ধানের বাম্পার ফলনের পরেও চালের বাড়তি দাম



ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে পেঁয়াজের পর এবার বাড়তে শুরু করেছে চালের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫/৬ টাকা। ধানের বাম্পার ফলনের পরও কেন এমন বাড়তি দাম তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে সিন্ডিকেট করে বাড়ানো হয়েছে চালের দাম।

খাদ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকার নির্ধারিত ২৬ টাকা কেজি দরে মণ প্রতি ধানের দাম আসে ১ হাজার ৪০ টাকা। সেই হিসাব অনুযায়ী প্রক্রিয়াজাত করে বাজারে চালের দাম থাকার কথা ৩৯ টাকা। আর খুচরা ব্যবসায়ীর মুনাফাসহ খুচরা বাজারে চালের সর্বোচ্চ দাম হওয়ার কথা ৪২ টাকা। কিন্তু সেটি মানছেন না চাল ব্যবসায়ীরা। ধানের মৌসুমে যেহেতু এবার মণ প্রতি ১ হাজার ৪০ টাকা দরে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা হয়নি তাই চালের দাম বাড়ার যৌক্তিকতাও দেখছে না মন্ত্রণালয়।

এদিকে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের পর এবার আমনেরও বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে সারাদেশে আমন ধান সংগ্রহ শুরু হয়েছে। এবার কেজি প্রতি ২৬ টাকা দরে ৬ লাখ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমন ধান সংগ্রহ করা হবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে চাল-গম মিলে ১৪ লাখ ৫৯ হাজার টন মজুদ আছে, যা অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। চাল রয়েছে ১১লাখ ১২ হাজার ৬৭৪ টন। গতবছর দেশে মোট৩ কোটি ৪৪ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হয়েছে। যেখানে বাৎসরিক চাহিদা ২ কোটি ৮৪ লাখ ১৬ হাজার ৭১০ মেট্রিক টন। সেই হিসাবে এখন পর্যাপ্ত চালের মজুদ আছে।

কিন্তু তারপরও কেন বাড়ছে চালের দাম। এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সব মহলে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পাইকারি বাজারে চালের দাম বাড়েনি। খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে। ফলে এর প্রভাব পড়েছে গোটা চালের বাজারে। তবে চালের দাম বাড়ার জন্য খুচরা ব্যবসায়ীরা মিল মালিকদের দায়ী করছেন।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের মধ্যে রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ৬ টাকা। মিনিকেট চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৭ থেকে ৫০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা। নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৭ থেকে ৫০ টাকা কেজি।

চিকন চালের মতো মোটা চালের দামও বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগে ৩৪ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া আটাশ চালের দাম বেড়ে হয়েছে ৩৭ থেকে ৩৮ টাকা। স্বর্ণা চালের দাম ছিল ৩০ থেকে ৩২ টাকা। তা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা দরে।

খুচরার পাশাপাশি দাম বেড়েছে পাইকারিতেও। পাইকারিতে প্রতি বস্তা (৫০ কেজির বস্তা) মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ২২৫০ থেকে ২৩০০ টাকায়। আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫০ থেকে ১৮০০ টাকা, নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ২৩৫০ থেকে ২৭০০ টাকায়।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি না করার বিষয়ে ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বুধবার এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে কঠোর বার্তাও দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। তবে অনেকেই সেটি মানছেন না। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য তার প্রভাবই পড়েছে চালের বাজারে। পাইকারিও খুচরা ব্যবসায়ীরা মিলেই এ সমস্যা সৃষ্টি করেছেন।

চালের বাজার মনিটরিং করতে খাদ্য মন্ত্রণালয় কন্ট্রোল রুম খুলেছে। আর অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে কোনো ব্যবসায়ী চালের বাড়তি দাম নিলে বাজার মনিটরিং করে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। প্রয়োজনে খাদ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।

এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, গতবারের চেয়ে এবার যেহেতু ধানের দাম কমছিল সেহেতু চালের দাম এবার কম হতে হবে। কৃষক দাম পাবে না অথচ মধ্যস্বত্বভোগীরা সুবিধা নেবেন তা হবে না। তারা সরকারি দামে ধান কেনেনি তাহলে কম দাম দিয়ে কিনেও কেন চালের দাম বাড়বে। আর যেহেতু পর্যাপ্ত মজুদ আছে তাই চালের দাম কোনভাবেই বাড়ানো যাবে না।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অটোমেটিক হাস্কিং মিলস মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে ধান ক্রয়ও চাল বাজারজাতে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। মিলগুলো প্রতিদিন ধান কিনছে, প্রক্রিয়াজাত করে তা আবার বাজারেও বিক্রি করছে। মিলারদের কাছে ধানের স্টক খুবই সীমিত। মিলারদের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় গুদামে বাড়তি ধান সংরক্ষণ করতে পারে নাই। ধান এখনো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীও কৃষকদের কাছেই রয়েছে।

তাহলে চালের দাম বাড়ছে কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সীমিত আমদানির কারণে যে যেভাবে পারছে ধান কিনছে। কখনো কেউ বেশি দাম দিয়ে ধান কিনছে, ফলে অনেক সময় বাজারে সেই প্রভাব পড়ছে। আমন ধানও ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে কিছুটা পিছিয়ে গেছে। ধান যদি সে সময় উঠত তাহলে এ সমস্যা হতো না।

   

বগুড়ায় শিশুকে গলা কেটে হত্যা, আসামী কারাগারে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, বগুড়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বগুড়ায় মায়ের সাথে হরিবাসর অনুষ্ঠানে বেড়াতে আসা শিশু বন্ধন (৬) হত্যার সাথে জড়িত সুকুমার দাসকে (২৫) কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) তাকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে নিহত বন্ধনের বাবা রবি দাস বাদী হয়ে সকুমার দাসকে আসামী করে সদর থানায় মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তয়ন কুমার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গ্রেফতার সুকুমারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কেও সুকুমার মুখ খুলছে না। বারবার বলছে আমার ভুল হয়ে গেছে। সুকুমারকে অনেকে মানসিক রোগী বলে দাবী করলেও তার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

এদিকে রবিদাসের দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে তার স্ত্রী কাকলী দাসের মামা সুকুমার। মামা-ভাগ্নির পারিবারিক বিরোধের জের ধরে সুকুমার এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। তবে পারিবারিক বিরোধের বিষয়ে স্পষ্ট কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো জানান, বৃহস্পতিবার হত্যাকাণ্ডের পরপরই সুকুমারকে পুলিশ আটক করে এবং তার দেখানো মতে বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধান কাটা কাঁচি জব্দ করা হয়।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বগুড়া সদরের শশিবদন গ্রামে মায়ের সাথে হরিবাসর অনুষ্ঠানে বেড়াতে আসা শিশু বন্ধনকে তার মায়ের মামা সুকুমার ঘরে ডেকে নিয়ে কাঁচি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।

;

এসি বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত ধারণা ফায়ার সার্ভিসের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর আগারগাঁও শিশু হাসপাতালের কার্ডিয়াক আইসিইউতে থাকা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) বিস্ফোরণে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিক ধারণা ফায়ার সার্ভিসের।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১টা ৪৭ মিনিটে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিটের ৪০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

আগুন নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন।

তিনি বলেন, দুপুর ২টা ২৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এরপর আমাদের ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে অনুসন্ধান চালায়। তবে আমরা কোনো ভুক্তভোগীকে পাইনি। আগুন লাগার পরপরই আইসিইউতে থাকা সবাইকে সরিয়ে নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বজনরা।

আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা ধরণা করছি আইসিইউর ভেতরে এসি ছিলো। সেটা থেকে হয় তো আগুন লেগেছে। তবে তদন্তের পর সঠিক কারণ জানা যাবে।

তিনি আরও বলেন, আগুনের সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু ভালো আছে। পাশাপাশি আইসিইউ রুমে যে অক্সিজেন সংযোগ ছিলো সেটি আগুনের কারণে পুড়ে যায়। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছুটা সময় লেগেছে। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় অক্সিজেন লাইনটি বন্ধ করা হয়েছে।

;

গাংনীতে ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ ৫ মাদক কারবারি আটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,মেহেরপুর
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মেহেরপুরের গাংনী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৫ মাদক কারবারীকে আটক করেছে। এদের কাছ থেকে ১১৫ বোতল ফেনসিডিল ও ৪০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সাথে জব্দ করা হয়েছে নগদ ১৫০০ টাকা ও মাদক কারবারে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল। 

বৃহষ্পতিবার রাতে পুলিশের পৃথক পৃথক টীম কয়েকটি অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে।

আটককৃতরা হচ্ছেন- গাংনী উপজেলার করমদি গ্রামের ছাদের আলীর ছেলে স্বপন (৩৮) ও আয়ুব আলীর ছেলে লিটন (৪০), পলাশী পাড়ার মৃত সুজা উদ্দীনের ছেলে টেফেন ওরফে খালিদ মাহমুদ (৩০), আলমডাঙ্গার নগর বোয়ালিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মামুনর রশীদ (৩০) ও ছাতিয়ান গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে স্বজল (২৭)। এদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু সাপেক্ষে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মেহেরপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়।

গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, মাদক পাচার রোধে গাংনী থানা পুলিশ অভিযানের অংশ হিসেবে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের নামে মাদকের মামলাসহ আদালতে সোপর্দ করা হবে।

;

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, জনজীবন বিপর্যস্ত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা চার দিন ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। প্রতিদিনই যেন তাপমাত্রার পারদ ক্রমেই উপরে উঠছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বেলা তিনটায় এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ। বৃষ্টি না হওয়ায় এ তাপপ্রবাহ চলছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। 

এদিকে, তীব্র তাপদাহে প্রাণীকূল ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিও যেন তীব্র গরমে বিপর্যস্ত। তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে সচেতনতামূলক মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পরদিন ১২ এপ্রিল থেকেই চুয়াডাঙ্গা জেলায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই তাপমাত্রা বেড়ে চলতি মৌসুমের রেকর্ড ভাঙছে। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ১৯ শতাংশ। বেলা তিনটায় তাপমাত্রা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ।

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, জনজীবন বিপর্যস্ত
 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এ জেলায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার (১৭ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তামপাত্রা রেকর্ড করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, আজ চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চলমান এ তাপপ্রবাহ থাকবে আরও কয়েকদিন। এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় গড় তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে। আর চুয়াডাঙ্গা জেলার অবস্থান কর্কটক্রান্তি রেখার কাছাকাছি হওয়ায় প্রতি বছর মার্চ ও এপ্রিলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে।

তিনি আরও বলেন, বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা হ্রাস পাবে। তবে আপাতত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে কালবৈশাখী ঝড় হলে তার সাথে বৃষ্টি হতে পারে। এটা আগে থেকে বলা সম্ভব নয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, এ জেলার ওপর দিয়ে কয়েকদিন ধরেই তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই গরমে হিট স্ট্রোকের ঝু্ঁকি থাকে, তাই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে আমরা জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে সচেতনতামূলক মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করেছি।

এদিকে, টানা তাপপ্রবাহে কাহিল হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে স্থবিরতা।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, কড়া রোদ ও গরম থেকে বাঁচতে অনেকে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন। কেউবা আবার নির্জন পরিবেশ খুঁজে বাতাসের জন্য প্রকৃতির দিকে চেয়ে আছেন। তবে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ তীব্র গরম উপেক্ষা করে কাজে বেরিয়েছেন।

আলমডাঙ্গা পৌর শহরের পুরাতন মোটরসাইকেলের হাটে বাইক বিক্রি করতে আসা জসিম উদ্দীন নামের এক যুবক জানান, বাইক নিয়ে হাটে এসে পড়েছি বিপাকে। একে তো খোলা মাঠে হাট, মাথার ওপর সূর্য দাউদাউ করে জ্বলছে। রোদ আর গরমে মনে হচ্ছে শরীর একেবারে পুড়ে যাচ্ছে। বাড়ি থেকে ছাতাও নিয়ে আসা হয়নি।

চুয়াডাঙ্গা সদরের ডাব বিক্রেতা শমসের মন্ডল জানান, এই তীব্র গরমে তার ডাবের চাহিদা ও বিক্রি দুটোই বেড়েছে। প্রতিদিন যে পরিমাণ ডাব তিনি বাজারে নিয়ে আসেন, সবই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। মানুষ একটু স্বস্তি নিতে ও শরীর ভালো রাখতে ডাবের পানি পান করছেন।

এদিকে, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বেড়েই চলেছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. উম্মে ফারহানা বলেন, গরমের সাথে হাসপাতালে বেড়েছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ঈদের পর থেকে এখন পর্যন্ত শয্যা সংখ্যার বিপরীতে অতিরিক্ত রোগী বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। শয্যা সংকুলান না হওয়ার রোগীরা বারান্দা ও করিডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এই চিকিৎসক পরামর্শ হিসেবে বলেন, তীব্র গরমে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বেশি করে পানি পান করতে হবে। ঠান্ডাজাতীয় পানীয় বিশেষ করে লেবুর শরবত, ডাবের পানি বেশি করে পান করতে হবে। এসময় তাপ এড়িয়ে ঠান্ডা স্থানে থাকতে হবে।

;