শীতে কাঁপছে রাজশাহী, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৬
মাঘের শুরুতেই গত সপ্তাহে এক পশলা বৃষ্টি ভিজিয়ে দেয় পদ্মাপাড়ের জনপদ। সেই সাথে রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলে নেমে আসে হাড় কাঁপানো শীত। গেল সপ্তাহ থেকে চলছে শৈত্যপ্রবাহ। ভোর থেকে কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে জনপদ। বেলা গড়ালে দুপুরে কিছু সময় সূর্যের দেখা মিললেও বাড়ছে না তাপমাত্রা।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই তাপমাত্রা কমায় ঠাণ্ডা আরও জেঁকে বসছে। কনকনে এই শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে পদ্মাপাড়ের জনপদ। খেটে খাওয়া মানুষেরা চরম বিপাকে পড়েছেন। সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদেরও।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আনোয়ারা বেগম বার্তা২৪.কমকে জানান, 'রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাজশাহীতে সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আগের দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ছিল ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।'
তিনি বলেন, 'চলতি সপ্তাহের পুরোটা সময়জুড়ে শৈত্যপ্রবাহ চলার সম্ভাবনা রয়েছে। ফেব্রুয়ারির শুরুতে অর্থাৎ মাঘ মাসের মাঝামাঝি সময়ে রাজশাহী অঞ্চলে আবারো বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।'
এদিকে, রোববার সকালে রাজশাহী নগরী ও এর আশেপাশে ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে প্রকৃতি। কয়েক হাত দূরেও কিছুই দেখা যাচ্ছে না। সড়ক-মহাসড়কগুলোতে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত হেডলাইটের আলো জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল করতে দেখা যায়।
এর মধ্যে অনেক কর্মজীবী মানুষ ছুটছেন রুটি-রুজির সন্ধানে। তাদেরই একজন শফিকুল ইসলাম। বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলায়। মহানগরীতে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন তিনি। শফিকুল বলেন, 'এই শীতে হাতুড়ি পিটিয়ে রড বাঁকা করতে হবে। কনকনে শীতে এই কাজ করা খুবই কষ্টকর। কিন্তু মালিক বলছে- দু'দিনের মধ্যে রডের কাজ শেষ করে ছাদ ঢালাই দিতে হবে। তাই উপায় নেই, কাজ করতেই হবে। কাজ ছাড়লে তো আর সংসার চলবে না!'
শীতের সকালে পেটের তাগিদে রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন ষাটোর্ধ বৃদ্ধ হাশমত উল্লাহ। মহানগরীর শিরোইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যাত্রীর আশায় রিকশার হ্যান্ডেল ধরে দাড়িয়ে রীতিমতো কাঁপছেন তিনি। তিনি বলেন, 'গত দুই দিন (শনি ও রোববার) একদমই ভাড়া হয়নি। তবুও আশায় আশায় সকালে বের হয়েছি। আজ তো অফিস খোলা, দেখা যাক কী হয়!'
তিনি আরো বলেন, 'ঠাণ্ডা বাতাসে শরীর তো কুলায় না। ভাড়াও নেই বললেই চলে এই শীতে। কিন্তু ঘরে ৫/৬টা মানুষ। আয় না করলে চলবে কেমনে!