'শুধু বিজয়ের মাসেই আজিজুলের পতাকা বিক্রি'
আজিজুল হক ব্যাপারি। ১৯৮৮ সালে শরীয়তপুর জেলায় তার জন্ম। জন্মের ৮ বছর বয়স থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিবছর ডিসেম্বর (বিজয়ের) মাসে পতাকা বিক্রি করেন। সারাবছর অন্যান্য ব্যবসা করলেও বিজয়ের মাস ডিসেম্বর আসলেই তার মন কেড়ে নেয় পতাকা বিক্রির ব্যবসা। অন্য ব্যবসা থেকে প্রতিদিন হাজার টাকা আয় হলেও, পতাকা বিক্রি করে দৈনিক আয় হয় মাত্র ৫০০- ৮০০ টাকা। তারপরেও স্বস্তি পায় আজিজুল। দেশের স্বাধীনতার প্রতীক সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে অন্যরকম ভালো লাগে তার।
আলাপকালে পতাকা বিক্রেতা আজিজুল হক ব্যাপারি বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'আমার দেশের বাড়ি শরীয়তপুর। বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই এই ব্যবসা করি। সারাবছর বিভিন্ন স্কুলের সামনে ঝাল মুড়ি, বাদাম, ছোলা, পটেটো বিক্রি করি। ডিসেম্বর মাস আসলেই পতাকা বিক্রি করি। এই ব্যবসাটাই আমার সবচেয়ে ভালো লাগে। যে পতাকার জন্য ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছে, সেই পতাকা আমি সবার মাঝে ছড়িয়ে দেই। ছোট-বড় সবার হাতে যখন লাল-সবুজের পতাকা তুলে দেই তখন অনেক ভালো লাগে।
পতাকার মূল্য জানতে চাইলে আজিজুল বলেন, ছোট-বড় বিভিন্ন সাইজের পতাকা আছে। ১০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০ টাকার পর্যন্ত পতাকা আছে। মোহাম্মদপুর মোড় থেকে পাইকারি দরে কিনে খুচরা বিক্রি করি। ১০ টাকার পতাকা ৮ টাকায় কিনি, ২০ টাকার পতাকা ১৫ টাকা, ৩০০ টাকার পতাকা ১৫০ টাকায় কিনে আনি। ডিসেম্বর মাস পার হয়ে গেলে বাড়তি পতাকাগুলো দোকানে ফেরত দিয়ে আসি।
রাজধানীর ফার্মগেট, ধানমন্ডি এবং সংসদ ভবনের সামনে পতাকা বিক্রি করেন আজিজুল। প্রতিদিন ৫০০-৮০০ টাকা বিক্রি হয়। ছোট ছোট বাচ্চারাই পতাকা বেশি কিনে। এই টাকা দিয়ে ভালোভাবেই চলে ৫ মেয়ে ও ১ ছেলেসহ ৮ সদস্যের পরিবার। ছেলে-মেয়ে সবাই পড়ালেখা করছে।
জাতীয় পতাকা একটি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে ৯ মাস যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বরে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল। তারপর থেকে ১৬ ডিসেম্বরকে বিজয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সারা বছরের তুলনায় বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার চাহিদা বেড়ে যায়।