বাংলাদেশ এখন সামুদ্রিক দেশও
পররাষ্ট্র সচিব মো শহিদুল হক বলেছেন, বাংলাদেশ এখন সামুদ্রিক দেশও। বাংলাদেশ মাটিতে যতটা জায়গা নিয়ে আছে ঠিক ততটুকু সমুদ্রে দখল করে আছে। আমরা শুধু যে মাটির দেশ তার চিন্তা ভাবনা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে 'এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগর ও ইউরোপে বিকশিত জোট: বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ এবং বিকল্প' বিষয়ক ব্রিফিং এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ কেন? গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার প্রধান কারণই হল আমাদের একদিকে রয়েছে সমুদ্র এবং আরেকদিকে রয়েছে পাহাড়। অর্থাৎ হিমালয়ের পাদদেশই বাংলাদেশের অবস্থান।
বাংলাদেশ এশিয়ার কৌশলগত করিডরে পরিণত হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশ এশিয়ার কৌশলগত করিডরে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে। ভারত বাংলাদেশ ও মিয়ানমার- এই তিন দেশ মিলে একটি শক্তিশালী জোট গড়ে তোলা সম্ভব হয়ে উঠতে পারে। সবচেয়ে শক্তিশালী কৌশলগত করিডর হতে পারত। কিন্তু অনেকটাই রোহিঙ্গা সংকট এটাকে দূর্বল করে দিয়েছে। তবে বাংলাদেশকে সব সময় কৌশলগত জোট গড়ে তুলতে হবেই। এজন্যই আমরা একই সঙ্গে ভারত ও চীনের সঙ্গে কৌশলগত জোট গড়ে তুলেছি। বাংলাদেশ বৈদেশিক নীতি বাংলাদেশের জন্যই করা হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট জিইয়ে রেখে এ এলাকার সম্ভবনা এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। মিয়ানমার যদি এই সংকটের সমাধান না চায় তাহলে তারাই বিপদে পড়বে। বসনিয়ার হত্যার বিচার করতে ছয় বছর সময়ে লেগেছিল। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে মাত্র ২ বছর লেগেছে। এক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভুমিকা রয়েছে।
শহিদুল হক বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ ত্যাগের কারণ সন্ধানে জবাবদিহিতার কথা বলেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আইসিসি ও আইজেসিতে কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। এজন্য আইনি পরামর্শ দেশের ভিতরে ও বাইরে নেওয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে বাংলাদেশ পক্ষ থেকে নয় গাম্বিয়ার পক্ষ থেকে প্রতিনিধি থাকবে। কারণ এই মামলাটি গাম্বিয়া করেছে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ও বিচার দুটিই চায়।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বের সব দেশ বাংলাদেশের পক্ষে রয়েছে। ভাসানচরে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল এ মাসে ভ্রমণ করবেন বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।