তথ্য অধিকার সুশাসনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বক্তৃতা দিচ্ছেন ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বক্তৃতা দিচ্ছেন ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া

  • Font increase
  • Font Decrease

রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হচ্ছে জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে সুশাসন রক্ষা করা। বিশ্বব্যাপী তথ্য অধিকার সুশাসনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, কারণ এগুলো সরকারের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে। শুধু তাই নয় এর মাধ্যমে নাগরিকরা ক্ষমতায়িত হয়, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং দুর্নীতি কমে বলে মন্তব্য করেছেন ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত তথ্য অধিকার কনভেনশন ২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

ডেপুটি স্পিকার বলেন, তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ নিঃসন্দেহে একটি উত্তম আইন। জনগণের ক্ষমতায়নে মাইলফলক। আইনটির অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো, দেশের প্রচলিত অন্য সব আইনে কর্তৃপক্ষ জনগণের ওপর ক্ষমতা প্রয়োগ করে থাকে; কিন্তু এ আইনে জনগণ কর্তৃপক্ষের ওপর ক্ষমতা আরোপ করে। এটি একটি শক্তিশালী নাগরিক বান্ধব আইন। প্রকৃতই জনগণের আইন। সর্বজনীন আইন। শ্রেণিগত ভেদাভেদ-নির্বিশেষে সর্বস্তরের নাগরিককে রাষ্ট্রের তথ্য পাওয়ার অধিকার দেয়। তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশনে পাশ হয়েছিল । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আইনটিকে ‘নবযুগের সূচনাকারী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন ।

তিনি বলেন, আমি মনে করি দেশে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং সেবা গ্রহণ ও সেবা প্রাপ্তি বাড়াতে হলে এই আইনের কোন বিকল্প নেই । তাই সব পক্ষ থেকেই জোড়ালো ভাবে এই আইন প্রয়োগে উদ্যোগ নিতে হবে । বিশেষ করে জনগণকে আরও অনেক সচেতন হতে হবে নিজেদের অধিকার আদায়ে । তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণে সরকারি প্রচেষ্টা বা উদ্যোগ প্রশংসনীয়।

তিনি আরও বলেন, অবাধ তথ্য প্রবাহের জন্য প্রয়োজন ইন্টারনেটের ব্যাপক বিস্তৃতি ও সহজলভ্যতা। এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নকল্পে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্প সারা দেশে প্রায় ৪৫০০+ ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার গড়ে তুলেছে। জনগণ সচেতন হয়ে যখন তথ্য জানতে চাইবে তখন এই আইন আরও সফল হবে।

এসময়, শুধু ঢাকা শহরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে সভা সেমিনার না করে জনসাধারণকে তথ্য অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সভা সেমিনার করার জন্য সংগঠনগুলোকে আহ্বান জানান ডেপুটি স্পিকার।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহিন আনম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন ডিএফআইডি এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ জুডিথ হারবার্টসন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মারসি মিয়াং টেমবন, প্রধান তথ্য কমিশনার মর্তুজা আহমেদ প্রমুখ।

   

ময়লায় ছেয়ে গেছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত



কেএম শাহাবুদ্দিন শিহাব, বার্তা২৪.কম, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পটুয়াখালীর সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা সৈকত যেন ময়লার ভাগাড়। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলার কারণে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। এতে সৈকতের সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে। সৈকতের এমন অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ঘুরতে আসা পর্যটকরা। 

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সমুদ্র সৈকতে পড়ে আছে ছেঁড়া জিওব্যাগ, বোতল, পলিথিন ডাবের খোসা, প্লাস্টিকের বোতল, চিপসের প্যাকেট, সিগারেটের প্যাকেট ও খাবারের পচা অবশিষ্টাংশ সহ অসংখ্য আবর্জনা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঈদের পর থেকে পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম সঠিকভাবে চলমান না থাকা এবং পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকির অভাবে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের এক কিলোমিটার এলাকা এখন পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। আর সৈকতের এসব ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে একটু প্রশান্তি পেতে ছুটে আসা পর্যটকরা ফিরছেন তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে। সৈকতের সৌন্দর্য ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি পর্যটন ব্যবসায়ীসহ ঘুরতে আসা পর্যটকদের।


সাতক্ষীরা তালা উপজেলা থেকে ঘুরতে আসা দম্পতি ইউসুফ ও রুবিনা বার্তা২৪.কম-কে জানান , সৈকতের পশ্চিম এবং পূর্ব দিকে যতদূর চোখ যায় শুধু ময়লা-আবর্জনা। অনেক স্থানে খাবারের পচা অবশিষ্টাংশ পড়ে আছে। এসব খাবার থেকে দুর্গন্ধ ভেসে আসছে। আজকে ২ দিন কুয়াকাটায়, কিন্তু কোনো পরিচ্ছন্ন কর্মী চোখে পড়ে নাই।

কুয়াকাটা সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি উল্লেখ করে এ দম্পতি আরও জানান, কুয়াকাটাতে এইবার ঘুরতে এসে খুবই হতাশ হলাম, এত ময়লা যা কুয়াকাটার সুনামকে ব্যহত করছে, দ্রুত সৈকতের সৌন্দর্যকে ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।


ঢাকার উত্তরা থেকে আসা জাকারিয়া জানান, সৈকতের চারদিকে নোংরা আবর্জনা। বিশেষ করে পূর্বপাশের বেঞ্চির পিছনে ডাস্টবিনগুলো অবস্থা একেবারে খাবার। চারপাশ ময়লায় সয়লাব। দুর্গন্ধে বেঞ্চে বসা দায় হয়ে পড়েছে। এর আগে এতো অপরিচ্ছন্ন ছিল না। কুয়াকাটা সৈকতটুকু সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দাবি জানাচ্ছি।

কুয়াকাটা ফিস ফ্রাই মার্কেটের সভাপতি মোহাম্মদ মিজান জানান, ঈদের পর থেকে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা পরিচ্ছন্নতার কাজ বন্ধ রেখেছে। যার কারণে উপায় না পেয়ে আমরা একটি ভ্যান ঠিক করে এখানের ময়লা দুরে ফেলতেছি। বিষয়টি আমরা মেয়রকে অবহিত করেছি।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম জানান, আমরা অচিরেই বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির পক্ষ থেকে কিছু পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ দেব। বর্তমানে কুয়াকাটা পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীরা বীচের পরিচ্ছন্নতার কাজ করছে। বিষয়টি মেয়রকে অবহিত করা হবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচ পরিচ্ছন্ন করা হবে।

;

মোহাম্মদপুরে পানি-স্যালাইন হাতে পুলিশ, স্বস্তি পেল পথচারীরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
মোহাম্মদপুরে পানি-স্যালাইন হাতে পুলিশ, স্বস্তি পেল পথচারীরা

মোহাম্মদপুরে পানি-স্যালাইন হাতে পুলিশ, স্বস্তি পেল পথচারীরা

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশে তীব্র দাবদাহ চলছে। স্বস্তি ফেরাতে পরিবহনের চালক, যাত্রী ও পথচারীদের মাঝে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ । 

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ তিন রাস্তার মোড়, বাস স্ট্যান্ড, শিয়া মসজিদ ও টাউন হল এলাকায় তৃষ্ণার্ত পথচারী ও দিনমজুর মানুষের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতরণ করা হয়।

মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের এ আয়োজনে প্রায় ৫ হাজার মানুষের মধ্যে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ করা হয়।

পুলিশের এমন উদ্যোগে অনেকেই প্রশংসা করছেন। পথচারীরা বলছেন, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে রাস্তায় চলাচলে মানুষ খাবার পানি ও স্যালাইন পেয়ে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন।


পুলিশের মানবিক উদ্যোগে সবাই খুশি। প্রতিটি দুর্যোগে পুলিশ জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার পরিচয় দেয়। এছাড়াও, মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার মোড়, বাস স্ট্যান্ড, টাউন হল ও শিয়া মসজিদ এলাকায় বাস, রিকশা, সিএনজি ও লেগুনা থামিয়ে পুলিশকে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করতে দেখা যায়।

মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুল হক ভূঞা জানান, তীব্র দাবদাহের কারণে অনেকে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের সেই দিক খেয়াল করেই আমাদের ডিএমপি কমিশনার স্যারের নির্দেশে এই উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা চাই পথচারীরা যেন তীব্র এই রোদের মধ্যে কোনো রকম কষ্ট না হয়। সেজন্য আমরা ক্ষুদ্র এই উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা চেষ্টা করে যাবো সব সময় জনগণের পাশে দাঁড়াতে।

এছাড়াও, খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণের সময় মোহাম্মদপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুল হক ভূঞা, ইনচার্জ (তদন্ত) তোফাজ্জল হোসেন,ইনচার্জ (অপারেশন) সবুজ রহমান ও অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

;

১৬৫ খুঁটির ওপর তৈরি ‘বলী-যুদ্ধের’ মঞ্চ!



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ছয় ফুট লম্বার বড় বড় বাঁশের খুঁটি। এক ফুট মাটিতে ডুবে, বাকি পাঁচ ফুটের নজর আকাশের দিকে। সংখ্যায় ‘ওরা’ ১৬৫টি। সেসবের আগায় কাঠের তক্তা লাগিয়ে বানানো হয়েছে মঞ্চ। তার ওপরে দেওয়া হয়েছে বালির আস্তরণ। ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলার শাহজালাল বলী-জীবন বলীদের জন্য লালদীঘি মাঠে এভাবেই তৈরি হচ্ছে রিং। এই বলীখেলার ১১৫তম আসর বসছে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল)।

বলীখেলাকে সামনে রেখে সোমবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে ২০ বাই ২০ ফুটের এই মঞ্চ তৈরির কাজ। আয়োজকদের আশা বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাতের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে রিং। বুধবার বিকেলে লালদীঘি মাঠের দক্ষিণ পাশে গড়ে তোলা মঞ্চের চারপাশে ঢু মেরে দেখা যায়, ১০ জন শ্রমিক মঞ্চ তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কাঠফাটা রোদ উপেক্ষা করে কেউ বাঁশের সঙ্গে তক্তা জোড়া লাগাচ্ছিলেন। কেউবা করছিলেন মঞ্চের ওপর বালি দেওয়ার কাজ। কেউ কেউ রঙ বেরঙের কাপড় ও পতাকা সাঁটাচ্ছিলেন মঞ্চের চারপাশে। আয়োজক কমিটির সদস্যরা শ্রমিকদের নানা দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছিলেন।

তাজুল ইসলাম ও মোহাম্মদ মমিন নামের দুজন শ্রমিক বাঁশের সঙ্গে তক্তার জোড়া লাগাচ্ছিলেন পেরেক দিয়ে। জানতে চাইলে তারা বার্তা২৪.কমকে বলেন, তিনদিন ধরে কাজ করতেছি। মঞ্চ করতে ১৬৫টি বাঁশ মাটি খুঁড়ে বসাতে হয়েছে। এর সঙ্গে আরও কিছু বাঁশ দিতে হয়েছে চারপাশে দড়ি দিতে।

বলীখেলাকে ঘিরে বসেছে সারি সারি দোকান

নিচে জমানো বালি ফেরি করে নিয়ে মঞ্চের ওপর ফেলছিলেন দুই শ্রমিক। তারা বলেন, বুধবার দুপুর থেকে মঞ্চের ওপর বালি ফেলার কাজ শুরু করেছি। দুপুরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার কাজ শুরু করি। সন্ধ্যার মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।’ মঞ্চের ওপর দুই ট্রাকে করে আনা ৩০০ ঘনফুট বালি ফেলা হয়েছে বলে জানান শ্রমিকেরা।

বৃহস্পতিবার এই মঞ্চের ওপরেই লড়বেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শতাধিক বলী। তার আগেই অবশ্য বলীখেলাকে কেন্দ্র করে লালদীঘি মাঠের চারপাশের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসেছে বৈশাখী মেলা। মেলায় মাটির হাঁড়ি-পাতিল, মৃৎশিল্প, খেলনা, গৃহসজ্জার জিনিসপত্র, খাবার, দা-খুন্তি, শীতলপাটি, ঝাড়ু, হাতপাখা, আসবাব, গাছের চারা—সবকিছুই পাওয়া যাচ্ছে হাতের কাছে।

আব্দুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও বৈশাখী মেলা কমিটির সভাপতি ও আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এখন আর জব্বারের বলীখেলা ও মেলা শুধু চট্টগ্রামের ঐতিহ্য নয়, এটি সারাদেশের প্রাণের মেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে। লালদীঘির মাঠে আগামীকাল বৃহস্পতিবার মেলার মূল আকর্ষণ বলীখেলা অনুষ্ঠিত হলেও বলীখেলা ঘিরে বৈশাখী মেলা শুরু হয়ে গেছে। তিন দিনের এই খেলা ও মেলা এখন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটা আয়োজন। সেজন্য আমরা পুরো আয়োজন সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে কোনো কিছুই বাকি রাখছি না।’

লালদীঘি মাঠে বৈশাখী মেলা বসছে

এই বলীখেলা সারাদেশের কিশোর-তরুণদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চায় আয়োজক কমিটি। সেটিই বলছিলেন জহর লাল হাজারী। বলেন, ‘মাদক ও কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। আমাদের এবারের প্রতিপাদ্য তাই নবীনদের কিশোর গ্যাং ও মাদক মুক্ত করে দেশীয় খেলার প্রতি আসক্ত করা। সেজন্য বলীখেলা শেষে দূর দূরান্ত থেকে অংশ নিতে আসা বলীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথাও ভাবছি আমরা।’

যুবসমাজকে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করতে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশিরহাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর চালু করেছিলেন বলীখেলা। সময়ের ব্যবধানে লালদীঘির মাঠে বসা ‘জব্বারের বলীখেলা’ হয়ে উঠেছে এই জনপদের অন্যতম আকর্ষণ। শুধু কি তাই? বলীখেলাকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় বৈশাখী মেলাটিও বসে এখানে। ১৯০৯ সাল থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একবছর বাদ দিলে প্রতিবছর এই মেলা হয়ে আসলেও করোনার থাবা এই আনন্দ-উৎসব থামিয়ে দিয়েছিল ২০২০ সালে। পরের বছরেও এই মেলা হয়নি একই কারণে। ২০২২ সালেও ঐতিহাসিক এই আয়োজনের ভবিষ্যৎ ঝুলেছিল সুতার ওপর। শেষ পর্যন্ত সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর প্রচেষ্টায় সড়কের মাঝখানে অস্থায়ীভাবে রিং তৈরি করে আয়োজন করা হয় বলীখেলার। গত বছর থেকে বলীখেলা ফিরেছে নিজের পুরনো ঠিকানা-লালদিঘী ময়দানে। এবারও সেখানেই হচ্ছে শতবর্ষী এই আসর।

এই বলীখেলায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শতাধিক বলী চট্টগ্রামে ছুটে আসেন। বলীখেলায় গত আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন কুমিল্লার শাহজালাল বলী। তিনি হারান আগের বছরের চ্যাম্পিয়ন চকরিয়ার জীবন বলীকে। কয়েক বছর ধরে এই দুই বলীর মধ্যেই হচ্ছে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীতা। এবারও কি এই দুই শীর্ষ বলীর মধ্যে হবে শিরোপা জয়ের লড়াই, নাকি নতুন কেউ এসে কেড়ে নেবে স্বপ্নের শিরোপা! সেটির জন্য অবশ্য অপেক্ষা করতে হবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত!

;

ওএমএসের চাল বিতরণে অনিয়ম, জব্দ করলো ইউএনও



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বাগেরহাট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারের খোলাবাজারে বিক্রির (ওএমএস) চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ডিলার রাজিবের বিরুদ্ধে। তিনি বরাদ্দের সিংহভাগ চাল কালো বাজারে বিক্রি করছেন। এতে সুবিধাবঞ্চিত হয়েছেন এলাকার কয়েকশ লোক।

এ অভিযোগ বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ডিলার রাজিব মৃধার বিরুদ্ধে। তিনি পরিচিত মুখ দেখে দেখে নির্ধারিত ৩০ কেজি চালের পরিমাণের চেয়ে কম দিয়েছেন। বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে সুন্দরবন ইউনিয়নের বাজিকরখন্ড গ্রামে এই চাল বিতরণে অনিয়ম করেন তিনি। রাজিব মৃধা মোংলা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতার আপন ভাগনে বলে জানা গেছে।

এদিকে ওএমএস চাল বিতরণে অনিয়মের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। জব্দ করেন ওজনে কম দেওয়া ১৫/২০ বস্তা সরকারি চাল। তবে এরমধ্যেই ডিলার রাজিব মৃধা গাঁ ঢাকা দেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, এখানে সরকারের খোলাবাজারে ওএমএস চাল বিতরণে ওজনে কম দেওয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। ৩০ কেজি চাল দেওয়ার কথা থাকলেও ২৬/২৭ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। আর মানুষের কাছে যে চটের বস্তায় চাল দেওয়ার কথা সেটাও ডিলার দেয়নি। অন্য প্লাস্টিক বস্তায় এই চাল দিয়েছেন। চাল বিতরণে প্রতারণা, অনিয়ম এবং সরকারি চাল আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ায় ডিলারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এছাড়া সরকারি চাল বিতরণের সময় সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহিনুর রহমান উপস্থিত না থাকায় তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান ইউএনও নিশাত তামান্না।

এদিন সুন্দরবন ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রেজাউল করিম বলেন, কয়েক বছর ধরেই ডিলার রাজিব মৃধা এই অনিয়ম করে আসছেন। তাকে নিষেধ করা হলেও কারও কথা শোনেনা। বুধবার (২৪ এপ্রিল) অনিয়ম করে ১২ জন অসহায় গরিবদের ৩০ কেজি চালে ওজনে ২-৩ কেজি কম দিয়েছেন। এই চাল আবার গোপনে অন্যত্র বিক্রি করেন ডিলার রাজিব মৃধা।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসী আব্দুল হাকিম মৃধা ও মো. মোস্তফা হাওলাদার বলেন, ডিলার রাজিব মৃধা ৩০ কেজি সরকারি বস্তার পরিবর্তে অন্য প্লাস্টিক বস্তায় ২৬/২৭ কেজি করে চাল দিয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত সরে পড়া ডিলার রাজিব মৃধার কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ওজনে অত কম দেওয়া হয়নি, ১০০ গ্রাম কম হতে পারে।

;