নির্মাণকাজ শেষ না করেই উদ্বোধন হচ্ছে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্ক
রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাই-টেক পার্কের কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে আগামী বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি)। ওই দিন সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হাই-টেক পার্কটির কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘হাই-টেক পার্কটির দু’টি অংশ। মূল পার্কটি ১০ তলা ভবন। সেটির নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এর পাশে পাঁচতলা বিশিষ্ট আইটি ইনকিউবেটর কাম ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। সেটি পুরোপুরি প্রস্তুত। সেখানে হাই-টেক পার্কের কার্যক্রম শুরু করা হবে।’
উদ্বোধনী পর্বের আয়োজন বিষয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সাথে রোববার দুপুরে মতবিনিময় করেন হোসনে আরা বেগম। এসময় তারা পার্কের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি এবং ট্রেনিং সেন্টারের উদ্বোধনী পর্বের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা বিষয়ে আলোচনা করেন।
মতবিনিময়কালে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাসিকের প্যানেল মেয়র রজব আলী, ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল হোসেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাই-টেক পার্ক রাজশাহীর উপ-প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুল কবীর, সহকারী প্রকৌশলী মো. নূরুল ইসলাম প্রমুখ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই রাজশাহী মহানগরীর জিয়ানগর এলাকায় ৩১ দশমিক ৬৩ একর জমির উপর ২৮১ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে হাই-টেক পার্কটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
অনুমোদিত প্রকল্প অনুযায়ী-যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালির আদলে নির্মাণাধীন পার্কটির দু’টি অংশ থাকবে। মূল পার্কটি হবে ১০ তলা বিশিষ্ট এবং পাশে ৬২ হাজার বর্গফুট আয়তনের পাঁচতলা বিশিষ্ট ইনকিউবেটর কাম ট্রেনিং সেন্টার থাকবে। নির্মাণ শেষে পার্কটি পুরোপুরি চালু হলে সেখানে আইসিটিতে দক্ষ ১৪ হাজার বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।
এদিকে, রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর জিয়ানগরে হাই-টেক পার্ক এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ১৭ কোটি ২০ লাখ ৫১ হাজার টাকা ব্যয়ে ইনকিউবেটর কাম ট্রেনিং সেন্টারটির নির্মাণ কাজ শেষ। সেটি ব্যবহারের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। তবে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় এই ট্রেনিং সেন্টারটি ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মাণ শেষ করার কথা ছিল। পরে সময়সীমা বাড়িয়ে ২০২০ সালের ২০ মার্চ নির্ধারণ করা হয়।
অপরদিকে, হাই-টেক পার্কের জন্য ১০ তলা বিশিষ্ট মূলভবনটির অর্ধেক নির্মাণকাজও শেষ করা সম্ভব হয়নি। ৫ তলা পর্যন্ত ভবন তোলা হয়েছে। বাউন্ডারি ঘেরা পুরো এলাকায় নির্মাণসামগ্রী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানকার নির্মাণ শ্রমিকরা জানান, যে গতিতে কাজ চলছে, তাতে আরও সাড়ে তিন থেকে চার বছর লেগে যাবে পার্কটি চালু করতে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দু’জন শ্রমিক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘যত দিন গড়াবে ততই প্রকল্পের ব্যয় বাড়বে। দুই থেকে তিন দফা এক্সটেনশন করতে পারলে ঠিকাদার বেশি লাভবান হবে। কাজের গতি দেখে বোঝা যাচ্ছে- পুরো কাজ শেষ করার আগেই প্রকল্পের বরাদ্দ এক্সটেনশন হবে।’
তবে সেখানে দায়িত্বরত কয়েকজন প্রকৌশলীর সাথে নির্মাণকাজ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তার জানান, প্রকল্প বিষয়ে অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের তথ্য দেওয়া আমাদের নিষেধ রয়েছে। আপনি প্রকল্প পরিচালককে লিখিত দিলে তথ্য পাবেন।