নতুন আইন কার্যকর হওয়ায় উচ্ছ্বসিত ট্রাফিক সার্জেন্টরা

  • মনি আচার্য্য, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়েছে নতুন সড়ক পরিবহন আইন | ছবি: সুমন শেখ

শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়েছে নতুন সড়ক পরিবহন আইন | ছবি: সুমন শেখ

বিশাল জরিমানা ও বড় দণ্ডের বিধান সংবলিত নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর হয়েছে। গত এক বছর ধরে নানা পর্যালোচনা শেষে বহুলকাঙ্ক্ষিত ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮‘ বাস্তবায়ন হচ্ছে শুক্রবার থেকে।

যদিও আইনটি আরও আগেই বাস্তবায়নের কথা ছিল। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বাধার মুখে এত সময় লেগেছে বাস্তবায়নে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (০১ নভেম্বর) সকাল থেকে নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে অভাবনীয় ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে বলে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানিয়েছেন রাজধানীর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্টরা।

তারা বলছেন, নতুন আইন কার্যকর হওয়ার ৪-৫ দিন আগে থেকেই সাধারণ মানুষ আইনটি সম্পর্কে জানতে তাদের কাছে নানা প্রশ্ন করেছেন। নতুন আইন ভঙ্গ করলে শাস্তির বিধান অনেক বেশি হওয়ায় আইন মানার ক্ষেত্রে মানুষজন অনেক সতর্ক।


শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে রাজধানীর বিজয় সরণি মোড়, ফার্মগেট, খামার বাড়ি মোড় ও পান্থপথ মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্টের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

বিজ্ঞাপন

সরজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় রাজধানীর সড়কগুলোতে অন্য যেকোনো দিনের তুলনায় যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ অনেকটাই কম। তবে যাত্রী ও গাড়ির চাপ কম হলেও বেশ তৎপর রয়েছেন ট্রাফিক সার্জেন্টরা। জায়গায় জায়গায় ট্রাফিক সার্জেন্টরা বাস, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল চালকদের লাইসেন্স চেক করছেন।

এছাড়া নতুন আইনে যেসব বিধিবিধি-নিষেধ দেওয়া আছে সেসব চালকরা মানছেন কিনা সেটিও দেখছেন দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশরা।

এ বিষয়ে রাজধানীর বিজয় সরণিতে কর্মরত ট্রাফিক সার্জেন্ট অথেলো রানা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, নতুন আইন কার্যকর হওয়ার ২-৩ দিন আগে থেকেই অনেক মানুষজন সচেতন হয়েছেন আইন সম্পর্কে। নতুন আইনে শাস্তির বিধান বেশি থাকায় কেউ লাইসেন্স বা হেলমেট ছাড়া রাস্তায় বের হচ্ছেন না। সকাল থেকে যতগুলা গাড়ি চেক করেছি কোথাও কোনো অনিয়ম পাইনি। মনে হচ্ছে নতুন আইনে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।


রাজধানীর খামারবাড়ি মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট শফিক আহমেদ বলেন, নতুন আইন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের অনেক ভালো ধারণা রয়েছে। গতকালকের ডিউটি আর আজকের ডিউটির মধ্যে অনেক পার্থক্য দেখছি। কালকে যেখানে অনেককে দেখেছি হেলমেট ছাড়া বাইক চালিয়ে চলে যেতে আজকে আর তেমনটি দেখা যাচ্ছে না। মানুষজন সর্বাত্মক চেষ্টা করছে নতুন আইন মেনে চলার। আমার মনে হয় এই রকমভাবে চলতে থাকলে ঢাকা শহরের ট্রাফিক সিস্টেমে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে।

এদিকে মোটরসাইকেল, বাস ও সিএনজি চালকদের সঙ্গে সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন আইনের বিষয়ে তারা অনেক সতর্ক। নতুন আইনে নিয়ম ভঙ্গ করলে দীর্ঘদিন জেলে থাকাসহ মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হবে। তাই কেউ আর আইন ভাঙতে চাচ্ছেন না। আইন মেনেই গাড়ি চালাতে চান তারা।

উত্তর বাড্ডা মোড়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষারত অটোরিকশা চালক মো. আবুল শেখ বলেন, নতুন আইন কার্যকর হবে দেখে একমাস আগেই লাইসেন্স করেছি। এখন লাইসেন্স ছাড়া আর গাড়ি চালানো যাবে না। লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে ছয় মাসের জেল আর ২৫ হাজার টাকা জরিমানা। তাই আইন মেনে গাড়ি না চালালে বিপদ!

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় অবস্থানরত পাঠাও চালক মোহাম্মদ জামিল বলেন, আগে তো মাঝেমধ্যে যাত্রীকে হেলমেট না দিয়েই অনেকে রাইড শেয়ার করতেন। কিন্তু এখন আর সেই সুযোগ নেই। যে মোটা অঙ্কের জরিমানা নতুন আইনে করা হয়েছে সেটা আর কেউই দিতে চাইবে না। তাই এখন সবাই হেলমেট পরে এবং যাত্রীদের পরিয়ে রাইড শেয়ার করছেন।