রোহিঙ্গারা বিচার পাবে কি?



এরশাদুল আলম প্রিন্স, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর

  • Font increase
  • Font Decrease

রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতে (আইসিসি)মিয়ানমারের বিচার প্রসঙ্গে বাংলাদেশের মতামত জানতে চেয়েছে আইসিসি। গণমাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, বাংলাদেশ আইসিসিতে মিয়ানমারের অপরাধ তদন্ত ও বিচারের জন্য নীতিগতভাবে সম্মত।

আইসিসিতে মিয়ানমারের বিচারের প্রশ্নে সম্মতি প্রদান বাংলাদেশের জন্য একটি সাহসী উদ্যোগ। বাংলাদেশ যাতে আইসিসির দ্বারস্ত না হয় সে জন্য মিয়ানমার ছলচাতুরি কম করেনি। তারা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে আর ফিরিয়ে নেবে না, দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার সব পথ রুদ্ধ হবে-এ জাতীয় জুজুর ভয় ও অজুহাত দেখিয়েছে। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন এক জিনিস আর তাদের ওপর নির্যাতনের জন্য মিয়ানমারের বিচার হওয়া আরেক জিনিস। তবে, বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে আইসিসিতে মিয়ানমারের বিচার চাওয়া বাংলাদেশের জন্য একটি কঠিন সিদ্ধান্ত।

মিয়ানমারের বিচার করার জন্য আইসিসির অঞ্চলগত বা ভূখণ্ডগত এখতিয়ার (Terrritorial Jurisdiction) আছে কিনা সেটি এখানে একটি বড় প্রশ্ন। কারণ, মিয়ানমার আইসিসি সনদে সাক্ষর করেনি। তাই তাদের দাবী, আইসিসির মিয়ানমারের বিচার করার এখতিয়ার নেই। কিন্তু সনদে সাক্ষর করাই এখতিয়ারের একমাত্র উপায় না।

বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের সাথে দ্বিপাক্ষিক কূটনীতি চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও মিয়ানমারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। তবে আইসিসিতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের বিচারের বিষয়টি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর একটি বাড়তি চাপ প্রয়োগ করবে।

গত আগস্ট থেকে মিয়ানমার থেকে সাড়ে সাত লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে জীবন নিয়ে পালিয়ে এসেছে। এর সাথে আগে চলে আসা রোহিঙ্গারাতো আছেই্। সব মিলিয়ে ১০ লক্ষের ওপর রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এখন আশ্রিত। এই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত নেয়ার জন্য মিয়ানমার তাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে বাংলাদেশ চলে আসতে বাধ্য করেনি। এটি তাদের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনারই একটি অংশ। কিন্তু বাংলাদেশইবা ‌এই বিপুল সংখ্যক মিয়ানমার নাগরিকদের দায়িত্ব কেন নেবে? সব মিলিয়ে বিষয়টি আর দ্বিপাক্ষিক পরিসরে সীমাবদ্ধ থাকেনি। বিশ্বের অপরাপর পরাশক্তিগুলোও এখানে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘ তথা নিরাপত্তা পরিষদেও তারা রোহিঙ্গা প্রশ্নে ঐকমত্য হতে পারেনি।

মিয়ানমার অতি সম্প্রতি জাতিসংঘের সাথে একটি সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি সই করেছে। এটি মিয়ানমারের এক নতুন কৌশল। তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে না নিয়ে বিশ্ববাসীকে তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য তথাকথিত উদ্যোগী ভূমিকা জাহির করতে চায়। কিন্তু বাস্তবে প্রত্যাবাসনের জন্য কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেনা। মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা উ থাং টুন বলেছেন যে তারা সব রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু বাস্তবে তারা কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছেনা।

মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের সাথে যা করেছে যেকোনো হিসেবেই তা গণহত্যা। এই গণহত্যার বিচার চাওয়া একটি মানবিক ও মানবাধিকারের দাবি।

কিছুদিন আগে নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। তারা বাংলাদেশে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিন পরিদর্শন করে গেছেন। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছেনা। কারণ চীন ও রাশিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে গেলে তাদের ‘ভেটো অস্ত্র’ প্রয়োগ করছে। কিন্তু বিশ্ববাসী মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রেখেই যাচ্ছে। যুক্তরাজ্য ও কানাডা তাদের সুর কিছুটা নরম করেছে। ভারতও তাদের আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে। তারা সবাই এখন ‘রোহিঙ্গা’ ইস্যুর জন্য মিয়ানমারকেই দায়ী করছে। ফলে, রোহিঙ্গা প্রশ্নে বাংলাদেশের অবস্থান এখন আগের চেয়ে সুদৃঢ়। সম্প্রতি নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি কারে পিয়েরস বলেছেন, মিয়ানমার যদি তার সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ড তদন্ত করতে ব্যর্থ হয় তবে তারা আইসিসিকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য পাঠাতে বাধ্য হবে। তার মানে, নিরাপত্তা পরিষদও জানে আইসিসির অপরাধ তদন্ত করতে কোনো বাধা নেই। শুধু তাদের সুপারিশই যথেষ্ট।

বিশ্ববাসী জানে, মিয়ানমার এ সমস্যার সৃষ্টি করেছে এবং তাদেরকেই এর সমাধান করতে হবে। ‘শরণার্থীদের নিরাপদ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনই এ সমস্যার একমাত্র গ্রহণযোগ্য আইনানুগ ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধান। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ সব রকম প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের দৃষ্টিতে মিয়ানমারের বিচার হওয়াও জরুরি। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র দেওয়ানি কার্যক্রম বা প্রত্যাবাসনই যথেষ্ট নয়, ফৌজদারি পদক্ষেপও জরুরি। মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছে। এসবই আন্তর্জাতিক আইনে অপরাধ। আন্তর্জাতিক আদালত (International Court of Justice-'ICJ') ও আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতে (International Criminal Court-'ICC') এসব অপরাধের বিচার হতে পারে। শুধু এখতিয়ারগত বিষয়টিই এখানে বিবেচ্য।

আইসিসি সনদ অনুযায়ী তারা গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ, ও আগ্রাসনের বিচার করতে পারে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আইসিসি সনদে বর্ণিত বেশ কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত করা যায়। মিয়ানমার সেনাবাহিনী মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। তারা রোহিঙ্গাদের হত্যা করেছে, তাদেরকে নির্বাসন বা জোড়পূর্বক স্থানান্তর করেছে, নানাভাবে নির্যাতন করেছে, ধর্ষণ, গুম এমনকি জাতিগত হিংসা বা বিদ্বেষ ছড়িয়েছে। এসবই মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। প্রত্যাবাসেনর পাশাপাশি এসব অপরাধের বিচার হওয়া সভ্যতার দাবী। বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের উচিৎ মিয়ানমারের বিচারের প্র্রশ্নে সরব হওয়া। নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশের পর বাংলাদেশের সুস্পষ্ট সম্মতির বিষয়টি আইসিসি কর্তৃক মিয়ানমারের বিচারের পথকে আরো সুগম করবে। বিচারের প্রশ্নে কোনো দ্বিমুখী নীতি এক্ষেতে কোনো সুফল বয়ে আনবেনা। রোহিঙ্গারা সবকিছু হারিয়েছ। এবার অন্তত বিচার পাওয়ার এ সর্বশেষ অধিকারটি বিশ্ববাসী তাদের জন্য নিশ্চিত করুক।

 

   

মালয়েশিয়ায় প্রতারিত হওয়া শ্রমিকরা পাচ্ছেন আড়াই কোটি টাকা



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাউথ ইস্ট এশিয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মালয়েশিয়ার জোহরবারুতে প্রতারিত হওয়া ৭৩৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিককে তাদের পাওনা বেতন বাবদ আড়াই কোটি টাকার বেশি প্রদান করা হবে।

গত ফেব্রুয়ারিতে জোহরবারুতে ৭৩৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের খোঁজ মেলে। তাদেরকে প্রায় ৪ মাস ধরে বিনা বেতনে কাজ করানো হচ্ছিল এবং প্রতিশ্রুত কাজও দেয়া হয়নি। এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি জোহর শ্রম অধিদফতর এই শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করার জন্য ৪৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ে নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করেনি কর্তৃপক্ষ।

শ্রম বিভাগ জানিয়েছে মোট অপরিশোধিত বেতনের পরিমাণ ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৫৫৭ বাথ। যা বাংলাদেশি অর্থে আড়াই কোটি টাকারও বেশি।

মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় শুক্রবার (১৭ মে) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কর্মসংস্থান আইন ১৯৫৫ এর ধারা ৬৯(৪) এর অধীনে জোহর শ্রম অধিদফতর এখন নিয়োগকর্তাকে দায়রা আদালতে এনে শ্রম আদালতের জারি করা আদেশ কার্যকর করবে।

মালিকপক্ষ দোষী সাব্যস্ত হলে, কোম্পানি প্রতিটি অপরাধের জন্য ৫০ হাজার রিঙ্গিত বা ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে এবং শ্রমিকদের পাওনা মজুরি নিষ্পত্তি করতে হবে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কোম্পানিটির বিরুদ্ধে চলা মোট ১০টি তদন্তের মধ্যে ৪টিতে মামলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। বাকি ৬টি অধিকতর তদন্তের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও কোম্পানিটিতে বিদেশি কর্মী নিয়োগের কোটা প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং নিয়োগকর্তাকে নতুন বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, একটি বিশেষ ‘নিয়োগকর্তা পরিবর্তন প্রক্রিয়া’ (পিটিএম) এর মাধ্যমে মোট ৬৯২ জন ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি কর্মীকে এরই মধ্যে নতুন কর্মস্থলে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

;

সকাল ৯টার মধ্যে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা কিছুদিন বৃষ্টিপাতের পর গত ২-৩ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় সিলেট বিভাগে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে। 

শুক্রবার (১৭ মে) রাত সাড়ে ১১টা থেকে শনিবার (১৮ মে) সকাল ৯টার মধ্যে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। 

নদীবন্দরের জন্য দেয়া সতর্কবার্তায় বলা হয়, সিলেট অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে সন্ধ্যায় দেয়া আবহাওয়া বার্তায় জানানো হয়, সিলেটে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এ ছাড়া রাজশাহীতে ৩, নওগাঁর বদলগাছী ও পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ২, বগুড়ায় ১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় রংপুরেও সামান্য বৃষ্টি হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের দুই এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। 

এর পরের ২৪ ঘণ্টা ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। 

;

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের আনন্দ শোভাযাত্রা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা করেছে চট্টগ্রামের ওমরগণি এম ই এস কলেজ ছাত্রলীগ।

শুক্রবার (১৭ মে) নগরীর জিইসি মোড় থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এতে এম.ই.এস কলেজ ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে যোগ দেয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশরত্ন শেখ হাসিনা যখন বঙ্গবন্ধু বিহীন বাংলাদেশে ফিরে আসে তখন থেকে বাঙালি স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। শেখ হাসিনাকে বারবার হত্যাচেষ্টা করে বাঙালির সেই স্বপ্নকে নষ্ট করতে চেয়েছিল খুনিরা। কিন্তু শত বাধা,ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে একটি স্বনির্ভর রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন।

'আজকে শেখ হাসিনা মানেই উন্নত বাংলাদেশ, শেখ হাসিনা মানেই উন্নয়ন, শেখ হাসিনা মানেই তারুণ্যের চোখে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন। ১৯৮১ সালে আজকের দিনে বিদেশের মাটি থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা স্বদেশে এসে খুনি, স্বৈরাচার জিয়ার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ঘোষণা করেন, আমার হারানোর কিছুই নাই, এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য আমি লড়াই করবো।'

তারা আরও বলেন, আজ বাংলার মানুষ ভোট এবং ভাতের অধিকার ফিরে পেয়েছে, তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। সমুদ্র জয় থেকে মহাকাশ জয় শুধু শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং সাহসিকতার জন্য সম্ভব হয়েছে। আজকে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমরা এম ই এস কলেজ ছাত্রলীগ ধন্য।

শোভাযাত্রায় কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ইমাম উদ্দীন নয়ন, রাকিব হায়দার, নুরুন নবী সাহেদ, আব্দুল্লাহ আল নোমান, সাজ্জাদ হোসেন, রবিউল ইসলাম খুকু, আব্দুর রাজ্জাক, সাজ্জাদ আলম, নুর মোহাম্মাদ সানি, আওরাজ ভূইয়া রওনক, নুরুজ্জামান বাবু, তৌফিক চৌধুরী প্রমুখ।

;

লালমনিরহাটে নির্মিত হলো দেশীয় প্রযুক্তির প্রথম টার্ন টেবিল



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

লালমনিরহাট রেল বিভাগে ব্রিটিশ আমলের প্রযুক্তি সরিয়ে দেশেই তৈরি হলো প্রথম টার্ন টেবিল। ফলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে।

ব্রিটিশ আমলে তৈরি করা লালমনিরহাটে রেলের ইঞ্জিন ও কোচ ঘোরানোর টার্ন টেবিলটি প্রায় তিন দশক আগে বিকল হলে তা ব্যবহার বন্ধ করে রেল বিভাগ। তাই ইঞ্জিন বা কোচ ঘোরানোর জন্য ঢাকায় যেতে হত। লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনের সিক লাইন এলাকায় প্রস্তুত দেশে তৈরি এ টার্ন টেবিলটি উদ্বোধন হলে সময় ও অর্থ দু'টোই সাশ্রয় হবে রেলওয়ের।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে দফতর জানায়, রেলের কোচ বা ইঞ্জিনকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর টার্ন টেবিলের ওপর রেখে ঘোরানো হয়। এতে বাঁ দিকের চাকা ডান দিকে, ডান দিকের চাকা বাঁ দিকে চলে যায়। ফলে দুই পাশের চাকা সমানভাবে ক্ষয় হয়। এতে চাকার স্থায়িত্ব বাড়ে ও দুর্ঘটনা ঝুঁকি কমে। ব্রিটিশ আমলে তখনকার কর্মকর্তারা যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে লালমনিরহাটে টার্ন টেবিল প্রস্তুত করেন। যা ১৯৯৩ সালে বিকল হয়ে পড়লে ব্যবহার বন্ধ করে রেলওয়ে দফতর।

'এরপর থেকে লালমনিরহাট বিভাগের কোচ ও ইঞ্জিন ঘোরানোর জন্য কোচ ও ইঞ্জিনগুলো কয়েক মাস পর পর ঢাকায় নেয়া হত। যাতে সময় ও অর্থ অপচয় হত। তাই দেশেই টার্ন টেবিল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে। লালমনিরহাটে সিক লাইন এলাকায় এটি নির্মাণের জন্য ৯শতক জমি নেয়া হয়। নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া ২৫ লাখ টাকা। বিভাগীয় রেলওয়ে দফতরের প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামানের (বাবু) নকশা ও প্রযুক্তিতে এ টার্ন টেবিলটি তৈরি হয়েছে। নির্মাণকাজ শুরু হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে আর শেষ হয়েছে গত মার্চ মাসে। খুব শীঘ্রই এটি উদ্বোধন করা হবে।

বিভাগীয় রেলওয়ে দফতরের প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামানের (বাবু) বলেন, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এ টার্ন টেবিলের কার্যকারিতা সফলভাবে যাচাই করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশে নির্মিত প্রথম টার্ন টেবিল। ৩৫০ টন ওজনের ভার বহনে সক্ষম এ টার্ন টেবিলে ১৪ টন ওজনের একটি ব্রিজ রয়েছে। এটি এই যন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর ওপরে ইঞ্জিন ও কোচ তুলে ঘোরানো হয়। স্থাপনাটির তিন ধাপে পাকা দেয়াল রয়েছে, যা সীমানা প্রাচীর, সুরক্ষা প্রাচীর ও লাইন দেয়াল নামে পরিচিত। এর মেঝে আরসিসি ঢালাই দেওয়া। এতে পানি জমলে পানির পাম্প দিয়ে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, টার্ন টেবিলটি নির্মাণে ৩৫০ টন ভার বহনে সক্ষম একটি রোলার থ্রাস্ট বিয়ারিং, আটটি এক্সেল বিয়ারিং, ব্রিজ নির্মাণের জন্য এমএস লোহার তৈরি এইচবিম, অব্যবহৃত রেললাইন, ট্রেনের অব্যবহৃত চারটি চাকা, এমএস টপ প্লেট, চেকার প্লেট, বলস্টার প্লেট, এমএস অ্যাঙ্গেল ও জিআই পাইপের রেলিং ব্যবহার করা হয়েছে। চলতি মাসের শেষ দিকে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আবদুস সালাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, সম্পূর্ণ দেশি প্রযুক্তিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে স্বল্প টাকা ব্যয়ে টার্ন টেবিলটি নির্মিত হয়েছে। এতে অব্যবহৃত লাইন, চাকাসহ অন্য লৌহজাত নির্মাণ উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। রেলের কর্মকর্তারা সব সময় নিজেদের মেধা দিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন। এটি তার উদাহরণ।

;