চট্টগ্রামে বাড়ছে মনোরোগ!



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
মনোরোগের মানসিক বিশৃঙ্খলা, ছবি: প্রতীকী

মনোরোগের মানসিক বিশৃঙ্খলা, ছবি: প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা বাড়ানোর দাবি জানানো হচ্ছে অনেক দিন ধরেই। ঢাকার পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী চট্টগ্রামে মনোরোগ বৃদ্ধি ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতা নিয়ে নাগরিকদের অভিযোগেরও অন্ত নেই।

চট্টগ্রামের ৮০ লাখ নাগরিকের মধ্যে প্রায় ২০ লাখ মানুষ মানসিক সমস্যায় ভোগেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। যার মধ্যে কমপক্ষে ৬ লাখ মানুষ গুরুতর ভাবে সমস্যাগ্রস্ত।

মনোবিশ্লেষক নাট্যবিজ্ঞানী মোস্তফা কামাল যাত্রা চট্টগ্রামের মানসিক সমস্যার বিস্তার নিয়ে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, চট্টগ্রামে মনোরোগের প্রকোপ বাড়লেও এখানে যোগ্য চিকিৎসক নেই। পরিবার, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে পড়ানো হয় না। মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কর্নার নেই কোথাও। চট্টগ্রাম মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার নিরিখে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে রয়েছে।

মোস্তফা কামাল যাত্রা, যিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক এবং সমাজ উন্নয়নমূলক সংস্থা 'উৎস'র নির্বাহী পরিচালক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, চট্টগ্রামের বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য ৮/১০ জনের বেশি যোগ্য মনোচিকিৎসক নেই। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগে মাত্র একজন চিকিৎসক রয়েছেন। অথচ সেখানে শত শত মানসিক সমস্যাগ্রস্ত রোগী প্রতিদিন আসেন। তাদের সুষ্ঠু চিকিৎসা প্রদান করাও সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি বলেন, মানসিক রোগ সম্পর্কে সচেতনতা না থাকায় অনেকেই রোগ পুষছেন। সামাজিক ও পারিবারিক বদনামের ভয়ে অনেকে মানসিক সমস্যার উপযুক্ত চিকিৎসা না করে চেপে রাখেন। ফলে ব্যক্তিজীবনে ও সমাজে এর মারাত্মক কুফল দেখা যাচ্ছে।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শিশু-কিশোর বয়সের মানসিক আঘাত, সুপ্ত মানসিক ব্যাধি, নেতিবাচক অভিজ্ঞতা, যৌন ও মানসিক পীড়নের ঘটনার স্মৃতি বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রবল হয়ে স্থায়ী মনোরোগে পরিণত হয়। যুবক ও মধ্য বয়সীদের মধ্যে এসবের তীব্র প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়। হতাশা, নেশা, বিষন্নতা, একাকিত্ব, ঘুমহীনতা, অস্থিরতা, স্নায়ুবৈকল্য ইত্যাদি প্রকট আকার ধারণ করে ক্রনিক লেভেলের মানসিক রোগ বৃদ্ধি পায় অনেকের মধ্যেই। আক্রান্তদের মধ্যে আচরণগত ভারসাম্যহীনতা, সামাজিকরণ অক্ষমতা এবং আত্মঘাতী প্রবণতাও বৃদ্ধি পায়।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মানসিক সমস্যার যেমন শারীরিক প্রভাব আছে, তেমনি শারীরিক সমস্যারও মানসিক প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কিন্তু তা নিরসনে পরিবার, সমাজ ও সরকারের নীতি ও কর্মপরিকল্পনায় যথেষ্ট উদাসীনতা রয়েছে। সিলেবাস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানসিক স্বাস্থ্যের পরিচর্যার নানা দিক তুলে ধরা হয় না। ফলে স্বাভাবিক শিক্ষাজীবনের মধ্যেই মানসিক স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উপেক্ষিত থাকে, যা কখনও কখনও ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে বিরাট ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

নেশা, হিংসাত্মক আচরণ, ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম ছাড়াও মানসিক সমস্যাগ্রস্তরা আত্মহত্যার মতো ক্ষতিকর পথ বেছে নেয়। নিজের জীবনের পাশাপাশি পরিবার-পরিজনের জীবন বিষিয়ে তুলে। এসব সমস্যা নিয়ে বহু পারিবারিক অশান্তি ও সামাজিক উত্তেজনার সৃষ্টি হওয়ারও রেকর্ড রয়েছে।

ক্রমবর্ধমান হারে বিভিন্ন বয়সের অসংখ্য মানুষ মানসিক রোগ ও ট্রমায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অন্যতম স্বাস্থ্য চ্যালেজ্ঞ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম দ্রুত বর্ধনশীল ও বাণিজ্যভাবে অতি সচল জনপদ হওয়ায় এখানে মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা ও সেবার দিকটি অধিক গুরুত্বের দাবি রাখে।

বিশেষত, বিশ্বব্যাপী মানসিক রোগের ক্রমবর্ধমান বিস্তারের খবরও সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, মানসিক রোগের প্রকোপের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল। ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানসিক রোগাক্রান্ত মানুষের দেশ।

আরও পড়ুন: দক্ষিণ এশিয়া: মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক অঞ্চল

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য আগাম সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বড় বড় শহরগুলোতে বিনোদন কেন্দ্র ও নিরাপত্তা বলয় জোরদার করে নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষা করা অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিলেবাসের পাঠ্যক্রমে মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা বিধি সংযুক্ত হওয়াও দরকার। দরকার মনোরোগ চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞের সংখ্যা বাড়ানো।

নগর পরিকল্পনায় বর্তমানে অনেক ইস্যু যুক্ত হলেও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি নেই। ঢাকা ও চট্টগ্রামকে পরিবেশ-বান্ধব করার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য-বান্ধব করার বিষয়েও সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ দিয়েছে নাগরিক সমাজ।

চট্টগ্রামে বিগত কয়েক বছরে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর কিশোর অপরাধের বিশ্লেষণে দেখা যায়, মনস্তাত্ত্বিক বিশৃঙ্খলা থেকে অনেকেই মারাত্মক কাণ্ড ঘটিয়ে বসেছে। ফলে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংস্থার পক্ষ থেকে বিভিন্ন বয়সী নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের পরীক্ষা ও চিকিৎসার সেবা বাড়ানোর আশু প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

মনোবিশারদগণ মনে করেন, উন্নয়ন ও যান্ত্রিকরণের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ফলে দিনে দিনে যেভাবে মনোরোগ ও মানসিক সমস্যা বাড়ছে, তাতে এ বিষয়ে যথাযথ মনোযোগ দেওয়া অপরিহার্য। নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সময় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসার বিষয়টিকে জরুরিভাবে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি এখন বিদ্যমান বাস্তবতার দাবি।

   

আইপিইউর এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপের চেয়ারম্যান হলেন স্পিকার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী

  • Font increase
  • Font Decrease

ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপের এক বছরের জন্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। 

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

১৪৮তম আইপিইউ অ্যাসেম্বলির গভর্নিং কাউন্সিলের সমাপনী সেশনে স্পিকারের অংশগ্রহণ বুববার (২৭ মার্চ) স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে ‘১৪৮তম আইপিইউ অ্যাসেম্বলি' উপলক্ষে অনুষ্ঠিত গভর্নিং কাউন্সিলের সমাপনী সেশনে বক্তব্য রাখেন।

এ সেশনে আইপিইউর প্রেসিডেন্ট ড. টুলিয়া অ্যকসন, আইপিইউ সেক্রেটারি জেনারেল মার্টিন চুংগংসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

;

ফটিকছড়িতে সেপটি ট্যাংকে পড়ে ‍শিশুর মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ফটিকছড়িতে সেপটি ট্যাংকে পড়ে ‍শিশুর মৃত্যু

ফটিকছড়িতে সেপটি ট্যাংকে পড়ে ‍শিশুর মৃত্যু

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে সেপটি ট্যাংকে পড়ে মো. রোহান (৫) নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে উপজেলার আজাদীবাজার এলাকার রনজুরহাট সংলগ্ন অলি আহমদ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহত শিশু রোহান ওই এলাকার প্রবাসী মো. শাহজাহানের ১ম সন্তান এবং রোহান স্থানীয় এক মাদ্রাসায় নুরানি বিভাগের শিক্ষার্থী।

নিহত রোহানের আপন মামা মো. আব্বাস বলেন, আমার বোনের পার্শ্ববর্তী ফুফু শাশুড়ির ঘরে টয়লেটের সেপটি ট্যাংক পরিষ্কার করার জন্য ট্যাংকির ঢাকনি তুলে সেখানে প্লাস্টিক দিয়ে ডেকে রাখা হয়। ভাগনে রোহান বেশিরভাগ সময় ওই ঘরেই থাকে। আজকে দুর্ভাগ্যবশত রোহান ওই ট্যাংকিতে পড়ে যায়। সেখান থেকে উদ্ধার করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করে।

ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল হুদা জানান, ঘটনাটি আমরা শুনেছি। এ ঘটনায় থানায় এখনো কোনো অভিযোগ হয়নি।

;

প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইন: নৈরাজ্য ও নিরাপত্তাহীনতা বাড়বে সড়কে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সড়ক পরিবহন (সংশোধন) আইন, ২০২৪ এর কয়েকটি ধারায় শাস্তি ও জরিমানার পরিমাণ কমানোর উদ্যোগে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তরুণ শিক্ষার্থীদের অভূতপূর্ব আন্দোলনের প্রেক্ষিতে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ প্রণীত হওয়ার পর তার কার্যকর বাস্তবায়ন দূরে থাক, সড়কে বিশৃঙ্খলা, অনাচার ও নিরাপত্তাহীনতার মাত্রা ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েছে। টিআইবি মনে করে, জনস্বার্থ বিবর্জিত প্রস্তাবিত সংশোধনীর ফলে আইনটি তার উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে আরো দুর্বল হয়ে পড়বে এবং মালিক-শ্রমিক পক্ষের হাতে সড়ক ব্যবস্থাপনার জিম্মিদশা আরো বাড়বে।

গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, আইনের অন্তত ১২টি ধারায় পরিবর্তন এনে এবং অধিকাংশ ধারায় চালক ও চালকের সহকারীদের জেল জরিমানা ও শাস্তি কমিয়ে সড়ক পরিবহন সংশোধন আইন-২০২৪ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সংবাদ সূত্রে জানা যাচ্ছে, আইনের ৬৯, ৭০, ৮১, ৮৪, ৮৫, ৮৬, ৯০, ৯৮, ১০৫ ধারায় শাস্তি ও জরিমানার পরিমাণ কমানো হয়েছে।

তবে সড়ক পরিবহন আইন ২০২৪-এ যানবাহনের বিমা বাধ্যতামূলক করা [ধারা ৬০ (২)], সুপারভাইজার সংযুক্ত করা [ধারা ৭১] এবং গণপরিবহনে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন অথবা নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বা আদায় সংক্রান্ত ধারা লঙ্ঘনের দণ্ড আলাদাভাবে করা [ধারা ৮০] হয়েছে। এ তিনটি সংশোধনীর সঙ্গে টিআইবির গবেষণালব্ধ সুপারিশের সামঞ্জস্য থাকায় সতর্ক সাধুবাধ জানিয়ে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলায় এনে তা জনগণের জন্য নিরাপদ করে তুলতে যেখানে জরিমানা ও শাস্তির বিধান যৌক্তিকভাবে বাড়ানো প্রয়োজন ছিলো, সেখানে সংশোধনীর মাধ্যমে শাস্তি কমিয়ে দেওয়া হলে সড়কে বিশৃঙ্খলা বাড়াবে এবং জনগণের জন্য আরো বেশি অনিরাপদ হয়ে উঠবে। একইসঙ্গে, চালক-শ্রমিকদের আইন না মানার প্রবণতার পাশাপাশি সড়কে অনিয়মকেও উৎসাহিত করবে। সড়ককে নিরাপদ করে তুলতে নানা উদ্যোগের কথা বলা হলেও, অবস্থাদৃষ্টে সরকারের অবস্থান ঠিক তার উল্টোদিকে বলে প্রতীয়মান হয়। এমন সংশোধনের ফলে সড়কে অনিয়ম-দুর্নীতি, নৈরাজ্য আরো বৃদ্ধি পাওয়ার ঝুঁকি যেমন সৃষ্টি হবে, তেমনি সড়ক-মহাসড়কে অনাকাঙ্খিত মর্মান্তিক মৃত্যুর মিছিল কেবল দীর্ঘই করবে।’

টিআইবির সাম্প্রতিক গবেষণায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকপক্ষের হাতে সড়ক ব্যবস্থাপনার জিম্মিদশার প্রকটতার বিষয়টি উঠে আসে উল্লেখ করে ড. জামান বলেন, ‘সড়ক আইনের সংশোধনের মাধ্যমে শাস্তি ও জরিমানা কমিয়ে আনার বিষয়টি এ জিম্মিদশার সঙ্গে দৃশ্যত সম্পর্কিত। আইনে সংশোধন এনে শাস্তি কমানোর পেছনে সরকারের ওপর রাজনৈতিক মদদপুষ্ট মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের যে প্রভাব রয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। এই সংশোধনী সংসদে গৃহীত হলে জনগণের স্বার্থ ভূলুণ্ঠিত হবে। এ আত্মঘাতী পথ থেকে সরে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

সংশোধন প্রক্রিয়ার কোনো ধাপেই প্রস্তাবিত সংশোধনীর খসড়া খাতসংশ্লিষ্ট অংশীজনদের জন্য উন্মুক্ত না করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। টিআইবি মনে করে, সড়কে জনগণের চাহিদা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রেক্ষিতে যাদের শৃঙ্খলায় আনতে আইনটি তৈরি করা হয়েছে, তাদের চাপে এবং স্বার্থে আইনের সংশোধন করা হলে আইনের সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। একইসঙ্গে যে উদ্দেশ্যে আইনটি করা হয়েছিল তা থেকে সরে দাঁড়ানো হবে। এমতাবস্থায়, খসড়া আইনটি চূড়ান্ত করার পূর্বে বিশেষজ্ঞ এবং অন্যান্য অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে অগ্রসর হওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছে টিআইবি।

;

‘উপকূলীয় এলাকার পানির সমস্যা ভাবার ওয়াসার সময় হয়েছে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

 

উপকূলীয় এলাকার পানির সমস্যার দিকে ওয়াসার তাকানোর সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সুজিত কুমার বালা।

২৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) সকালে বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) – এর ‘কমিউনিটিভিত্তিক জলবায়ু সহনশীলতা ও নারীর ক্ষমতায়ন কর্মসূচি (ক্রিয়া)’ প্রকল্প আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ আয়োজনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘জলবায়ু ঝুঁকিপ্রবণ এলাকায় নিরাপদ পানির প্রাপ্যতা: প্রেক্ষিত জেন্ডার।’

ড. সুজিত কুমার বালা বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানির প্রাপ্যতার অভাব রয়েছে। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের সময় পানি সংকট আরও বেড়ে যায়। প্রাকৃতিকভাবে এই সংকট মোকাবিলার চেষ্টা চলছে, তবে তা পর্যাপ্ত নয়। ওয়াসা ঢাকাকেন্দ্রিক হলেও আমার মনে হয় এখন আমাদের উপকূলীয় এলাকার পানির সমস্যার দিকে তাকানোর সময় এসেছে।’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান। তিনি বলেন, ‘সারা দেশে মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষ পাইপ ওয়াটার সাপ্লাইয়ের সুবিধা ভোগ করছে আর নিরাপদ পানির সুবিধা আছে ৬০ শতাংশ মানুষের। এ ছাড়া পানির লবণাক্ততা ২৬ মিলিয়ন মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত লবণ পানি ব্যবহারের কারণে শিশুমৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ছে।

‘পানি সংগ্রহ থেকে শুরু করে সরবরাহ পর্যন্ত নারীদের সম্পৃক্ততা বেশি থাকার কারণে বৈশ্বিকভাবে তাদের ‘ওয়াটার ম্যানেজার’ বলা হয়। কিন্তু পানি সংগ্রহের কাজে অতিরিক্ত সময় দিতে গিয়ে নারীরা আয় বৃদ্ধিমূলক ও কৃষি কাজে অংশ নিতে পারে না। এতে আর্থিকভাবে তারা পিছিয়ে থাকছেন।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ-এর নির্বাহী পরিচালক এসএমএ রশিদ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর-এর নির্বাহী প্রকৌশলী শর্মিষ্ঠা দেবনাথ, সুইডেন দূতাবাসের উন্নয়ন সহযোগিতা বিভাগের প্রোগ্রাম অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ধরিত্রী কুমার সরকার ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোঃ রবিউল আলম।

ক্রিয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন এলাকা থেকে পানি নিয়ে ভুক্তভোগী দুজন নারী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তাদের সমস্যার কথা জানান। পানির অপ্রাপ্যতা, সংগ্রহ করার জটিলতা, অনিরাপদ পানি ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব, লবণাক্ততার কারণে পারিবারিক সহিংসতা বৃদ্ধির কথা তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানের সভাপ্রধান এমজেএফ-এর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘পানির যোগান দিতে গিয়ে নারীরা নানাভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। সুপেয় পানি একটি মানবাধিকার। আমরা পানি নিয়ে নানা সংকটের কথা আলোচনা করি কিন্তু নারীদের দুর্ভোগের বিষয়টি অত গুরুত্ব পায় না।

‘এসব সমস্যার সমাধানে চাই সামষ্টিক উদ্যোগ। সরকারের একার পক্ষে সব সম্ভব নয়। তাই আমাদের মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারের সঙ্গে মিলে কাজ করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’

আলোচনা শেষে শাহীন আনাম অতিথিদের আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখান। প্রদর্শনীর বিষয় ছিল ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও নারীর দুর্বলতা।’

;