নোমান-শাহাদাত ঐক্যে চাঙ্গা চট্টগ্রাম বিএনপি
আন্দোলন-সংগ্রাম ও সাংগঠনিক তৎপরতায় প্রায়-স্থবির চট্টগ্রাম বিএনপি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমান ও মহানগর নেতা ডা. শাহাদাত হোসেনের মধ্যে ঐক্যের ফলে চট্টগ্রাম বিএনপিতে চাঙ্গা ভাব ফিরে এসেছে। বিজয় দিবসে দুই নেতা মিলিতভাবে মাঠে নেমে এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় শোডাউন করেছেন বন্দরনগরী চট্টগ্রামে।
নেতৃত্বের শূন্যতা ও কোন্দলে চট্টগ্রাম বিএনপি বিগত বছরগুলোতে সাংগঠনিকভাবে স্থবির ও হতোদ্যম হয়ে পড়েছিল। সরকারবিরোধী আন্দোলনে ও দল শক্তিশালী করতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছিল দলটি।
দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিএনপির হেভিওয়েট নেতাদের তালিকা বিরাট হলেও মামলা ও ব্যক্তিগত কারণে তারা দলের হাল ধরতে পারছিলেন না। ফাঁসি হওয়ার পর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর গ্রুপ বিপন্ন হয়ে পড়ে। এম, মোর্শেদ খান ও মীর নাছির দৃশ্যত নিষ্ক্রিয়। আমীর খসরু মাহমুদ ঢাকায় সময় দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। ফলে দলের অবস্থা ছিল কাণ্ডারীশূন্য।
চট্টগ্রাম বিএনপির একাধিক সূত্র বার্তা২৪.কম'কে জানায়, তরুণ ও নতুন ডা. শাহাদাতের পক্ষে একা পুরো চট্টগ্রামে সংগঠন সাজানো ও আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব হয়নি। অতীতে তার পেছনে কোনও কোনও সিনিয়র নেতা থাকায় বিভিন্ন গ্রুপ মিলে দল শক্তিশালীভাবে মাঠে ছিল।
কিন্তু দীর্ঘদিন ডা. শাহাদাত ছিলেন রাজনৈতিক মুরুব্বি বিহীন। দলের সিনিয়র নেতারা মামলা ও নিষ্ক্রিয়তার কারণে সরে যান। এ পরিস্থিতিতে বিএনপির সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশে মাঠে সরব হন আব্দুল্লাহ আল নোমান, যিনি চট্টগ্রাম মহানগরের প্রতিষ্ঠাকালীন নেতা ও গণসংগঠক হিসেবে সুপরিচিত।
নোমান-শাহাদাতের নেতৃত্বের ঐক্যের প্রভাব চট্টগ্রাম বিএনপিতে স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে মহানগরে বিএনপি বিশাল শোডাউন ছাড়াও পাড়া, মহল্লা, ওয়ার্ডে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
স্থানীয় বিএনপির বেশ কয়েক জন নেতা বার্তা২৪.কম'কে বলেন, মূল সংগঠন ছাড়াও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ওয়ার্ড ও তৃণমূল পর্যায়ের কমিটিগুলো দুই নেতার ঐক্যের ফলে পুনরুজ্জীবিত হওয়ায় বিজয় দিবসের মিছিল ও সমাবেশে বিপুল সমাবেশ ঘটেছে। দলের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বিএনপিপন্থী পেশাজীবি ও বুদ্ধিজীবীদের সাংগঠনিক অংশগ্রহণও বৃদ্ধি পেয়েছে।
নোমান-শাহাদাতের নেতৃত্বের ঐক্য বজায় থাকলে চট্টগ্রাম বিএনপি পুনঃসংগঠিত হয়ে সরকারবিরোধী তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলে পারবে বলে মনে করেন স্থানীয় পর্যায়ের অনেক নেতা।