ইউএসএআইডি মিশন প্রধানের পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) বাংলাদেশ মিশনের পরিচালক (এমডি) ডেরিক এস ব্রাউন এ সপ্তাহে পার্বত্য চট্টগ্রামে সংস্থাটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন কর্মসূচি পরিদর্শন করেন। সফরকালে তিনি স্থানীয় বাসিন্দা, সরকারি কর্মকর্তা ও কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
শুক্রবার (৬ নভেম্বর) ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
সফরে ডেরিক এস ব্রাউন পার্বত্য চট্টগ্রামে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সুযোগ বৃদ্ধি ও এখানকার বিশেষ প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে বাংলাদেশ সরকার ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে ইউএসএআইডি’র মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার তুলে ধরেন।
ব্রাউন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে টেকসই জীবিকা ও কমিউনিটিভিত্তিক বন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি নিয়ে ইউএসএআইডি’র কার্যক্রম পর্যালোচনা করেন, যার লক্ষ্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে পানি সরবরাহ এবং স্থানীয়দের উপার্জন বৃদ্ধি করা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ‘ওয়াটারশেড কো-ম্যানেজমেন্ট অ্যাকটিভিটি’র মাধ্যমে ইউএসএআইডি ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৬০ লাখ ডলারের মঞ্জুরির মাধ্যমে একটি সমন্বিত বাস্তুসংস্থান ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি বাস্তবায়ন করবে। এ ছাড়া ইউএসএআইডি সংরক্ষিত বনের ১৪৪৫ হেক্টর ভূমিতে বনায়ন করতে বাংলাদেশ বন বিভাগ ও স্থানীয় কমিউনিটির সঙ্গে কাজ করছে।
বান্দরবানে ব্রাউন অসহায় জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য নিরাপত্তা এবং পরিস্থিতি মোকাবেলার সক্ষমতা উন্নয়নের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। ইউএসএআইডি জুলাই মাসের বন্যাজনিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করার জন্য বাস্তবায়ন সহযোগী হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল ও কেয়ারকে আগস্ট মাসে ৩০ লাখ ডলারের বেশি তহবিল দিয়েছে। ইউএসএআইডি’র সহায়তায় হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বান্দরবন জেলার সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত ৪৫০০ এর বেশি পরিবারকে সহায়তা দিচ্ছে।
ডেরিক ব্রাউন এ অঞ্চলে থাকা ইউএসএআইডি’র অনেকগুলো বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রের একটি পরিদর্শন করেন। বর্তমানে কেন্দ্রটির সংস্কার কাজ চলছে। তিনি এলাকাবাসীকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবেলায় সতর্ক ও প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দেন।
যুক্তরাষ্ট্র ইউএসএআইডি’র মাধ্যমে ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশকে ৭শ’ কোটি ডলারের বেশি অর্থ উন্নয়ন সহায়তা দিয়েছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে প্রায় ২১ কোটি ৯০ লাখ ডলার দিয়েছে সংস্থাটি। খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুযোগ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নয়ন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও অনুশীলনগুলোকে এগিয়ে নেওয়া, পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মসূচির জন্য এ সহায়তা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশি ও আমেরিকানদের মধ্যে সহযোগিতা, সংলাপ ও পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এ বছর যেসব কর্মসূচি পরিচালনা করছে এমডি ব্রাউনের পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর তার মধ্যে অন্যতম।