কমরেড ভূপেশ গুপ্ত: ময়মনসিংহ থেকে মস্কো



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
কমরেড ভূপেশ গুপ্ত, ডান পাশে জ্যোতি বসু, ছবি: সংগৃহীত

কমরেড ভূপেশ গুপ্ত, ডান পাশে জ্যোতি বসু, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বঙ্গ প্রদেশে ভূপেশ গুপ্তের জন্ম তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলায়, যে স্থানটি বর্তমানে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলাধীন। ২০ অক্টোবর ১৯১৪ সালে জল ছলছল হাওরে জন্ম গ্রহণকারী শিশুটি পরিণত হয়েছিলেন সমগ্র ভারতবর্ষের কমিউনিস্ট রাজনীতির আইকনে।

তার জীবন নিবেদিত ছিল মানুষের মুক্তির সংগ্রামে। যে সংগ্রামী জীবনের অবসান হয়েছিল সমাজতন্ত্রের আন্তর্জাতিক কেন্দ্র অধুনালুপ্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের রাজধানী মস্কোতে, ৬ আগস্ট ১৯৮১ সালে।      

কিশোরগঞ্জের প্রত্যন্ত হাওরাঞ্চলের ইটনা উপজেলার একটি অপরূপ বৈশিষ্ট্য আছে। বিচিত্র প্রাকৃতিক বিভার পাশাপাশি এ জলজ-জনপদ  আরও অনেক মেধাবীর জন্মস্থান। উল্লেখ করা যায় আনন্দমোহন বসুর নাম, যিনি বাংলার প্রথম রেংলার ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন এবং উপমহাদেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী দেবব্রত বিশ্বাস।

ইটনায় জন্ম নিলেও ভূপেশ গুপ্তের জীবন পরিগঠিত হয়েছে কলকাতায়।  তিনি পড়াশোনা করেন প্রসিদ্ধ স্কটিশ চার্চ কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকেই তিনি অধ্যয়নের সংগে রাজনৈতিক দীক্ষাও অর্জন করেন।     

তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় বাম-সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী আন্দোলনের মাধ্যমে। ১৯৩০-৩১ সালে বিপ্লবী কার্যকলাপের জন্য তিনি ধৃত হয়ে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত কারাগারে বন্দিজীবন কাটান। জেলে অন্তরীণ অবস্থায় আই.এ. এবং বি.এ. পাস করেন তিনি।

জেল থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডনে যান তিনি। সেখানে এল.এল.বি. ডিগ্রি পান এবং মিডল টেম্পল থেকে ব্যারিস্টার হয়ে ১৯৪১ সালে ভারতে ফিরে আসেন। তিনি আইন পেশাকে বেছে নেন রাজনীতির অংশ হিসাবে। কারণ, দেশে ফিরে এসেই তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির 'ফুলটামার' বা সার্বক্ষনিক কর্মী হয়ে জনগণের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

ভারত স্বাধীন হওয়ার পর উত্তেজক পরিস্থিতিতে কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ হয়, তখন, ১৯৪৮ সালে ভূপেশ গুপ্ত আত্মগোপনে চলে গিয়ে পার্টির কাজ করতে থাকেন। ১৯৫১ সালে তিনি আবার গ্রেপ্তার হয়ে দমদম জেলে বন্দি অবস্থায় রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন। তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সর্বোচ্চ ফোরাম  জাতীয় পরিষদের ও কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন।

শুধু ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনেই নয়, ভূপেশ গুপ্ত আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট অঙ্গনের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ১৯৫৭, ১৯৬০ এবং ১৯৬৯ সালে মস্কেতে অনুষ্ঠিত কমিউনিস্ট এন্ড ওয়ার্কার্স পার্টিগুলোর আন্তর্জাতিক অধিবেশন তিনটিতেই তিনি প্রতিনিধিত্ব করেন।

বাম রাজনীতির অংশ হিসাবে তিনি সমাজতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা ও সাংবাদিকতায় মনোনিবেশ করেন। তিনি ১৯৬৬ সাল থেকে নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক এবং দৈনিক স্বাধীনতার সম্পাদকীয় বোর্ডের সদস্য ছিলেন। বাংলা ও ইংরেজিতে কয়েকটি পুস্তকও তিনি রচনা করেন।

অকৃতদার ভূপেশ গুপ্ত জীবনের পুরোটাই বিলিয়ে দিয়েছেন কমিউনিস্ট পার্টির জন্য। দলের জন্য কলকাতা ও দিল্লিতে যাওয়া-আসা ছাড়াও ছুটেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। তার মৃত্যুও হয়েছে মস্কোতে। ভূপেশ গুপ্তের স্মৃতি বলতে যা কিছু, সবই মিশে আছে ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অতীতের পাতায় উৎকীর্ণ সংগ্রামী ইতিহাসপঞ্জিতে। আরও মিশে আছে বৃহত্তর ময়মনসিংহের কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার হাওরের জলমগ্ন ভূগোলের লিলুয়া বাতাস ও জলকল্লোলে। 

   

নওগাঁয় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁর পত্নীতলায় তীব্র তাপদাহ হতে রক্ষা ও বৃষ্টি চেয়ে এবং জনজীবনে স্বস্তির আশায় নজিপুর পৌর শহরের শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম মাঠে সালাতুল ইসতিসকার বিশেষ নামাজ আদায় করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ৯ টায় তাপদাহ থেকে মুক্তি পেতে ও রহমতের বৃষ্টি বর্ষণের জন্য পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌর শহরের শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম মাঠে এ নামাজ আদায় করা হয় । এই নামাজের আয়োজন করেন সর্বস্তরের স্থানীয় মুসল্লিরা। এ সময় বিশেষ এই নামাজ আদায় করতে জড়ো হয় বিভিন্ন এলাকার শতশত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।

নামাজ আদায় শেষে আল্লাহপাকের রহমত কামনা করে তাপদাহ থেকে মুক্তি, ফসল রক্ষা এবং বৃষ্টি বর্ষণের জন্য আল্লাহর দরবারে হাত তুলে মোনাজাত করে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ। মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন এলাকার সর্বস্তরের মুসল্লিগণ।

নামাজে অংশ নেয়া মুসল্লি তরিকুল ইসলাম বলেন, গত দুই সপ্তাহ থেকে তীব্র তাপদাহ বইছে। প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এছাড়াও ধান ও আমের গুটির জন্য মারাত্মক ভয়ঙ্কর এই আবহাওয়া। এই মুহূর্তে বৃষ্টির পানির ভীষণ দরকার। তাই মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট বৃষ্টির পানি চেয়ে ইসতিসকার নামাজ আদায় ও মোনাজাত করেছেন তিনি।

শাহারিয়ার শান্ত বলেন, হাদিসে রয়েছে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, দুইটা সময় জাহান্নাম নিশ্বাস ছাড়ে গ্রীষ্মকাল ও শীতকালে। অতিরিক্ত শীত যখন হয় তখন সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা হয় এবং অতিরিক্ত গরমেও সমস্যার সমাধানে দোয়া করা হয়। অতীতে আরব দেশে যখন এমন প্রখর রোদ আর গরম ছিল তখন হযরত মুহাম্মদ (সা.) গরম থেকে পরিত্রাণ চেয়ে সাহাবাদের নিয়ে এভাবেই আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। বৃষ্টি এবং তাপপ্রবাহ থেকে রেহাই পেতে ইসতিসকারের নামাজ আদায় করা হয়েছে। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ কামনা করা হয়। আল্লাহ চাইলে এ নামাজ কবুল করে রহমতের বৃষ্টি দিয়ে মানুষ, প্রাণিসহ সবািইকে শান্তিতে থাকার পরিবেশ করে দেবেন।

মাওলানা আব্দুল মুকিমের ইমামতিতে ইসতিসকার দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। এরপর দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় এবং সব মুসলমানদের জন্য দোয়া করা হয়।

;

পিরোজপুর বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পিরোজপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বৃষ্টির জন্য অঝোরে কেঁদে কেঁদে আল্লাহর সাহায্য চাইলেন পিরোজপুর তাফহিমুল কোরআন মাদ্রাসার মাঠে নামাজ আদায় করতে আসা শতশত মুসল্লিরা।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল ) সকাল ৮টায় মাদরাসার মাঠে সালাতুল ইসতিসকার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ এ নামাজে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শতশত মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।

নামাজের ইমামতি করান বাইতুস সালাত জামে মসজিদ এর খতিব মাও: আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় মানুষ খুব বিপদে আছে। বৃষ্টি
বা পানির জন্য আল্লাহ সালাতের মাধ্যমে চাইতে বলেছেন। আল্লাহর কাছে চাওয়া সুন্নাত। নামাজের মাধ্যমে কেঁদে কেঁদে আল্লাহর সাহায্য চাইলে আল্লাহ তা বান্দাদের দিয়ে থাকেন। তাই নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য এই আয়োজন।

;

ঠাকুরগাঁওয়ে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ আদায়



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঠাকুরগাঁওয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির প্রার্থনায় সালাতুল ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হয়েছে।

বুধবার (২৫ এপ্রিল) সকালে পৌরশহরের মাদরাসা পাড়া ঈদগাহ মাঠে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়৷

নামাজে ইমামতি ও খুতবা প্রদান করেন সালান্দর ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আবুল কালাম ত্ব-হা। নামাজ শেষে মোনাজাত করেন মাদরাসটির সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা রফিকুল ইসলাম।

শীতপ্রবণ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। তীব্র থেকে তীব্রতর তাপমাত্রার মুখোমুখি হতে হচ্ছে জেলার মানুষকে। তাপপ্রবাহের কারণে দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। মাঠে কাজ করা দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে কৃষকদের। হাসপাতালে বেড়েছে শিশু-বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা৷ এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির আশায় নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।

নামাজ আদায় করতে আসা ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, কাজের জন্য বাইরে বের হওয়া কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে। রোদে দুই মিনিট থাকা যায় না। শরীর ঝলসে যাওয়ার মতন অবস্থা। আমাদের নাভিশ্বাস অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃষ্টির আশায় নামাজ আদায় করলাম। যদি আল্লাহ আমাদের প্রতি রহম করেন তবে স্বস্তি ফিরবে।

সালান্দর ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আবুল কালাম ত্ব-হা বলেন, সারাদেশে দাবদাহে জনজীবনে বিপর্যয় ঘটেছে। আমাদের জেলায়ও অস্বস্তি পর্যায়ে চলে গিয়েছে। আমাদের গুনাহর ফসল এসব। আমরা বৃষ্টির আশায় সালাতুল ইসতিসকা নামাজ আদায় করলাম। আল্লাহ আমাদের প্রতি রহম করবেন।

;

নোয়াখালীতে হিট স্ট্রোকে শিক্ষার্থীর মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হিট স্ট্রোকে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত ঋতু সুলতানা (১৫) উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের সাদারি গ্রামের কবিরাজ বাড়ির মো. ইসমাইলের মেয়ে। সে স্থানীয় ছয়ানী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চলতি বছর এসএসসির ফলপ্রত্যাশী ছিল।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল পৌনে ১০টার দিকে মুঠোফোন বিষয়টি নিশ্চিত করেন- ছয়ানী উচ্চ বিদ্যালয়ে কৃষি শিক্ষক মনির হোসাইন।

এর আগে, বুধবার রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের সাদারি গ্রামের কবিরাজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের বাবা ইসমাইল জানান, বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঋতু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তিনি স্থানীয় একজন গ্রাম্য চিকিৎসককে ডেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে গ্রাম্য চিকিৎসক ধারণা করেন- প্রচণ্ড গরমে হিট স্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে।

শিক্ষক মনির হোসাইন বলেন, ঋতুর এমন মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ছয়ানী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। তার মৃত্যুর সংবাদে তার সহপাঠী, শিক্ষকবৃন্দ তার বাড়িতে ছুটে যান। কোনোভাবেই তার এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না পরিবার।

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখারের মুঠোফোনে কল করা হলেও তার ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি।

;