রায়ের পর্যবেক্ষণে যা বলেছেন আদালত
বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া দুইজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের সাজা প্রদান করা হয়েছে।
রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকালে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ রায় প্রদান করেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত গাড়ির মালিক, ড্রাইভার-হেলপার ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি কিছু দিন নির্দেশনা প্রদান করেন।
বার্তা২৪.কমের পাঠকদের জন্য এ চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো-
-
পরিবহন সেক্টরে কর্মরত ড্রাইভার হেলপারের খামখেয়ালিপনা আর উদাসীনতার ফলে উদীয়মান মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী, এমনকি যুবক- বয়স্ক ব্যক্তিরাও বাসের চাকায় পিষ্ট হওয়া থেকে রেহাই পায় না।
-
বর্তমান মামলায় রমিজউদ্দিন কলেজের ২ জন উদীয়মান ছাত্র-ছাত্রী নিহত হওয়ায় এ দেশের সাধারণ মানুষের বিবেককে নাড়া দেয়।
-
দিয়া ও করিম নিহত হওয়ার পর বিচারের দাবিতে সেদিন রাস্তায় নেমে আসে সাধারণ মানুষ।
-
পরিবহনের সেক্টরের ড্রাইভার হেলপাররা অধিক টাকা উপার্জনের জন্য মানুষের জীবনের প্রতি কোন সম্মান প্রদর্শন করেন না।
-
হালকা গাড়ি চালানোর লাইসেন্স নিয়ে তারা ভারী যানবাহন চালিয়ে যত্রতত্র মানুষের উপর তুলে দিয়ে হত্যা করে চলেছে।
-
ড্রাইভার হেলপাররা খাম খেয়ালিপনায় মানুষ হত্যা নেশায় পরিণত হয়েছে। এটি বন্ধ হওয়া আবশ্যক।
-
গাড়ির মালিকরা অধিক জমা নেওয়ার ফলে ড্রাইভার হেলপাররা অধিক উপার্জনের জন্য গাড়ির দ্রুতগতি ও অবৈধ প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়। এর ফলেই রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনা ও জীবনহানি ঘটছে।
-
পরিবহন মালিকদের অধিক জমা নেওয়ার মানসিকতা পরিহার করা উচিত।
-
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উচিত ড্রাইভারদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়মিত পরীক্ষা করা।
-
হালকা যানবাহনের চালানোর লাইসেন্স নিয়ে কেউ যাতে ভারী যানবাহন চালাতে না পারে।
-
গাড়ির মালিকরা জেনে বুঝেই হালকা যানের ড্রাইভারদের দিয়ে কম বেতনে ভারী যানবাহন চালানোর কাজে নিয়োজিত করেন। ফলে ভারী যানবাহন চালানোর যোগ্যতা না থাকা সত্বেও তার ভারী যানবাহন চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে।
-
এ ক্ষেত্রে মালিকদের যেমন দায়িত্ব আছে তেমনি গাড়ি চালানোর সময় চালকদেরও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।