দাবি মানার পরও আন্দোলনের যৌক্তিকতা কী প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বুয়েটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি কর্তৃপক্ষ মেনে নেওয়ার পরেও সেখানে আন্দোলন চলছে কেন সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, সাধারণ ছাত্রদের ১০ দফা দাবির সবগুলো দাবিই মেনে নিয়েছে ভিসি। তারপরও না কী তারা আন্দোলন করবে। কেন করবে জানি না। এরপর আন্দোলন করার কী যৌক্তিকতা থাকতে পারে। কিন্তু এই ভিডিও ফুটেজ যখন সংগ্রহ করা হয় তখন তারা বাধা দিয়েছিল। কেন বাধা দিয়েছিল আমি জানি না?

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে মহিলা শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বুয়েটের ঘটনায় আমরা কিন্তু দেরি করিনি। কোন দল করে সেটা না। খুনিকে খুনি হিসেবেই আমরা দেখি। অন্যায়কারীকে অন্যায়কারী হিসেবেই আমরা দেখি। অত্যাচারীকে অত্যাচারী হিসেবেই আমরা দেখেছি। খবরটা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি কারো আন্দোলনেরও অপেক্ষা করিনি, কারো নির্দেশেরও অপেক্ষা করিনি। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি যে এদেরকে গ্রেফতার করার এবং ভিডিও ফুটেজ থেকে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করার। এই তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশ পড়লো বিপদে।

বিজ্ঞাপন

ফুটেজ সংগ্রহে আন্দোলনকারীদের বাঁধার প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে পুলিশের আইজিপি ছুটে আসলো- কী করবো? আমি বললাম তারা কী চায়? বললেন, তারা ভিডিওর কপি চায়। আমি বললাম কপি করে তাদের দিয়ে দাও। তোমরা তাড়াতাড়ি ফুটেজটা সংগ্রহ কর। ফুটেজটা নিলেই তো আমরা আসামি চিহ্নিত করতে পারবো, ধরতে পারবো। কে গেছে না গেছে দেখতে পারবো, সাথে সাথে ব্যবস্থা নিতে পারবো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিন চার ঘণ্টা সময় যদি ছাত্ররা নষ্ট না করতো তাহলে আরো আগেই আসামিরা ধরা পড়তো। মনে হলো যেন আসামিদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হলো কী না, এটার জবাব ওই আন্দোলন যারা করেছে তারা বলতে পারবে, আমি বলতে পারবো না। আমি কিন্তু এক মিনিটও দেরি করি নাই। খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এই ধরণের অন্যায় করলে কখনো এটা মেনে নেওয়া যায় না।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানির প্রেক্ষপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে এরশাদের আমলে সব সময় ছিল অস্ত্রের ঝনঝনানি। তখন মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছিল। আমি শুধু জিজ্ঞেস করতে চাই, এত ছাত্র হত্যা হয়েছে কয়টার বিচার কে করেছে? সেই ৭৪ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে করেছে। আর যখনই আমরা ক্ষমতায় এসেছি তখনই আমরা সাথে সাথে বিচার করেছি। এর বাইরে কেউ আজ পর্যন্ত বলতে পারবে কোনো বিচার হয়েছে?

বুয়েট ছাত্রী সাবিকুন নাহার সনি হত্যার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তখন কে প্রতিবাদ করলো? তখন তো আমাদের বুয়েটের যে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন তাদেরকে নামতে দেখি নাই। প্রতিবাদ করতে দেখিনি, তখন তারা কোন কথা বলেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সবার কথা বলার অধিকার আছে। বলতে পারে, অন্তত এই সুযোগটা আছে।

শেখ হাসিনা বলেন, যখন জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় তখন জাতির পিতার খুনিদের পুরস্কৃত করলো। যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দিল। সাত খুনের আসামিকে যারা নেতা বানালো কে কে তখন প্রতিবাদ করেছে? তখন মানবাধিকারের চিন্তা কোথায় ছিল? তখন ন্যায়-নীতি বোধ কোথায় ছিল? তাদের কাছে আমার জিজ্ঞাসা।

তিনি বলেন, আমাদের কথা একেবার স্পষ্ট, কোনো অন্যায় অবিচার আমরা সহ্য করবো না। করি নাই, ভবিষ্যতেও করবো না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ রাখতে হবে।

সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন মহিলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রওশন জাহান সাথী। বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন মহিলা শ্রমিক লীগের জেষ্ঠ সহ-সভাপতি সুলতানা আনোয়ারা, স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি সুরাইয়া আক্তার, সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শামছুন্নাহার ভূইয়া এমপি।