সরকারি প্রকল্প থেকে বাদ পড়ছেন জি কে শামীম!



রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
জি কে শামীম | ফাইল ছবি

জি কে শামীম | ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে আটক বহুল আলোচিত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের শনির দশা চলছেই। রিমান্ডে থাকা যুবলীগের এই কথিত নেতার সহসা জামিন পাওয়ার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ। অন্যদিকে সরকারি প্রকল্পগুলোর ঠিকাদারি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে তাকে। তার ঠিকাদারি কোম্পানির কাছে থাকা সরকারি প্রকল্পগুলোতে নিয়োগ দেওয়া হবে নতুন ঠিকাদার। আর সেজন্য প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ শেষে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হবে।

সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হবে। শুধু জি কে শামীম নন, চলমান অভিযানে তার মতো বিতর্কিত ঠিকাদারদের সরকারি প্রকল্প থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভাতেও জি কে শামীম প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে। একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।

জি কে শামীমকে গ্রেফতারের সময়কার ছবি

একনেক সভাসূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার স্থাপন প্রকল্পটির ৫ম দফা মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য একনেক সভায় তোলা হলে প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এক পর্যায়ে জি কে শামীমের প্রসঙ্গটি আলোচনায় আসে।

এ সময় জি কে শামীমের হাতে এত এত সরকারি প্রকল্প কিভাবে গেল সেটি নিয়ে সভায় বিস্ময় প্রকাশ করেন সরকারপ্রধান। বৈঠকে উপস্থিত গণপূর্তমন্ত্রীর কাছে জি কে শামীমের কোম্পানির হাতে থাকা প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চান তিনি। একই প্রতিষ্ঠান অনেকগুলো কাজ পেলে কাজের সময়বৃদ্ধি করে দুর্নীতি, অপচয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয় বলে সভায় উপস্থিত একাধিক সদস্য মন্তব্য করেন। এ প্রেক্ষিতে একক কোম্পানি যেন একসঙ্গে দুটোর বেশি সরকারি প্রকল্পের কাজ একসঙ্গে না পায় ভবিষ্যতে সেদিকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান।

বৈঠকে গণপূর্তমন্ত্রীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিতর্কিত কাউকেই সরকারি প্রকল্পে দেখতে চাই না।‘

জি কে শামীমকে ‘প্রভাবশালী’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাকে বাদ দিতে আইনি কিছু জটিলতার কথা পূর্তমন্ত্রী তুলে ধরলে প্রধানমন্ত্রী জবাব দেন, আমি যখন এ চেয়ারে (প্রধানমন্ত্রীর) বসি তখন কাউকে চিনি না। অপরাধীদের কোন ছাড় নেই। আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কিভাবে দ্রুত বিষয়টি সমাধান করা যায় সেটা নিয়ে কাজ করেন। আর এতে করে প্রকল্প বাস্তবায়ন যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকটাও দেখতে হবে।

বৈঠকে জি কে শামীমের ইস্যুতে আলোচনার কথা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে নিশ্চিত করেন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, জি কে শামীমকে বাদ দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বিতর্কিতদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে আছেন। জি কে শামীমকে বাদ দিয়ে পুনঃদরপত্রের মাধ্যমে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিতে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

এদিকে চলমান অভিযানে ২০ সেপ্টেম্বর র‌্যাবের হাতে জি কে শামীম আটক হন। জি কে শামীম ও তার পরিবারের লোকজনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। তার কিছুদিন পরেই জিকে শামীমের হাতে থাকা প্রকল্পগুলোর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কার পাশাপাশি নানা গুঞ্জন তৈরি হয়।

প্রসঙ্গত, রোববার (২০ অক্টোবর) জাতীয় সংসদ ভবনে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।


বৈঠকে সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন জি কে শামীমের প্রকল্পের কাজ স্থগিত কিনা, সেসব প্রকল্পের কাজের কী অবস্থা—জানতে চান গণপূর্তমন্ত্রীর কাছে। জবাবে পূর্তমন্ত্রী জানান, বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা প্রক্রিয়া চলমান। যারা কাজ পেয়েছে তারা তো সব প্রক্রিয়া শেষ করেই কাজ পেয়েছে? জি কে শামীমের কোনো কোনো প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে, আবার কোনো কোনো প্রকল্পের কাজ চলছে।

এর দুই দিন পরেই জি কে শামীমের প্রকল্পের কাজের কী অবস্থা সেটি একনেক বৈঠকেও উঠে এলো। জানতে চাইলে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ নুরুল আমিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দ্রুততার সঙ্গে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন।‘

এদিকে জি কে শামীমের প্রকল্পগুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপের কথা জানতে চাইলে গণপূর্তমন্ত্রী পরে ফোন করার কথা বলে ফোন কেটে দেন। এরপর একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি আর কল রিসিভ করেননি।

৫৩ প্রকল্প জি কে শামীমের হাতে:
গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫৩টি প্রকল্পের নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে জি কে শামীমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড। এসব প্রকল্পের চুক্তিমূল্য ৪ হাজার ৫৫০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

৫৩টি প্রকল্পের ২৪টির অনুমোদন দিয়েছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আটটি প্রকল্প, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী তিনটি, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন। বাকি ১৭টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে সরকারের ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

৫৩ প্রকল্পের মধ্যে শামীমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জি কে বিল্ডার্স এককভাবে ১৩টি প্রকল্প ও বাকি ৪০টি প্রকল্পের কাজ যৌথভাবে চলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিকে বিল্ডার্সের ১৩টি প্রকল্পের কোনোটিই পুরোপুরি শেষ হয়নি। কোনো প্রকল্পের কাজ হয়েছে ৯৯ শতাংশ। আবার কোনো প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি শূন্য শতাংশ। যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে এমন প্রকল্পগুলোর মধ্যে শুধু উত্তরা নিম্ন ও নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের ১০০ শতাংশ ভৌত অগ্রগতি হয়েছে।

এককভাবে কাজ পাওয়া ১৩ প্রকল্পের অন্যতম ১০টি প্রকল্প:

=> সচিবালয়ের নির্মাণাধীন নতুন ২০ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলা থেকে ২০ তলা পর্যন্ত পূর্ত এবং অভ্যন্তরীণ স্যানিটারি ও বৈদ্যুতিক কাজের ভৌত ৮০ শতাংশ এবং ৫২ শতাংশ আর্থিক আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে।

=> আগারগাঁওয়ে জাতীয় অর্থপোডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান, নিটোরের এলইডি বাতি স্থাপন ও বৈদ্যুতিক কাজের ১০০ শতাংশ ভৌত এবং ৯৯ শতাংশ আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে।

=> শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সম্প্রসারণ প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৩২ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৩১ শতাংশ।

=> ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা নির্মাণকাজের ভৌত অগ্রগতি ৯০ শতাংশ, আর্থিক অগ্রগতি ৮৮ শতাংশ।

=> রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের চারটি অংশের গড় ভৌত অগ্রগতি ৭১ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৫১ দশমিক ১৭ শতাংশ।

=> ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় নির্মাণকাজের ভৌত ৯৫ শতাংশ, আর্থিক ৯২ তাংশ।

=> গাজীপুরে পাঁচটি র‌্যাব কমপ্লেক্স এবং একটি র‌্যাব ট্রেনিং স্কুল নির্মাণ প্রকল্পের ভৌত ৯৯ শতাংশ, আর্থিক ৯৪ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে।

=> মহাখালীতে জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের আধুনিকায়ন প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ, আর্থিক ৬৭ শতাংশ।

=> আজিমপুরে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতি শূন্য শতাংশ।

=> সচিবালয়ে নতুন ২০ তলা ভবনের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৩ শতাংশ, আর্থিক অগ্রগতি শূন্য দশমিক ০৪ শতাংশ।

   

উপজেলা নির্বাচন

কোম্পানীগঞ্জে ওবায়দুল কাদেরের ভাইয়ের মনোনয়ন বাতিল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই মো. শাহাদাত হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

রোববার (৫ মে) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে যাচাই-বাছাই শেষে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেন মনোনয়নপত্র হলফনামায় চারটি মামলার তথ্য গোপন করায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মনোনয়নপত্র বাতিলকৃত প্রার্থীরা আগামী ৬ মে থেকে ৮ মে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিলের সুযোগ রয়েছে। আগামী ২৯ মে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর সদর উপজেলা, বেগমগঞ্জ উপজেলা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

;

নওগাঁয় বিএনপির আরও ২ নেতাকে শোকজ, এক নেত্রীকে বহিষ্কার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বিতীয় ধাপে নওগাঁর পোরশা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ঘোড়া মার্কার প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশগ্রহণ করায় বিএনপির দুই নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।

রোববার (৫ মে) নওগাঁ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ দলীয় প্যাডে স্বাক্ষরিত পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

নোটিশপ্রাপ্তরা হলেন, মুরশিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি শওকত আলী ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম।

এছাড়া একই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশগ্রহণ করায় মমতাজ বেগমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মমতাজ বেগম পোরশা উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও নওগাঁ জেলা মহিলা দলের সহ-সভাপতি।

এর আগে, গত শনিবার (৪ মে) বিএনপির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মমতাজ বেগমকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কার আদেশে বলা হয়, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন পোরশা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে মমতাজ বেগমকে বহিষ্কার করা হলো।

;

মিল্টন সমাদ্দারের কর্মকাণ্ডের দায় তার স্ত্রী এড়াতে পারেন না: ডিবি প্রধান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কথিত ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের গ্রেফতার মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রী মিঠু হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, মিল্টন সমাদ্দারের কর্মকাণ্ডের দায় তার স্ত্রী এড়াতে পারেন না।

রোববার দুপুর সোয়া ১টার দিকে মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন ডিবি প্রধান।

তিনি বলেন, আমি মনে করি, দিনের পর দিন রাতের পর রাত যেভাবে কোটি কোটি সংগ্রহ করেছেন মিল্টন, অন্যদিকে সেবা দেননি তিনি। মিল্টনের স্ত্রী একজন নার্স। তিনি নিয়মিত মিল্টনের কেয়ার সেন্টারে যেতেন। সেখানে অনিয়ম জেনেও তিনি প্রশাসনকে জানাননি। সেক্ষত্রে আমি মনে করি, এসমস্ত দায় তিনিও এড়াতে পারেন না।

তবে মিল্টন সমাদ্দারের এ সংশ্লিষ্ট লেনদেন ও ব্যাংক একাউন্টে স্ত্রীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলেও জানান ডিবি প্রধান। এদিকে, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রী মিঠু হালদার বলেন, আমি আইনের ওপর শ্রদ্ধাশীল। আইন যেটা চাইবে, সেটাই হবে।

এর আগে শনিবার (৪ মে) দুপুরে মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে ডিএমপি'র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, মিল্টন সমাদ্দার রিমান্ডে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ, সেসব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার আশ্রমের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে মিল্টনের স্ত্রীকে রোববার দুপুরে ডিবিতে ডাকা হয়েছে। তার স্ত্রীকেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো।

তিনি বলেন, নিজের বাবাকে পিটিয়ে গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় এসে মিল্টন সমাদ্দার ‘সাইকো’তে (মানসিক রোগী পরিণত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এসেছে, সেসব বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে। তার উত্থান কীভাবে হলো, তথাকথিত ‘মানবতার ফেরওয়ালা’ কীভাবে হলেন, তার অর্থের উৎস, কীভাবে আসে, কীভাবে তিনি দরিদ্র মানুষকে সংগ্রহ করতেন এবং কেনই-বা তাদের টর্চার সেলে এনে পেটাতেন, সবকিছু বিষয় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

ডিবিপ্রধান আরো বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে মিল্টন কীভাবে অর্থ উপার্জন করতেন এবং কারা তাকে সহয়তা করতেন, তাদেরকেও শনাক্ত করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

মিল্টন সমাদ্দারের তিন-চারটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান মিলেছে। সেসব অ্যাকাউন্টে কারা টাকা পাঠাতেন, তদন্ত করে জানানো হবে বলেও জানান হারুন অর রশীদ।

১ মে রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে আটক করে গোয়েন্দা-মিরপুর বিভাগ। পরে রাতে তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় বিভিন্ন অভিযোগে তিনটি মামলা হয়। সেসব মামলায় আদালতে সোপর্দ করলে মিল্টনকে তিনদিনের রিমান্ড দেন আদালত।

 

;

ময়মনসিংহ বিভাগ কোরবানির জন্য প্রস্তুত পাঁচ লক্ষাধিক পশু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
গরুর খামার

গরুর খামার

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদুল আজহা উপলক্ষে ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় গরু পালনকারী ও খামারিদের প্রস্তুতি শেষ।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্যমতে, এ বিভাগে কোরবানির জন্য পশু রয়েছে প্রায় ৫ লাখ ৬১ হাজার ৭৮০টি। চাহিদার চেয়েও প্রায় ১ লাখ ৬৭ হাজার ৬৮৪টি বেশি। ঈদকে সামনে রেখে এখন ব্যস্ত সময় খামার মালিক-কর্মচারীর পাশাপাশি ঘর গৃহস্থালি গবাদিপশু পালনকারীরা।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতর জানায়, এ বছর ময়মনসিংহ জেলায় কোরবানির জন্য ২ লাখ ৪৯ হাজার ৯২৬টি গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার ৫৯৮টি।

নেত্রকোনা জেলায় কোরবানির জন্য পশু রয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার ৮৮২টি। চাহিদা ১ লাখ ৪ হাজার ৩৮৮টি। ঈদুল আজহা উপলক্ষে জামালপুর জেলায় গবাদি পশুর সংখ্যা রয়েছে ৯৫ হাজার ১৭০টি। চাহিদা ৫১ হাজার ৫৩১টি। শেরপুর জেলায় কোরবানির জন্য পশু রয়েছে ৮৩ হাজার ৮০২টি। চাহিদা আছে ৫৭ হাজার ৫৭৯টি।

প্রাণিসস্পদ অধিদফতরের ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিচালক ডা. মনোরঞ্জন ধর বলেন, ময়মনসিংহসহ বিভাগের চার জেলায় খামারি ও কৃষক পর্যায়ে কোরবানির জন্য ৫ লাখ ৬১ হাজার ৭৮০টি গবাদিপশু প্রস্তুত করা হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় ১ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি।

এবারও ক্রেতাদের চাহিদা ও সুবিধার কথা চিন্তা করে পশুর হাটের পাশাপাশি অনলাইনে গবাদিপশু কেনাবেচা করা হবে বলে জানান তিনি। এছাড়া হাটগুলোতে থাকবে প্রাণিসম্পদের ভেটেনারি মেডিকেল টিম। তাই আশা করা যায়, খামারিরা ন্যায্য মূল্য পাবেন।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে তাপপ্রবাহের কারণে গবাদিপশু যাতে অসুস্থ না হয় সেজন্য আমাদের টিম সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে। তাপপ্রবাহ মোকাবিলা করার জন্য মাঠ পর্যায়ের খামারিদের মাঝে ব্যানার, ফেস্টুন বিলি করা হচ্ছে। যাতে করে এই গরমে পশুদের সুস্থ রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।

পশুপালন খাতসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পশুখাদ্যের কিছু উপকরণের দাম বেড়ে এখন দ্বিগুণের বেশি। এছাড়া ওষুধ, বিদ্যুৎ, কর্মচারীদের বেতনসহ সার্বিক উৎপাদন ব্যয় বাড়াতে বেড়েছে পশুপালন খরচ। তাই এবার গত বছরের তুলনায় কোরবানির পশুর দাম একটু বাড়তে পারে।

;