উদয়পুর গণমাধ্যম সম্মেলন, ভাঙল মিলনমেলা



রাজীব নন্দী, উদয়পুর (রাজস্থান), ভারত থেকে
ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের রাজস্থানের লেক সিটি খ্যাত উদয়পুরে গত দু'দিনের ঝিরি-ঝিরি বৃষ্টির ছন্দে সাঙ্গ হলো ‘চতুর্থ অল ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া কনফারেন্স-২০১৯'।

ভাঙল মিলনমেলা। গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার বৈশ্বিক পরিবর্তনকে মেনে নিয়ে নতুন ধারার সাংবাদিকতার ওপর দক্ষতা বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে এ আন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে। এটি সর্ব ভারতীয় বৈশ্বিক গণমাধ্যম সম্মেলন হিসেবে খ্যাত। ডিজিটাল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ও সর্বভারতীয় জাতীয় পর্যায়ের লড়াইয়ের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্তরের গণমাধ্যম গবেষণা ও গণমাধ্যম নিয়ে চর্চার আহ্বান জানানো হয় এ সম্মেলন থেকে।

সকাল সাড়ে ১০টায় এমএল সুখদিয়া ইউনিভার্সিটিতে শুরু হয় সমাপনী সেশন। দিনভর চলে সনদপত্র, বিতরণ বিদায়ী সম্ভাষণ ও ফটো সেশন। অভ্যাগতরা একে একে বিদায় নিতে শুরু করলে বিষাদের শূন্যতায় ছেয়ে যায় তিনদিন ধরে ব্যস্ততা থাকা এ মিলনায়তন। বাংলাদেশ ডেলিগেশনের মোট ৯টি প্রবন্ধ থেকে দুটি প্রবন্ধ বেস্ট পেপার এওয়ার্ড লাভ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ও বিশিষ্ট টিভি ব্যক্তিত্ব ড. শামীম রেজা এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ তাদের দুটি প্রবন্ধে এই বেস্ট পেপার এওয়ার্ড খ্যাতি পান।

অপরদিকে, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নে সাংগঠনিক দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ বিশেষ সম্মাননা লাভ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং ইন্দো বাংলা চর্চা বিষয়ক গবেষক রাজীব নন্দী।

এই কনফারেন্সে বাংলাদেশ ভারত ছাড়াও ইউরোপ, আমেরিকাসহ একাধিক দেশ থেকে মোট ৬০০ পৃষ্ঠার গবেষণা প্রবন্ধ সংকলন গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।

বিদায়ী অধিবেশনের দিন কনফারেন্স চেয়ারম্যান শ্রী কল্যাণ সিং কোঠারি সবার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এ কনফারেন্স আয়োজনের পেছনে সবার ত্যাগ ও সম্মান দেখে তিনি অভিভূত। ভবিষ্যতে ভারতের মাটিতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গবেষক সম্মেলনের জন্য তিনি আবারও সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। টানা দ্বিতীয়বারের মতো রাজস্থানে এ প্রোগ্রাম করতে পেরে তিনি গর্বিত।’

এতে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গণমাধ্যম, যোগাযোগ, সাংবাদিকতা, চলচ্চিত্র বিষয়ক গবেষকদের সমাগম ঘটেছে যা তিনি আশা করেছিলেন।

কনফারেন্সের কো-চেয়ারম্যান পশ্চিমবঙ্গের এডামাস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি ড. উজ্জ্বল কে চৌধুরী জানান, ভবিষ্যতে এ কনফারেন্সকে আরও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গসহ অপরাপর জনগোষ্ঠিকে নিয়ে এ গণমাধ্যম আসর বসতে পারে কলকাতায়।

বাংলাদেশ ডেলিগেশনের পক্ষ থেকে অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান বলেন, ভবিষ্যতে এ কনফারেন্স বাংলাদেশেও আয়োজন করা যেতে পারে। এ ধরনের কনফারেন্স আয়োজন করতে গেলে যে ধরনের সাংগঠনিক দক্ষতা দরকার তা এ মুহুর্তে বাংলাদেশের রয়েছে। বাংলাদেশে এ ধরনের গণমাধ্যম গবেষণা সম্মেলন আয়োজন হলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরো ব্যাপক কলোবরে আয়োজন করলে দক্ষিণ এশিয়া সহ পৃথিবীতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে।

অলইন্ডিয়া চতুর্থ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গবেষণা সম্মেলনের বিশেষ খবরগুলো নিয়মিত পরিবেশন করে যাচ্ছে বাংলাদেশের জনপ্রিয় অনলাইন মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম। বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমের সম্পাদক আলমগীর হোসেনের বিশেষ তত্ত্বাবধানে সংবাদগুলো পরিবেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অনুষ্ঠান থেকে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতে বাংলাভাষী জনগণের কাছে এই তিন ধরে কনফারেন্সের খবর পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।

কনফারেন্সের শেষ দিন মধ্যহ্নভোজের পর মূলত অভ্যাগতরা মেতে ওঠেন বিদায়ী সম্ভাষণে। এ সময় দুই বাংলার গবেষকদের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল লক্ষ্যণীয়। তারা প্রত্যেকেই দুই বাংলার একটি সম্মিলিত যুথবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম প্রত্যাশা করছেন। তারা বলছেন- বাংলাদেশ ও ভারত সাংস্কৃতিকগত দিক থেকে এতোই নৈকটয় যে তারা চাইলেই গণযোগাযোগ, সাংবাদিকতা এবং চলচ্চিত্র ইত্যাদি নিয়ে একটি যুথবদ্ধ দীর্ঘমেয়াদী গবেষণা কাজে যুক্ত হতে পারেন।

কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক স্নেহাশীষ সুর বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে হাঁটছে। বাংলাদেশে অনেক দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে যা আগে কল্পনা করা যায়নি।

সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভেলপমেন্টের (এসএসিএমডি) প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দ কামরুল হাসান এ কনফারেন্সে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশের একজন গণমাধ্যম গবেষণার অন্যতম সাংগঠনিক ব্যক্তি। যিনি জোর দিচ্ছেন মূলত মিডিয়া লিটারেসির ওপর। বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে তিনি বলেন, ‘এ গবেষণা সম্মেলন বাংলাদেশের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। গত বছরের তুলনায় এখানে অংশগ্রহণ বেড়েছে। যা দৃশ্যমান পরিবর্তন হলেও, মূলত বাংলাদেশে গণযোগাযোগ গবেষণা আরও বেশি প্রসারিত করতে হবে। সেক্ষেত্রে এরকম সাংগঠনিক কনফারেন্স সাংগঠনিক যোগাযোগগুলো ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।’

তিনি বাংলাদেশে মিডিয়া লিটারেসি প্রোমিটংয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগ এবং সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ক শিক্ষকদের আরো সক্রিয়তা প্রত্যাশা করেন।

কনফারেন্সের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রফেসর ড. কুঞ্জন আচারিয়া বলেন, ‘এই কনফারেন্সটি ভারতের গণমাধ্যম গবেষণার একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। এতে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের গণমাধ্যম বিষয়ক সংকট ও সম্ভাবনাগুলো যেমন উঠে এসেছে, তেমনি সংকটগুলো পরিত্রাণের অনেকগুলো পথও উঠে এসেছে।’

   

সুযোগ পেলেই ওরা সাপের মত ছোবল মারতে চায়: রাষ্ট্রপতি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বাধীনতা বিরোধীরা এখনো সক্রিয় বলে মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, সুযোগ পেলেই ওরা সাপের মত ছোবল মারতে চায়। একাত্তরের পরাজিত ঘাতক দালালদের বিরুদ্ধে ইস্পাত কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এজন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ৮ম জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ৭২'র সংবিধানে ফিরে যেতে সরকার ওয়াকিবহাল। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সংবিধানকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেভাবে চেয়েছিলেন সেটি করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। স্বাধীনতার মূল্যবোধকে ধরে রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর।

স্বাধীনতা বিরোধীরা মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জনকে ধ্বংস করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা এখনো দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তারা আছে বলেই একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রয়োজন রয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের প্রতীকী ফাঁসি দিয়েছিল এই সংগঠন।

স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে পতাকা উঠলে আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, আমারা কি আর জীবিত থাকি প্রশ্ন রেখে রাষ্ট্রপতি বলেন, এখনো ওরা (স্বাধীনতা বিরোধী) স্লোগান দেয় পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। স্বাধীনতা বিরোধীরা এখনো সক্রিয়। তাই একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রয়োজন রয়েছে। ওরা সুযোগ পেলেই সাপের মত ছোবল মারতে চায়।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ২০০১ সালে নির্বাচন পরবর্তী সংখ্যালঘু নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। তখন ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিশন গঠন করে সরকার। ওই কমিশনের আমি প্রধান ছিলাম। এই কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কৃপণতার সঙ্গে মাত্র ৫০ কপি প্রকাশ করেছিল। একটি সংগঠন সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিল। সংগঠনটির নাম বলতে চাই না। তাদের মূল এজেন্ডা ছিল আমার প্রতিবেদন। তারা বলেছিল, তারা ক্ষমতায় গেলে আমাকে ফাঁসি দেওয়া হবে। হয়তো তারা আমাকে ফাঁসি দিতে পারবে না। সেই সুযোগটা তারা পাবে না। কারণ আজকে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যেভাবে জেগে উঠেছে তারা আর আমাকে ফাঁসি দিতে পারবে না।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে তিনি আরও বলেন, নানা বাধা বিপত্তি পেরিয়ে নিজেদের অবস্থানে থেকেছেন। নিজেদের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়নি। এজন্য ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিকে অভিবাদন জানাই।

এ সম্মেলনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মিলন সভাপতি বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মানবাধিকার নেতা নির্মল রোজারিও, আদিবাসী মুক্তি মোর্চার সভাপতি অধ্যাপক যোগেন্দ্রনাথ সরেনসহ প্রমুখ।

;

নোয়াখালীতে পাওয়ার ট্রিলারের চাপায় শিশুর মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় পাওয়ার টিলারে চাপায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পরপরই ঘাতক চালক পলাতক রয়েছে।  

নিহত মো.রিফাত (৬) উপজেলার চর জুবলি ইউনিয়নের পূর্ব চরজব্বর গ্রামের রেজোয়ানুর রহমানের ছেলে। সে স্থানীয় পূর্ব চরজব্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

শনিবার (১৮ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এলাকার বাঁধের হাট বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাউছার আলম ভূঁইয়া।  

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাঁধের হাট এলাকা থেকে মাটি নিয়ে যাচ্ছিলো পাওয়ার টিলার । এ সময় রাস্তায় শিশুটি চলন্ত পাওয়ার টিলারে উঠতে চেষ্টা করে। ওই সময় পাওয়ার টিলারের নিচে শিশুটি চাপা পড়ে মাথা থেতলে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে।  

ওসি কাউছার আলম ভূঁইয়া আরও বলেন,নিহতের পরিবার এখনো কোনো অভিযোগ করেনি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পাওয়ার ট্রিলারটি জব্দ করে। পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

;

নির্বাচন ও বৌদ্ধ পূর্ণিমার ছুটিতে টানা ৫ দিন আমদানি-রফতানি বন্ধ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
লোকসভা নির্বাচন ও বৌদ্ধ পূর্নিমার ছুটিতে বেনাপোল বন্দর ৫ দিন বন্ধ

লোকসভা নির্বাচন ও বৌদ্ধ পূর্নিমার ছুটিতে বেনাপোল বন্দর ৫ দিন বন্ধ

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচন ও বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে আজ থেকে টানা ৫ দিন বন্ধের কবলে পড়েছে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। 

এদিকে আমদানি রফতানি বন্ধ থাকায় দুই পার বন্দরে আটকা পড়েছে সহস্রাধিক পণ্য বোঝায় ট্রাক।

বন্দর সূত্রে জানায়, ভারতের উত্তর ২৪ পরগনা ও পশ্চিমবঙ্গে আগামী ২০ মে অনুষ্ঠিত হবে লোকসভা নির্বাচন। নিরাপত্তার কারণে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা নির্বাচন অফিসার সাক্ষরিত চিঠিতে জানানো হয়েছে, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সব ধরনের আন্তর্জাতিক রুট সিল করা প্রয়োজন। এজন্য ১৭ মে সন্ধ্যা  টা থেকে ২০ মে ভোটগণণা শেষ না হওয়া পর্যন্ত শুধু মেডিকেল ভিসা ও ভারতীয় ভোটার পাসপোর্টধারীরা বেনাপোল-পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন ব্যবহার করতে পারবে। এ সময় বন্ধ থাকবে ট্যুরিস্ট ভিসায় যাতায়াত। এছাড়া বন্ধ রাখা হয়েছে ১৮ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত আমদানি-রফতানি বাণিজ্য এব্ং ২২ মে বৌদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি।

এত আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় দুই বন্দরে আটকা পড়েছে সহস্রাধিক পণ্য বোঝায় ট্রাক। অন্যদিকে ঢুকতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন ট্যুরিস্ট, বিজনেস ও স্টুডেন্ট ভিসার পাসপোর্টধারীরা। তবে মেডিকেল ভিসার পাসপোর্টধারী ও ভারতীয় ভোটার- এমন নাগরিকদের যাতায়াতে কোন বাধা নেই।

পণ্য পরিবহনকারী ট্রাক চালক জমির উদ্দীন জানান, ৫ দিন বন্ধের কারণে বন্দরে আটকা পড়েছি। এতে তাদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

বেনাপোল বন্দর আমদানি,রফতানি সমিতির সাধারণ সমবপাদক জিয়াউর রহমান জানান, ভারতে নির্বাচন ও বৌদ্ধ পূর্ণিমার ছুটিতে ৫দিন আমদানি-রফতানি বন্ধ রেখেছে ভারত সরকার। এতে তাদের অনেক পণ্যবাহী ট্রাক ওপারে আটকা পড়েছে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের যাত্রী টার্মিনালের ইনচার্জ নাহিদুল ইসলাম নাহিদ জানান, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞায় ট্যুরিস্ট ভিসায় যাতাযাত বন্ধ আছে। তবে মেডিকেল ভিসা চালু আছে। আগামী ২১ মে থেকে সব ধরনের পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত স্বাভাবিক এবং ২৩ মে থেকে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য শুরু হবে।

;

আমে বাজার সয়লাব, কতটুকু নিরাপদ?



সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চলছে মধুর মাস। জৈষ্ঠ মাসের আজ চারদিন। এরই মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় ফল। দেশীয় ফলের পাশাপাশি রয়েছে বিদেশি ফলেরও সমাহার। তবে ক্রেতাদের চাহিদায় প্রথমেই রয়েছে দেশীয় ফলের কদর। আর এই কদর থাকায় একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী অপরিপক্ব ফলে ফরমালিন মিশিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

সরেজমিন রাজবাড়ীর বিভিন্ন উপজেলার বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ফলের দোকানেই বিদেশি ফলের পাশাপাশি সাজিয়ে রেখেছে দেশীয় ফল। দেশীয় আমের মধ্যে বাজার দখল করে নিয়েছে সাতক্ষীরা গোবিন্দভোগ। এ আমের পাশাপশি রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির আম। দেশীয় আমের সাথেই রয়েছে ভারত থেকে সংগ্রহ করা আম। যে আমগুলো রাজবাড়ীর বাজারে এসেছে আরো সপ্তাহ দুয়েক আগে।

এতো আগে বাজারে ভারতীয় আম আসায় ক্রেতাদের মনে প্রশ্ন উঠেছে- বাজারে সয়লাব আমগুলো কতটুকু নিরাপদ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিভিন্ন কর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তাদের ভাষ্য- যে কোন ফলই প্রথম দিকে বাজারে আসা ফল না কেনায় শ্রেয়। এতে অপরিপক্ব কিংবা ফরমালিন মিশ্রিত থাকার সম্ভাবনা থাকে অনেকটাই বেশি।

কথা হয় বালিয়াকান্দির মেছুয়া ঘাটার বাসিন্দা নজরুল মোল্লার সাথে। তিনি জানান, পরিবারের জন্য ফল কিনতে দোকানে এসেছিলেন। দোকানে  আম দেখে বেশ লোভ হয় তার। দোকানদারের কথার ওপর ভরসা করে তিনি চড়া দামে কিনে নেন সাতক্ষীরার আম। বাড়ীতে নিয়ে কেটে দেখেন আমের ভিতরের বীজটা অপরিপক্ব। আমের স্বাদ পানসে। কোন মিষ্টি নেই।  তখন তার মনে খটকা লাগে- আমের মধ্যে বীজটা অপরিপক্ব হলে আমের বাইরের দৃশ্য এতো চাকচিক্য কেন?

নজরুল মোল্লার এই প্রশ্নের উত্তর জানতে কথা বলি এক ফলের দোকানদারের সাথে। নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে তিনি বার্তা২৪.কমকে জানান, তারা আম সংগ্রহ করেন যশোর ও সাতক্ষীরা থেকে। পাইকারির আড়ৎ থেকে তারা যেভাবে সংগ্রহ করেন সেভাবেই সরাসরি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। যদি কিছু মিশিয়ে আমগুলো রঙিন করে তাহলে এর সকল দায়ভার আড়তদারদের।

এই সময়ে বাজারে থাকা আমগুলো কতটুকু নিরাপদ- এমন প্রশ্ন করলে রাজবাড়ী জেলার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারি পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, যে কোন ফলই প্রথম দিকে বাজারে আসলে সেটা না কেনায় ভালো। কারণ প্রথম দিকে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক লাভের আশায় অপরিপক্ব ফল বাজারে আমদানি করে। কিছু দিন পর কিনলে সেটাতে ঝুঁকি কম থাকে। এ বিষয়ে আপনার দপ্তরের ভূমিকা কি- এমন প্রশ্ন করলে এই কর্মকর্তা জানান, তারা নিয়মিত ক্রেতার সচেতন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

ভোক্তা অধিকারের পর যোগাযোগ করা হয় কৃষি বিপণন দপ্তরের সাথে। রাজবাড়ীর কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো: আকমল হোসেন বার্তা২৪.কমকে জানান, রাজবাড়ীতে উল্লেখযোগ্য তেমন আম উৎপাদন হয় না। চাপাই এবং সাতক্ষীরার আমই রাজবাড়ীতে বেশি পাওয়া যায়। এখন বাজারে যে আম পাওয়া যাচ্ছে সেটা কতটুকু নিরাপদ? জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু আপনি নিরাপদের প্রশ্নটা তুললেন সেহেতু বিষয়টি দেখে বলতে হবে। আমরা দ্রুতই বিষয়টি জেলা প্রশাসকের মহোদয়ের সাথে কথা বলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে বাজারে গিয়ে যাচাই করবো। এ বিষয়ে কৃষি বিপণী আইন-২০১৮ বিধিমালা-২০২১ একটি শক্তিশালী আইন রয়েছে। এই আইনের ধারা আমরা বাস্তবায়ন করবো।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, বৈশাখীসহ স্থানীয় জাতের আম বাজারজাতকরণ করার তারিখ নির্ধারণ করেছেন ৯ মে, গোবিন্দভোগ- ১১ মে, হিমসাগর- ২২ মে, ল্যাংড়া-২৯ মে এবং আম্রপালীর বাজারজাতকরণের তারিখ নির্ধারণ করেছেন ১০ জুন।

;