শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
সোনারগাঁও টেক্সটাইল মিলের কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, শুক্রবার রাতে ওই মিলের তুলার গোডাউনে হঠাৎ ধোঁয়া দেখতে পায় শ্রমিকরা। মুহূর্তেই তা চারদিকে ও ভেতরে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট এসে এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক আব্দুল হামিদ জানান, ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
বিশ্বের বিভিন্ন শহরে দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ। মেগাসিটি ঢাকার বাতাসও দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণের কবলে। কয়েক দিন ধরেই বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছে ঢাকা।
রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্যানুযায়ী, ২৯১ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠেছে এসেছে রাজধানী ঢাকা, যা দূষণের দিক থেকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত। একই সময়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ৩৯৯ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর শহর।
এ ছাড়া ২৪৬ স্কোর নিয়ে দূষিত শহরের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি শহর এবং ১৯৩ স্কোর নিয়ে যথাক্রমে চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে মিশরের রাজধানী কায়রো এবং ভারতের কলকাতা শহর।
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়, আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়।
২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) বাকি চার নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আজ রোববার শপথ নেবেন। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুর দেড়টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে এ শপথ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।
বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান সাবেক সচিব এ এস এম মো. নাসির উদ্দীন। তার সঙ্গে চার নির্বাচন কমিশনারের নামও ঘোষণা করা হয়।
তারা হলেন- সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমান মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব বেগম তাহমিদা আহমেদ ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাদের নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
নিয়োগ পাওয়ার পর সেদিন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নাসির উদ্দীন বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার, তা তা করব, ইনশাআল্লাহ। যে দায়িত্ব এসেছে, তা আমাদের সুষ্ঠুভাবে পালন করতে হবে সবার সহযোগিতা নিয়ে।
কুড়িগ্রামে তাপমাত্রা আরও কমে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে পথঘাট ও প্রকৃতি। গত এক সপ্তাহ ধরে ১৭ ডিগ্রি থেকে ১৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করছে তাপমাত্রা।
রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৭টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দিনের বেলা তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঠান্ডা অনুভূত হতে থাকে। এ সময় ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে বিস্তীর্ণ এলাকা। শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে বিলম্বে যাতায়াত করছে। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
অন্যদিকে, কুয়াশা ও শীতের কারণে ক্ষেতমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো বিপাকে পড়েছে। তারা সময়মতো কাজে যেতে পারছে না। শীতের কবলে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপ চরের হতদরিদ্র মানুষগুলো।
কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের আবু সাঈদ বলেন, ৫-৬ দিন থেকে শীত ও ঠান্ডা অনেক বাড়ছে। রাতে বৃষ্টির মতো পড়তে থাকে কুয়াশা। ঠান্ডা ও শীতের কারণে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। তারপরেও সকালে কাজের জন্য বের হয়েছি। কাজ না করলে তো আর সংসার চলবে না।
ওই এলাকার দিনমজুর নামদেল বলেন, আজ খুব কুয়াশা পড়ছে। মানুষ ঘুম থেকে না উঠতেই আমরা কাজের জন্য বের হয়েছি। যতই শীত বা ঠান্ডা হোক না কেন, কাজ ছাড়া কোনো উপায় নাই আমাদের।
কুড়িগ্রাম আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, চলতি মাসের শেষে অথবা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে হিমেল বাতাস বইতে পারে। তখন ঠান্ডার তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
‘ষাটের দশকের দিকে আমাগের এলাকায় স্কুল ছিল না। স্কুল না থাহার কারণে লেহাপড়া তেমন একটা করতে পারি নাই। এলাকার কথা চিন্তা করে তৎকালীন ইসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর মোল্লা ১৯৬৮ সালে এ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর স্কুলটিতে তেমন লেহাপড়া হতো না। স্কুলে আসলে মহিলারা (ম্যাডাম) ছাত্রীগের দিয়ে মাথার উহুন (উঁকুন) খোঁটাত। তাই এলাকাবাসী এই স্কুলটিকে উহুন খোঁটার স্কুল বলে ডাকত।’
যে প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এখন দেশসেরা হওয়ার অপেক্ষায়, সেটি সম্পর্কেই বলছিলেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির ইসলামপুর ইউনিয়নের সত্তরোর্ধ্ব ছাদেক আলী মণ্ডল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নাম স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এরই মধ্যে স্কুলটি ২০২৪ সালের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে।
জানা যায়, বাড়াদী গ্রামে চন্দনা নদীর পূর্বপারে ১৯৬৮ সালে ৩৩ শতক জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত ১৫২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে বিদ্যালয়টি। ১৯৮৬ সালে জাতীয়করণ হয়। একসময় এটিকে এলাকাবাসী উঁকুন খোঁটার স্কুল বলে ডাকত। কিন্তু বিদ্যালয়টি এখন সারাদেশের মডেল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যে ‘সততা স্টোর’ রয়েছে, সেটি এই বিদ্যালয় থেকেই সৃষ্ট। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম এর প্রতিষ্ঠাতা। সততা স্টোর প্রতিষ্ঠা করে তিনি ২০১৯ সালে দেশসেরা প্রধান শিক্ষক হিসেবে ভূষিত হন। এরই মধ্যে তাঁর উদ্ভাবিত ‘বন্ধু টিম’ ইউনেস্কো ও নায়েমে গৃহীত হয়েছে। এই প্রধান শিক্ষক এবার স্বপ্ন দেখছেন প্রতিষ্ঠানটি দেশের সেরা বিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি পাবে।
দৃষ্টিনন্দন শিশুবান্ধব এ বিদ্যালয়ে ৪৬২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক ১০ জন। প্রাথমিক বৃত্তি ও সমাপনীতে এ প্রতিষ্ঠানের পাসের হার শতভাগ। শিখনঘাটতি পূরণে সরকারি ছুটির দিনগুলোতে সান্ধ্যকালীন অবৈতনিক বিশেষ পাঠদানের ব্যবস্থা রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, এর অঙ্গন ও প্রতিটি শ্রেণিকক্ষ পরিচ্ছন্ন ও সুসজ্জিত। দেয়ালে লেখা মনীষীদের বাণী ও অঙ্কিত শিক্ষণীয় উপকরণ। বিদ্যালয়টিতে রয়েছে শিশুবান্ধব মীনা ও রাজু পার্ক, ফুলের বাগান, মুক্তির স্মৃতিগাঁথা স্কয়ার, অভিভাবক ছাউনি (বকুলতলা), রিডিং কর্নার, নিজ দেশ, জেলা ও উপজেলার মানচিত্র, শহীদ মিনার, নামাজ ঘর, পশুপাখির ম্যুরাল, সাকসেস ও ইয়েস আই ক্যান কর্নার, ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষ, বেল, ডিসপ্লে বোর্ড ও ঘড়ি, সততা স্টোর, পতাকা মঞ্চ, শাপলা স্কয়ার এবং ছাদ বাগান।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিফাত, অর্পা ও রাশিদ জানায়, তারা এ বিদ্যালয় নিয়ে গর্ব করে। শিক্ষকরা খুবই আন্তরিক। তাদের নিয়মিত লেখাপড়া ও নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে থাকতে হয়। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণটি তাদের খুব প্রিয়। পড়ালেখার ফাঁকে তারা খুব আনন্দ করে।
দক্ষিণবাড়ী গ্রামের মীরা খাতুন ও দোপপাড়া পদমদী গ্রামের লাবণী বেগম জানান, সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে তাদের প্রথম পছন্দ এই বিদ্যালয়। প্রায় চার কিলোমিটার দূর থেকে তারা এই বিদ্যালয়ে তাদের সন্তানদের নিয়ে আসেন। এখানে নৈতিক, মানবিক ও ধর্মীয় শিক্ষাও দেওয়া হয়।
প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান, নানা সংকট উপেক্ষা করে বিদ্যালয়টি আজ যে অবস্থানে রয়েছে এর জন্য প্রিয় শিক্ষার্থী, সহকর্মী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর বিশেষ অবদান রয়েছে। সবার সহযোগিতা তিনি পেয়েছেন বলেই বিদ্যালয়টির সুনাম সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়টির মানোন্নয়নে তিনি কখনও কারও সঙ্গে আপস করতে রাজি নন।
শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল হক বলেন, শিশুবান্ধব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলতে যা বোঝেন, এটি তা-ই। এটি একটি আদর্শ বিদ্যালয়। এখানকার শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক সবাই নিয়মের মধ্যে থেকেই শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এটি ব্যতিক্রমী বিদ্যালয়।