বাঘ শুমারির ফলাফল কবে হবে?



আশরাফুল ইসলাম নূর, ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

খুলনা: বাংলাদেশের জাতীয় প্রাণী ও বীরত্বের প্রতীক ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’। তবে নির্বিকারে বন উজাড়, নানা ভাবে হত্যা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে এ প্রাণীটি আজ বিপন্নের পথে। ২০০৪ সালের গবেষণায় সুন্দরবনে ৪৪০টি এবং ২০১৫ সালের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী ১০৬টি বাঘ রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে বাঘ প্রকল্প ক্যামেরা ট্রপিংয়ের মাধ্যমে গণনা শুরু করে মে মাসে সম্পন্ন হয়। কিন্তু ফলাফল এখনো ঘোষণা করা হয়নি। বাঘের সংখ্যা বাড়বে না কমতে পারে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন সংশ্লিষ্টরা।

এ অবস্থায় আগামী ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবসের মূল কর্মসূচি পালিত হবে খুলনায়। ওইদিন সকাল ১০টায় শহীদ হাদিস পার্ক হতে বর্ণাঢ্য র‌্যালির পরে খুলনা অফিসার্স ক্লাবে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব। গেস্ট অব অনার থাকবেন খুলনা সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধান বন সংরক্ষক মোহাম্মদ সফিউল আলম চৌধুরী। এ বছর অষ্টমবারের মতো বিশ্ব বাঘ দিবস পালিত হবে।

তথ্য অনুযায়ী, ২০০৪ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে সুন্দরবনে বাঘ রয়েছে ৪৪০টি। এরমধ্যে পুরুষ ১২১টি, স্ত্রী ২৯৮টি এবং বাচ্চা রয়েছে ২১টি। ২০১০ সালে জানুয়ারিতে থাইল্যান্ডের হুয়ানে অনুষ্ঠিত হয় টাইগার রেঞ্জ দেশ সমূহের ‘এশিয়া মিনিস্ট্রয়াল কনফারেন্স’। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, প্রতি বছর ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস পালিত হবে। ওই সাল থেকে এ দিবসটি পালিত হয়। সম্মেলনে বাঘ সংরক্ষণে নয় দফা পরিকল্পনা গৃহীত হয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ২০২০ সালের মধ্যে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করা। ২০১৫ সালে ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে বাঘ গণনা করা হয়। এতে সুন্দরবনে ১০৬টি বাঘের অস্তিত্বের সন্ধান পাওয়া যায়।

/uploads/files/fV09In3pcAU1Fty0I3K0gOO5l0dO8TTm7ojNosIz.jpeg

২০১৬ সালে আমেরিকার দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি অর্থায়নে বাঘ প্রকল্পের মাধ্যমে ক্যামেরার সাহায্যে গণনা করে। খুলনা বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এ প্রকল্পকে জনবল ও ৭০টি ডিজিটাল ক্যামেরা সরবরাহ করে। গত ফেব্রুয়ারিতে বাঘ প্রকল্প ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে গণনার কাজ শুরু হয়। গেল মে মাসে প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়। সুন্দরবনের তিনটি অভয়ারণ্য এলাকায় গাছের সঙ্গে ক্যামেরা বেঁধে এর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়। তবে এখনো ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। বাঘের সংখ্যা বাড়বে না কমতে পারে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মদিনুল আহসান বলেন, ‘কেবল মাত্র মাঠ পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। এ প্রতিবেদন তৈরি করতে সময়ের প্রয়োজন। তবে বাঘের সংখ্যা কমবে না বাড়তে পারে তা বলা যাচ্ছে না। বাঘ সংরক্ষণে মনিটরিং, টহল ব্যবস্থা জোরদার এবং বনরক্ষীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।’

বাঘ প্রকল্পের গবেষণা কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মোজাহিদ জানান, প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। বাঘের সংখ্যা প্রকাশ করবে সরকার। তবে বাঘের সংখ্যা বাড়তে পারে।

খুলনা সার্কেলের উপ-বন সংরক্ষক মো. মাহবুবুর রহমান জানান, বাঘ গণনার প্রতিবেদন প্রকাশিত না হলে কিছুই বলা যাচ্ছে না। আগের চেয়ে এখন অধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে গণনা করা হচ্ছে।

/uploads/files/oeOQFg50e2U4lsLqT3ttOOd4O4pgExJcYynt4slq.jpeg

পশ্চিম বন বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. বশিরুল-আল-মামুন জানান, বাঘ শুমারি একটা কঠিন কাজ। আধুনিক পদ্ধতিতে গণনা হচ্ছে। প্রতিবেদন প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, বিশ্বের ১৩টি দেশে বাঘের অস্তিত্ব রয়েছে। ১৩টি বাঘ সমৃদ্ধ দেশকে বলা হয় ‘টাইগার রেঞ্জ কান্ট্রি’। বাঘ সমৃদ্ধ দেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, বার্মা, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ভুটান, লাওস, নেপাল ও রাশিয়া। বাঘের নয়টি উপ-প্রজাতির মধ্যে বালিনিজ, জাভানিজ ও কাম্পিয়ান টাইগার বিশ্ব হতে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সাইবেরিয়ান, সুমাত্রান, সাউথ চায়না ও ইন্দো চায়না উপ-প্রজাতি টিকে আছে। সারা বিশ্বে লক্ষাধিক বাঘ ছিল। ২০১৫ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে বাঘের সংখ্যা মাত্র চার হাজার। আর সুন্দরবনে সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয় বাঘের সংখ্যা রয়েছে মোট ১০৬টি।

   

আরসার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে: র‌্যাব



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার বিরুদ্ধে র‌্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে। কোন প্রকার তথ্য পেলেই অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে এক প্রশ্নের উত্তরে র‌্যাবের মিডিয়া অ্যান্ড লিগ্যাল উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটা আতঙ্কের নাম আরসা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এই আরসা গোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে হত্যাকানণ্ড অপহরণসহ নানান অপরাধের সাথে জড়িত। এর আগে আমরা নানা ধরনের অভিযান পরিচালনা করে এখন পর্যন্ত ১১০ জন আরসা সদস্যকে গ্রেফতার করেছি এবং বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও অস্ত্র সরঞ্জামাদী উদ্ধার করেছি।

তিনি আরও বলেন, র‍্যাবের অব্যাহত নজরদারি, গোয়েন্দা তাৎপরতা অভিযানের প্রেক্ষিতে আরসা নেতৃত্ব শূন্য হয়ে যায়। পাশের দেশ থেকে অস্ত্র আসছে এমন গোয়েন্দা তথ্য থেকে আমরা গতকাল অভিযান চালিয়ে দুইজন কে গ্রেফতার করেছি।

আরাফাত বলেন, আরসার এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে নিষ্ক্রিয় রাখতে আমরা স্থানীয় থানা এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রাখছি। আমরা তাদের ট্র্যাকিং করছি এবং তাদের বিরুদ্ধে আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে। আমরা যখনই কোন তথ্য পাচ্ছি আমরা অভিযান চালাচ্ছি।

গত বুধবার ভোর রাতে কক্সবাজারের উখিয়ার গহিন পাহাড়ে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট শেল উদ্ধার করেছে র‍্যাব। এ অভিযানের সময় আরসা কমান্ডার মাস্টার সলিমুল্লাহ (৩৮) এবং তার সহযোগী মো. রিয়াজকে (২৭) গ্রেফতার করা হয়। তারা দুজনই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক।

;

উত্তরা, উত্তরখান এলাকায় শনিবার গ্যাসের কম থাকবে



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
উত্তরা, উত্তরখান এলাকায় শনিবার গ্যাসের কম থাকবে

উত্তরা, উত্তরখান এলাকায় শনিবার গ্যাসের কম থাকবে

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্যাস পাইপলাইনে নির্মাণের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণ খান এলাকায় গ্যাস সরবরাহ কম থাকবে।

শুক্রবার (১৭ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

এতে বলা হয়েছে, শনিবার সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত মোট ১৫ ঘণ্টা উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণ খান ও এর আশপাশের এলাকায় গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করবে। গ্রাহকবৃন্দের সাময়িক অসুবিধার জন্য তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

;

চিংড়ি ঘেরে মিলল জোড়া লাশ, শর্ট সার্কিট দিয়ে হত্যার অভিযোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজার শহরের খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে চিংড়ি ঘের থেকে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহ দুটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর জানায় স্থানীয়রা।

শুক্রবার (১৭ মে) সকাল ১১ টায় খুরুশকুল মনুপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে এ মরদেহ দুটি পড়ে থাকতে দেখেছে স্থানীয় লোকজন।

নিহতরা হলেন, খুরুশকুল মনু পাড়া এলাকার বাসিন্দা জামালের ছেলে আবদুল খালেক (২৫) এবং আবু তাহেরের ছেলে মো. ইয়াছিন। উভয়ের বাড়ি খুরুশকুল মনু পাড়া এলাকায়। তারা দুইজনে পেশায় মৎস্যজীবী বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।

খুরুশকুলের চেয়ারম্যান শাহজাহান সিদ্দিকী জানিয়েছেন, গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে এসেছেন। মরদেহ দুটি প্রত্যক্ষ করে দেখেছেন তাদের শরীরে একাধিক বৈদ্যুতিক শর্টের চিহ্ন রয়েছে। তারা দুইজন মনুপাড়া এলাকার বাসিন্দা বলে জানান তিনি।

নিহত ইয়াছিন আরাফাতের মা জানিয়েছেন, তার ছেলে গতকাল রাত ১০টার সময় বাড়ি থেকে বের হয়। আজকে সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তবে কে বা কারা তাদের হত্যা করেছে সে বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান তিনি। হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে ছেলে হত্যার সঠিক বিচার দাবি করেন তিনি।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাদের গায়ে মারধরের এবং বৈদ্যুতিক শর্টের আঘাত রয়েছে। কে বা কারা তাদের মেরে ফেলে রেখেছে সেই বিষয়ে এখনো কেউ কিছু বলছে না।

তবে চেয়ারম্যান শাহজাহান সিদ্দিকী এবং সেখানকার ইউপি সদস্য নাসির উদ্দীনের দাবি সাবেক ইউপি সদস্য শামসুল হুদার মাছের ঘেরে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ এর শর্ট সার্কিট দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) শাকিল হাসান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে একজনের পায়ে এবং আরেকজনের বাঁ হাতের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের পর হত্যার মূল কারণ জানা যাবে।

;

দীর্ঘ শত্রুতা ও প্রতিশোধের জেরে হত্যাকাণ্ড, গ্রেফতার ৪



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নড়াইলের লোহাগড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিকদার মোস্তফা কামালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

গ্রেফতারকৃতরা হল- প্রধান আসামি শুটার সাজেদুল মল্লিক (২৫), পাভেল শেখ (২৮), মামুন মোল্যা (২৬) ও মো. রহমত উল্লাহ শেখ (১৯)।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের বায়েজিদ ও নড়াইল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা উক্ত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছে বলে জানান র‍্যাব।

র‍্যাব জানায়, দীর্ঘ বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। ভুক্তভোগী নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপন এর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে শত্রুতা বিরাজমান ছিল।

শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম। 

তিনি বলেন, গত ১০ মে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালকে দুর্বৃত্তরা অতর্কিত হামলা করে ও এলোপাথারি গুলি করে হত্যা করেন। ওই ঘটনায় ভিকটিমের বড় ভাই বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। একজন সাবেক ইউপি সদস্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে র‌্যাব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে মাঠে নামে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে)  রাতে র‌্যাব-৬, র‌্যাব-৭ এবং র‌্যাব-১০ এর যৌথ আভিযানে  ওই  হত্যার ঘটনায় জড়িত শুটারসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

আসামিদের বরাত দিয়ে কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, দীর্ঘ বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। ভুক্তভোগী নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপনের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে শত্রুতা বিরাজমান ছিল।

তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে পূর্ব বিরোধের জের ধরে ভুক্তভোগী মোস্তফা কামাল এবং আকবর হোসেন লিপনের অনুসারীদের মধ্যে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে লিপন গুরুতর আহত হয় এবং তার একটি হাত কাটা পড়ে। পরবর্তীতে লিপন ও তার অনুসারীরা মোস্তফা কামাল এর উপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে। লিপনের নির্দেশনায় ঘটনার দিন সকালে তার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা ভিকটিম মোস্তফা কামালকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী মোস্তফা কামালের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃত সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা সুইচ গিয়ার চাকু, রাম দাসহ বিদেশি অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে ওৎ পেতে থাকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছানো মাত্রই সুযোগ বুঝে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলের হাতে থাকা বিদেশি পিস্তল দিয়ে মোস্তফা কামালকে লক্ষ্য করে ৩ রাউন্ড গুলি করে; যার মধ্যে ২ রাউন্ড গুলি তার বুকে ও পিঠে লাগে।

র‍্যাব জানান, গ্রেফতারকৃত সাজেদুল স্থানীয় একটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর ১ম বর্ষের ছাত্র। সে আকবর হোসেন লিপন এর অন্যতম প্রধান সহযোগী। সে লিপনের নেতৃত্বে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতো বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি, চুরি ও চাঁদাবাজি সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত রহমত উল্লাহ শেখ পেশায় একজন শ্রমিক। সে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ মারামারি, ছিনতাই, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত সাজেদুল এর সহযোগী হিসেবে তাকে উক্ত হত্যাকান্ড সংঘটিত করার জন্য ১ লক্ষ টাকায় চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছিল এবং হত্যাকাণ্ডের সময় সে গ্রেফতারকৃত সাজেদুল সাথে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিল বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি সংক্রান্ত ১টি মামলা রয়েছে এবং উক্ত মামলায় কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত পাভেল স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এইচএচসি পর্যন্ত পড়ালেখা করে। সে লিপনের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি ও চুরি সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত মামুন মোল্যা পেশায় একজন গাড়ি চালক। সে লিপনের নেতৃত্বে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। তার কাছে থাকা ছুরি চাকুসহ অন্যান্য দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে মোস্তফা কামালকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি ও চুরি সংক্রান্ত ২টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

;