস্থিতিতে মক্কা নগরীর সেবা আমির জবলে সউদান নামে পাহাড়ের বুকে এখন এই প্রবাসীদের দীর্ঘশ্বাস।

সৌদি আরবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোস্তাক আহমেদ (৩৮)। ১০ বছর ধরে সৌদিতে রয়েছে চট্রগ্রামের সাতকানিয়ার পশ্চিম ঘাটিয়াডেঙ্গা গ্রামের মোস্তাক। এখানে তার  একটি ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর রয়েছে। ব্যবসা জমজমাট হলে দেশ থেকে নিয়ে আসেন ছোট ভাই জসিম উদ্দিনসহ এক ভাগ্নেকে। গত ছয় মাস ধরে ব্যবসায়ীক মন্দায় কঠিন সময় অতিক্রম করতে হচ্ছে মোস্তাককে

এমনকি ব্যবসার পরিসর বাড়াতে যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন, সেখান থেকে সরে এসে উল্টো ব্যবসা পরিচালনা করাটাই তার কঠিন হয়ে পড়েছে।

মোস্তাক বার্তা২৪.কমকে বলেন, আরে ভাই, সৌদি আরব আর আগের মতো নেই। ক্রেতা কমেছে। ব্যবসায় ক্ষতি হলেও দোকান ভাড়া,বৈদ্যুতিক বিলসহ যাবতীয় ব্যয় বেড়ে যায়। তাই এসব মিটিয়ে টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রবাসী ব্যবসায়িরা বলছেন, চলতি বছরের শুরু থেকে কঠিন মন্দার পথে হাঁটছেন প্রবাসী ক্ষুদ্র উদ্যোক্তরা। এরমধ্যেও কেউ জমানো অর্থ ভাঙিয়ে খাচ্ছেন। কেউ বা সুদিন আসবে - এমন আশায় মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন।

মক্কার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা আর পারছি না। আগামী হজ্বের পর পরিস্থিতি দেখবো। টিকতে না পারলে চলেই যেতে হবে। ব্যবসার পরিস্থিতি ভালো না। পর্যাপ্ত কাজ নেই। আবার কাজ থাকলেও যথাযথ বেতন নেই। অশান্ত শ্রমবাজার। অনিশ্চিত এক ভবিষ্যতকে সামনে রেখে বর্তমান সময়কে পাড়ি দিতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন অনেকে।

তবে এমন বৈরী পরিবেশেও দিবাস্বপ্ন নিয়ে বিপুল অর্থ ব্যয়ে দলে দলে মানুষ ঢুকছে সৌদিতে। ফ্রি ভিসা নিয়ে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়ে গভীর সংকটের মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছেন এই অভিবাসীরা। এমনিতেই কর্ম সংকট। তার ওপর দেশ থেকে আসা বাড়তি শ্রমিকের এই চাপ। সব মিলিয়ে ভারসাম্যহীন এখানকার শ্রম বাজার।

বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার সৌদি আরব। তবে দেশে থাকা মধ্যস্বত্বভোগী দালালদের কারসাজিতে অভিবাসী ব্যয়ের ১৬ আনাই মিছে হয়ে যাচ্ছে প্রবাসী শ্রমিকদের। বছর শেষে হিসেবে কষে দেখা যাচ্ছে অভিবাসন ব্যয় বাদ দিয়ে শ্রমের কোন মূল্য নেই।

অন্যদিকে স্থায়ী কাজের অভাব ও নারী শ্রমিকদের নিপীড়িত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরের শুরুতে সৌদি আরবে জনশক্তি রপ্তানি কমতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অভিবাসন ব্যয় বৃদ্ধি।

অভিবাসন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অসাধু জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সিন্ডিকেট ও মধ্যস্বত্বভোগীদের ভিসা-বাণিজ্যের কারণে অভিবাসন ব্যয় কমছে না। নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করাও কঠিন হয়ে পড়ছে।

আগে দুই হাজার রিয়েলে আকামা (রেসিডেন্স পারমিট) পাওয়া গেলেও ক্ষেত্রে বিশেষে তা উঠেছে ১০/১২ হাজার রিয়ালে। চাহিদা মতো অর্থ দিতে না পারলে কফিল আকামা। নবায়নে গড়িমসি করে। আবার সময় মতো নবায়ন না করলে প্রবাসীদের ৫০০ রিয়াল জরিমানা গুণতে হয়।

ফলে ভাগ্য বদলের হাজারো স্বপ্ন নিয়ে এখানে পাড়ি দিয়ে হোঁচট খাচ্ছেন অভিবাসী শ্রমিকরা।

মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরবই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার। দেশ থেকে আসা প্রবাসী শ্রমিকদের চাহিদা মেটাতেই উদ্যোক্তা হয়েছিলেন মোস্তাকের মতো অনেকেই। তবে অসাধু জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সিন্ডিকেট ও মধ্যস্বত্বভোগীদের ভিসা-বাণিজ্যের কারণে অভিবাসন ব্যয় দিন দিন বাড়ছে।

 

যার ফলে অবৈধভাবে সৌদিতে বসবাস ও শ্রম আইন লংঘন করা শ্রমিকদের সংখ্যা বাড়ছে। ধর পাকড়ে আটক করা হয়েছে বহু শ্রমিক। এদের মধ্যে ১৫ হাজার ৭০২ জনকে আকামা ভঙ্গ, ৪ হাজার ৩৫৩ জনকে শ্রম আইন লঙ্ঘন করা এবং ৩ হাজার ৮৮৩ জনকে সীমান্ত নিরাপত্তা আইন লংঘনের অভিযোগে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আবার নতুন শ্রমিক এসেও না পাচ্ছেন কাজ। না পারছেন বৈধভাবে বসবাস করতে।

সব মিলিয়ে চাপটা এসে পড়ছে এই শ্রেণিকে ভিত্তি করে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ব্যবসায়িদের উপর। সব মিলিয়ে শ্রম বাজার ঘিরে চলছে নিরব এক অস্তিরতা। এতে অনিশ্চয়তা আর শঙ্কার ভাঁজ পড়েছে মোস্তাকদের মতো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কপালে।

   

ফেনীর একরাম হত্যার ১০ বছর, এখনও উচ্চ আদালতে ঝুলে আছে বিচারকাজ



মোস্তাফিজ মুরাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ফেনীর একরাম হত্যার ১০ বছর আজ

ফেনীর একরাম হত্যার ১০ বছর আজ

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশে আলোচিত ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একরামকে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে হত্যার দশ বছর পূর্ণ হল সোমবার (২০ মে)। এ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১৭ আসামিকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ছাড়া রায় ঘোষণার ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও উচ্চ আদালতে শুরু হয়নি দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিলের শুনানি।

২০১৪ সালের ২০ মে ফেনী শহরের একাডেমি এলাকায় একরামুল হককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে, কুপিয়ে, গুলি করে ও গাড়িতে আগুন দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ওই দিন এ ঘটনায় ফেনী সদর মডেল থানায় মামলা করেন একরামের বড় ভাই জসিম উদ্দিন। মামলায় ফুলগাজীর বিএনপি নেতা ও উপজেলা নির্বাচনে একরামের প্রতিদ্বন্দ্বী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকে আসামি করা হয়।

শুনানি শুরু না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে আসামি পক্ষের আইনজীবী আহসান কবীর বেঙ্গল জানান, জেলা জজ আদালতে রায় ঘোষণার পর উচ্চ আদালতে আপিল করেন দণ্ডপ্রাপ্তরা। সেই আপিলের শুনানি উচ্চ আদালতের কার্যতালিকায় রয়েছে।

ফেনী আদালতের আইনজীবী শাহজাহান সাজু জানান, এ মামলায় দুটি আসামি এবং রাষ্ট্রপক্ষ দুটি পৃথক আপিল করেছে। উচ্চ আদালতে মামলাটি এখন ডেথ রেফারেন্স শুনানীর জন্য অপেক্ষমাণ।

ডেথ রেফারেন্স শুনানি সম্পর্কে ফেনী আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) হাফেজ আহম্মদ বলেন, এটি উচ্চ আদালতের বিষয়। উচ্চ আদালতে বিচার আটকে যাওয়ায় অসন্তুষ্ট একরামের ছোট ভাই মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, রায় কার্যকরে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের রায় যাতে দ্রুত কার্যকর হয়, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।

একরাম হত্যার ১০ দশ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও বিভীষিকা মোছেনি নিহতের স্ত্রী তাসনিম আক্তার ও একরামের পরিবারে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তাসনিম বলেন, মামলা সম্পর্কে আপনারা সবাই ভালো জানেন। আমার কিছু বলার নেই।

এদিকে ১০ বছর পার হলেও এখনও পলাতক একরাম হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ আসামি।

আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একরাম হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ড পাওয়া ৩৯ জনের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির, ফেনী পৌরসভার তৎকালীন কাউন্সিলর আবদুল্লাহ হিল মাহমুদসহ ২২ আসামি কারাগারে রয়েছেন, পলাতক রয়েছেন ১৭ জন। এদের মধ্যে আটজন বিচার চলাকালীন জামিনে মুক্ত হয়ে পালিয়ে যান, বাকিরা শুরু থেকে পলাতক ছিলেন।

পলাতক আসামিরা হলেন জাহিদ হোসেন, আবিদুল ইসলাম, চৌধুরী মো. নাফিজ উদ্দিন, আরমান হোসেন, জাহেদুল হাসেম, জিয়াউর রহমান, জসিম উদ্দিন, এমরান হোসেন, রাহাত মো. এরফান, একরাম হোসেন ওরফে আকরাম, শফিকুর রহমান, কফিল উদ্দিন মাহমুদ, মোসলে উদ্দিন, ইসমাইল হোসেন, মহিউদ্দিন আনিছ, মো. বাবলু ও টিটু। এর মধ্যে চারজন জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর পালিয়ে যান। পলাতক ও কারাগারে থাকা দণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিই স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী।

মামলাটির তদন্ত শেষে ৫৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ। এর মধ্যে এক আসামি র‍্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যান। ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ মামলার রায়ে ৩৯ জনকে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে খালাস পান বিএনপির নেতা মাহতাব উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীসহ ১৬ জন।

রায়ে বলা হয়, স্থানীয় নির্বাচন থেকে আসামিদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধের কারণে একরামকে হত্যা করা হয়েছে। একরামের বড় ভাই জসিম উদ্দিন ৩৩ জনকে আসামি করে মামলা করলে চার বছর পর ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ ৩৯ জনকে ফাঁসির আদেশ দেন ফেনীর জেলা ও দায়রা জজ। এই মামলার আসামি ফুলগাজীর বিএনপি নেতা ও উপজেলা নির্বাচনে একরামের প্রতিদ্বন্দ্বী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী মিনারসহ খালাস পান ১৬ জন। মামলা চলাকালে এক আসামি র‍্যাবের সঙ্গে 'কথিত বন্দুকযুদ্ধে' মারা যান। স্থানীয় নির্বাচন থেকে আসামিদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধের কারণে একরামকে হত্যা করা হয়েছে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেছেন।

ফাঁসির দণ্ড পাওয়া আসামিদের মধ্যে আছেন- জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির, ফেনী পৌরসভার তৎকালীন কাউন্সিলর আবদুল্লাহ হিল মাহমুদ। বাকিরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।

মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কনডেম সেলে বন্দিদের মধ্যে আছেন- জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির আদেল, যাকে রায়ে হত্যার পরিকল্পনাকারী বলা হয়েছে। ফেনী পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুল্লাহিল মাহমুদ শিবলু, সাজ্জাদুল ইসলাম পাটোয়ারী ওরফে সিফাত, আবু বক্কার সিদ্দিক ওরফে বক্কর, আজমির হোসেন রায়হান, শাহজালাল উদ্দিন শিপন, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ওরফে আজাদ, কাজী শানান মাহমুদ, মীর হোসেন আরিফ, আরিফ ওরফে পাচ্চু আরিফ, রাশেদুল ইসলাম রাজুও বন্দি। অন্যরা হলেন সোহান চৌধুরী, জসিম উদ্দিন নয়ন, নিজাম উদ্দিন আবু আবদুল কাইউম, নুর উদ্দিন মিয়া, তোতা মানিক, জিয়াউর রহমান বাপ্পি, মো. সজিব, মামুন, রুবেল, হুমায়ুন ও টিপু। এদের মধ্যে জিয়াউর রহমান বাপ্পিকে ২০২১ সালের ১২ নভেম্বর গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের মধ্যে সদর থানা এলাকার ১৩ জনের গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। পলাতক অন্য আসামিদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।

;

রাইসির মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিসহ আরোহীদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (২০ মে) পৃথক বার্তায় তারা শোক জানিয়েছেন।

শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন, ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি দেশটির নাগরিক ও প্রেসিডেন্টের স্বজনদের গভীর সমবেদনা জানান।

পৃথক এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাইসিকে একজন বড় মাপের নেতা উল্লেখ করে বলেন, তিনি সারাজীবন তার দেশের জন্য কাজ করে গেছেন। তার কাজের উপকার ভোগ করছেন দেশটির নাগরিকরা।

তিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যুতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশের পাশাপাশি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

এদিকে, আজ সোমবার প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার চেষ্টার পর ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মিলে। এরপর বিধ্বস্ত হওয়া হেলিকপ্টার থেকে রাইসিসহ দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমতি ও এই প্রদেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে, রোববার (১৯ মে) দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হেলিকপ্টারটি।

বলা হচ্ছে, আজারবাইজানে একটি জলাধার প্রকল্প উদ্বোধনের পর পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে যাচ্ছিল ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি। দুর্ঘটনার পরপরই প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীদের উদ্ধারে অংশ নেয় ৪০টি দল। উদ্ধাকারী দল এসেছে তুরস্ক ও রাশিয়া থেকেও। তবে দুর্ঘটনাস্থলে ভারী বৃষ্টিপাত ও ঘন কুয়াশার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়। অঞ্চলটি পাহাড়-পর্বতে ভরপুর হওয়ায় দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার অভিযান শেষে রাইসির হেলিকপ্টারের খোঁজ পান উদ্ধার কর্মকর্তারা।

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানায়, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বেল ২১২ মডেলের একটি হেলিকপ্টার বহন করছিল। এই মডেলটি যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি। ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পরে যুক্তরাষ্ট্রের এটি ইরানের কাছে বিক্রি করার কথা নয়। সে হিসেবে উড়োযানটি অন্তত ৪৫ বছরের পুরনো।

এর আগেও আকাশপথে দুর্ঘটনায় দেশটির অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। প্রতিরক্ষা ও বিভিন্ন সময়ে পরিবহনমন্ত্রী, ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড ও সেনাবাহিনীর কমান্ডার বিমান বা হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।

;

খাবারে রাসায়নিক ব্যবহারে ইহকাল পরকাল নষ্ট হচ্ছে: বিভাগীয় কমিশনার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেছেন, খাবারে রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে এক দিকে যেমন পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে অপর দিকে যে ব্যবহার করছে তার ইহকাল পরকাল সবই নষ্ট হচ্ছে। এ থেকে আমাদের সকলকে বিরত থাকতে হবে|

সোমবার (২০ মে) রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ে বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই)-এর এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, পৃথিবীতে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সময় এবং মানুষের সেবা করা। সব ধর্মেই এর গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা সেবা করতে গিয়ে অনেক সময় অধিক মুনাফার আশায় মানুষকে ওজন বা পরিমাপে কম দেই, যেটা চরম অপরাধ। মানুষ অনেক কষ্ট করে টাকা উপার্জন করে। সেই কষ্টের টাকা আমরা কোনোভাবেই বিনষ্ট হতে দিবো না।

হুমায়ূন কবীর বলেন, ফল পরিপক্ক হওয়ার আগে নামিয়ে ফেলে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক ব্যবহার করে বাজারজাত করা হচ্ছে। এতে মানুষের চরম ক্ষতি হচ্ছে। এটা বিএসটিআই বা প্রশাসনের পক্ষে একাই নির্মূল করা সম্ভব নয়। আপনাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। আপনাদের বাড়ির আশেপাশে যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটে তবে আমাদের জানান, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এছাড়া অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন অভিযোগ সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন বিভাগীয় কমিশনার।

বিএসটিআই’র উপপরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে র‌্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ মুনীম ফেরদৌস, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এণ্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল এণ্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আরিফুল ইসলাম নাহিদসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

;

ছেলেকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে দেখে মায়ের বিষপান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় নিজ সন্তানকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে দেখে তাহমিনা আক্তার (৫১) নামের এক মা বিষপানে আত্নহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন।

রবিবার (১৯ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডস্থ মধ্যম মিরেরখীল মাইজপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, স্থানীয় কৃষক দিদারুল আলমের মানসিক ভারসাম্যহীন পুত্র মো. তারেক (২২) রবিবার সন্ধ্যার দিকে নিজ ঘরের বিমের সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে নিজ সন্তানকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে দেখে মা তাহমিনা আক্তার নিজেও বিষপান করে আত্নহত্যার চেষ্টা চালান।

এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এসে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে থাকা তারেককে নামিয়ে নেন। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তারেককে মৃত ঘোষণা করেন এবং তার মাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।

প্রতিবেশী সমাজসেবক ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শুক্কুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তারেক ছেলেটি একটি দোকানে সেলসম্যানের কাজ করতো। সে মানসিক ভারসাম্যহীন। এর আগেও একবার সে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছিলো।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রশ্মি চাকমা জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ছেলের মৃত্যু হয়। আর বিষপান করা মায়ের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে চমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

হাটহাজারী মডের থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হবে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে এলে কিভাবে কি হয়েছে তা জানা সম্ভব হবে।

;