নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, অপমানে আত্মহত্যা
রাজশাহীর বাগমারায় গাছে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অপমান সইতে না পেরে মোছা. আক্তারুন্নেসা (৩৮) নামে এক নারী আত্মহত্যা করেছেন।
বুধবার (১ জানুয়ারি) নির্যাতনের ঘটনার পর বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকালে তিনি বিষপান করেন। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মারা তিনি যান।
পরে তার মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় তার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জানা গেছে, আক্তারুন্নেসা বাড়ি বাগমারার বড় বিহানালী ইউনিয়নের বাগান্না গ্রামে। গত প্রায় ১০ বছর ধরে তার স্বামী নিরুদ্দেশ। ২০ বছর বয়সী এক ছেলে ঢাকায় কাজ করেন। ১৩ বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে একাই থাকতেন তিনি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আবদুল মজিদের সঙ্গে তার অনেক দিন ধরেই বিরোধ ছিলো। এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমাও হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ ছয়জনকে আসামি করে বাগমারা থানায় মামলা দায়ের করেছেন ‘মৃত’ নারীর ভাই সাইফুল ইসলাম। এরই মধ্যে পুলিশ মামলার অন্যতম আসামি আব্দুল করিমকে গ্রেফতার করেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ক্ষেতের ফসল নষ্টের অভিযোগ এনে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আবদুল মজিদ এবং তার সহযোগীরা আক্তারুন্নেসাকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে দুই ঘন্টাব্যাপী নির্যাতন করেন মেম্বার মজিদ এবং তার সহযোগীরা। খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান গ্রাম পুলিশের সহযোগিতায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে আক্তারুন নেসা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে তিনি বিষপান করেন।
আক্তারুন্নেসার ভাই সাইফুল ইসলামের অভিযোগ, তার বোনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন এবং লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এ কারণে তিনি ক্ষোভে আর অভিমানে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান জানান, মামলা দায়েরের পর আবদুল করিম নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি ইউপি সদস্য মজিদের ভাই। বাকি আসামিরা পলাতক। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।