মডেল রাউধার ‘মৃত্যু’ নিয়ে পিবিআই’র প্রতিবেদন প্রত্যাখান
রাজশাহীতে মালদ্বীপের মডেল রাউধা আতিফের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন আবারও প্রত্যাখ্যান করেছে রাউধার পরিবার। ফের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকালে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি পিবিআই’র দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন।
তিনি বলেন, 'মামলাটির নিরপেক্ষ তদন্ত হয়নি। আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আমি হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। এই হত্যা রহস্যজনক আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।' এসময় হত্যা রহস্য উদঘাটনে জন্য উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দাবি করেন তিনি।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়ায় ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রীনিবাস থেকে রাউধা আতিফের (২২) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি ওই কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। মালদ্বীপের মেয়ে রাউধা পড়ার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে এসেছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি মডেলিং করতেন।
রাউধার মৃত্যুর দিনই কলেজ কর্তৃপক্ষ শাহ মখদুম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে। মৃত্যুর দুইদিন পর মরদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে রাজশাহীতে দাফন করা হয়। ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল রাউধার বাবা মোহাম্মদ আতিফ রাজশাহীর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় রাউধার সহপাঠী ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মেয়ে সিরাত পারভীন মাহমুদকে (২১) আসামি করা হয়। তবে মামলায় সিরাতকে গ্রেফতার না করা হলেও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
পরে ১৪ এপ্রিল হত্যা মামলাটি শাহ মখদুম থানা থেকে সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়। রাউধার বাবা ডা. আতিফের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই ২০১৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর পিবিআইকে মামলাটির তদন্ত ভার দেয়া হয়। এরপর কবর থেকে মরদেহ তুলে দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্ত করা হয়। তাতেও রাউধা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
গত ১৮ মে পিবিআই এর উপ-পরিদর্শক ও এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান রাজশাহী মহানগর হাকিম আদালতে এই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ২৯ মে আদালত তা গ্রহণ করেন। সেই প্রতিবেদনে মালদ্বীপের এই মডেল আত্মহত্যা করেছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়। পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মতই পিবিআই’র প্রতিবেদনেও কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি।
এদিকে, রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় কলেজের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিটিও তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, 'রাউধা আত্মহত্যা করেছেন।' তবে রাউধার বাবা আতিফ এখনও দাবি করছেন, 'তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।'