পঞ্চম দিনে পাটকল শ্রমিকদের অনশন, মন্ত্রণালয়ে বৈঠক চলছে
মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, বকেয়া পাওনা পরিশোধসহ ১১ দফা দাবিতে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের আমরণ অনশন পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে খালিশপুর শ্রমিকদের ১১ দফার সমর্থনে মিছিল করেছে পাটকল শ্রমিকদের সন্তানরা (শিক্ষার্থী)। এতে ‘পাট শিল্প বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’, ‘দালাল নেতৃত্ব হটাও’, ‘পাটশিল্প ধ্বংস হলে, সোনার বাংলা ধ্বংস হবে’, ‘আমার ভাই শিখিয়ে গেছে, লড়াই করে বাঁচতে হবে’- এমন নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড বহন করে তারা।
অপরদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আন্দোলন বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আ. হামিদের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের শ্রমিক নেতারা পাট মন্ত্রণালয়ে পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বৈঠক চলছে।
পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক খলিলুর রহমান মোবাইলে বলেন, ‘পাট মন্ত্রণালয়ে বৈঠক চলছে। আমরা দাবির বিষয়ে কোনো কালক্ষেপণ মেনে নেব না। এর আগের বৈঠকগুলোতে শুধু আশ্বাস মিলেছে। আমরা সমস্যার বাস্তবায়ন চাই। না হলে সাধারণ শ্রমিকরা ঘরে ফিরবে না।’
মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, বকেয়া প্রদান, পাটকলগুলো আধুনিকীকরণ, অস্থায়ী শ্রমিকদের স্থায়ী, জুট গুডস ম্যান্ডেটরি অ্যাক্ট পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, বকেয়া পিএফ ও গ্র্যাচুইটির টাকা প্রদান, পাট মৌসুমে কাঁচা পাটক্রয়ে অর্থ ছাড়সহ ১১ দফা দাবিতে খুলনার ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার, ইস্টার্ন, আলিম, খালিশপুর, দৌলতপুর জুটমিলের শ্রমিকরা দ্বিতীয় দফায় ২৯ ডিসেম্বর দুপুর থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন। এদের মধ্যে প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, ইস্টার্ন, আলিম, ক্রিসেন্ট জুট মিল শ্রমিকরা নিজ নিজ মিলগেটে ও স্টার জুটমিলের শ্রমিকরা খালিশপুর বিআইডিসি সড়কে কর্মসূচি পালন করছেন।
শ্রমিক নেতাদের দাবি, টানা অনশনে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক দুর্বল হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৫০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা শরীরে স্যালাইন নিয়ে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমিকরা একই দাবিতে ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর রাত পর্যন্ত প্রথম দফায় অনশন কর্মসূচি পালন করে। শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপির আশ্বাসে ওই কর্মসূচি স্থগিত করে শ্রমিক নেতারা। শ্রম প্রতিমন্ত্রী, পাট মন্ত্রণালয়, বিজেএমসির সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের ১৫, ২২ ও ২৬ ডিসেম্বর তিন দফায় বৈঠক হয়। তবে তাতে কোনো সুফল আসেনি।