অসময়ে বাজারে তরমুজ, ক্রেতারা ভিড় জমালেও নেই বিক্রি
ঋতুরাজ বসন্ত শুরু হলেও রাজশাহীতে এখনও কাটেনি শীতের আমেজ। অথচ বাজারে গেলেই চোখে পড়ছে গ্রীষ্মের ফল তরমুজ। তা দেখতে ভিড় জমাচ্ছে মানুষ। তবে দর-কষাকষির দৃশ্য চোখে পড়লেও বিক্রি নেই বলছেন ব্যবসায়ীরা।
বিক্রেতারা বলছেন- আগাম জাতের এসব তরমুজ জমিতে লাগানোর পরই চুক্তিভিত্তিকে চাষিদের কাছ থেকে কিনেছিলেন তারা। গাছে আগাম যা ধরেছিল, তা পরিপক্ক হওয়ায় তুলে আড়তে এনে রেখেছেন। ফাল্গুন মাস শুরু হওয়ায় বাজারে বিক্রির জন্য আনলেও ক্রেতাদের চাহিদা নেই।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার, লক্ষ্মীপুর মোড়, বিনোদপুর, হড়গ্রাম, স্টেশন এলাকা ঘুরে আগাম জাতের তরমুজ বিক্রি করতে দেখা যায়। সব বিক্রেতা নগরীর শালবাগানের পাইকারি আড়ত থেকে এসব তরমুজ কিনেছেন বলে জানালেন। খুচরায় প্রতি কেজি তরমুজের দর ৫০ টাকা হাঁকছেন তারা।
নগরীর সাহেব বাজার মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজার থেকে তরমুজ কিনে ফিরছিলেন রাইসুল ইসলাম। তিনি বলেন, শীতে তো তরমুজ দেখা যায় না। কেনার সময় খেয়ে দেখলাম, স্বাদও খুব একটা ভাল না। তবে আমার মেয়ে তরমুজ খুব পছন্দ করে। বাজারে নতুন এসেছে দেখে ওর জন্যই কিনলাম।’
দর কষাকষি করছেন আরেক ক্রেতা সাব্বির আহমেদ। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে খুব ভালো স্বাদের হবে না। তবুও বাজারে নতুন এসেছে, দেখে লোভ সামলাতে পারছি না। তাই কেনার জন্য দাম করছিলাম। তবে দাম বেশি চাইছে, তাই কেনা হয়নি।’
বিক্রেতা সাইদুজ্জামান বলেন, আমি মৌসুমী ফলের ব্যবসা করি। এখন বিভিন্ন প্রকারের কুল আর পেয়ারা বিক্রি করছি। আমি যে আড়ত থেকে পাইকারি দরে ফল কিনি, তিনি এক চাষির সঙ্গে আগাম চুক্তি করেছিলেন। এখন তরমুজ আগেই পরিপক্ক হওয়ায় চুক্তি অনুযায়ী তাকে জমি থেকে তরমুজ তুলে আড়তে রাখতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, অন্য ফলের সঙ্গে আড়ত মালিক জোর করে তরমুজও দিয়ে দিয়েছেন আজ। বাধ্য হয়ে বাজারে নিয়ে এসেছিলাম। তবে বিক্রি নেই। সবাই দেখছে, কিন্তু কিনছে না কেউই।’
আড়তদার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আগাম জাতের আনারকলি, অলক্লিন, চায়না-২, এশিয়ান-২ তরমুজ পরিপক্ক হয়ে গেছে। চাষির সঙ্গে চুক্তি করে ফেঁসে গেছি। ভাবছিলাম চৈত্র মাসে তরমুজ উঠবে। কিন্তু এখন দেখি- ফাল্গুনে উঠে গেছে। বাধ্য হয়ে আড়তে এনেছি। রাখলে নষ্ট হবে, তার চেয়ে কয়েকজন বিক্রেতাকে দিয়ে বাজারে পাঠিয়েছি। দেখা যাক- কেমন বিক্রি হয়।