রাজশাহীতে প্রচারণায় এগিয়ে আ.লীগ, ব্যালটে নিরব বিপ্লবের আশায় বিএনপি



  জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহী থেকে: রাজশাহী নগরীর অলি গলি থেকে মহল্লার চায়ের দোকান সর্বত্রই এখন সরব শেষ মূহুর্তের প্রচারণায়। শনিবার (২৮ জুলাই) রাত ১২টার পর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে সব ধরনের প্রচারণা।

গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি, কখনও রোদ বৃষ্টির খেলা বা ঝিমঝিম শব্দে অঝোর ধারার বৃষ্টি। কোন কিছুতেই থেমে থাকছে না শেষ মূহুর্তের এই প্রচারণা।

ট্রেন থেকে রাজশাহী রেল স্টেশনে নামা মাত্রই প্রচারণার মাত্রাটা নজর কাড়ে। টিকেট কাউন্টারের গোটা চত্বর জুড়ে ঝুলছে সারি সারি পোস্টার। সবগুলোই নৌকা প্রতীকের।

স্টেশন থেকে বের হতেই ভিন্ন এক নগরী। মনে হবে নির্বাচনী উৎসব। নগরীর আনাচে কানাচে বিল বোর্ড,পোস্টার,মাইকিং। রয়েছে পথে পথে গম্ভীরার মুখ্য চরিত্রে নানা-নাতি মুখে উন্নয়ন আর আশ্বাসের বর্ণনা দেয়া দলবদ্ধ লোক সঙ্গীতের আসর।

তবে সব প্রচারণাই যেন ঢেকে পড়েছে নৌকা প্রতীকের আড়ালে। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।

এ মাথা থেকে সে মাথা। ৯৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই নগরীতে ধানের শীষ প্রতীকের ব্যানার,ফেস্টুন বা বিল বোর্ড খুঁজে পেতে চোখকে বেশ কষ্টই দিতে হয়!

সে তুলনায় কাঁঠাল প্রতীকে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (নাজিউর) হাবিবুর রহমান,হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শফিকুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনের মুরাদ মোর্শেদের হাতি প্রতীকের প্রচারণাও বেশ।

এতো গেলো বৃষ্টিভেজা নগরীর অলিগলির কথা। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও সরব প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকরা।

/uploads/files/UNCIzpIe11EKsQKbryFaxT5Zj08clhbdySIyqP4e.jpeg

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও যেন দখল করে নিয়েছে নৌকা। সব বিবেচনায় প্রচারণায় নৌকা যে এগিয়ে আছে সেটা মানতে দ্বিধা নেই কারো। নির্বাচনী পরিবেশে  নৌকার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা ধানের শীষের প্রচারণায় পিছিয়ে থাকার জায়গাগুলো দখল করে নিয়েছে নানা গুজবে।

"বিএনপি নেতা গয়েশ্বর রায়কে বিমান থেকে নামিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া, গয়েশ্বর রায়কে সি-অফ করতে যাওয়া বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনুসহ ১০ নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করে বিমানবন্দর থানায় নেয়া,বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল যুবলীগ নামধারী সন্ত্রাসীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত" ছবি কারসাজির মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এমন অসংখ্য গুজব ছড়িয়ে শান্ত নগরীকে অশান্ত করার পাঁয়তারা করার বিস্তর নমুনা চোখে পড়ে ফেসবুক টুইটার বা ইনস্ট্রাগ্রামে।

আচানক পরিকল্পিতভাবে এসব গুজব ছড়ানোর বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা,নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে নগরবাসীকে বার বার সতর্ক করা হলেও কাটেনি গুজবের রেশ।

ফেসবুকে বিএনপি সমর্থক বাবু নামের একটি আইডি থেকে রাজশাহী সিটি নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পায়ে গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত একটি ছবি প্রকাশিত হয়।সেখানে ফটোশপের মাধ্যমে কারসাজি করে গুলিবিদ্ধ বুলবুলের পা থেকে রক্ত ঝরার ছবিও জুড়ে দেয়া হয়। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা কথিত গুলিবিদ্ধ বুলবুলের ছবির নিচে ক্যাপশনে লেখা হয়, বুলবুলের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতার করে কঠিন শাস্তি দিতে হবে। পাশাপাশি হামলার নিন্দাটাও জানানো হয় ওই পোস্টে

যোগাযোগ করা হলে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন,কারা,কেন এসব গুজব রটাচ্ছে তা আমার জানা নেই।

তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, প্রচারণায় টিকে থাকতে না পেরে অপ-প্রচারণার মাধ্যমে পরিকল্পিত গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টায় লিপ্ত বিএনপি। এটা তাদের এক ধরনের কৌশল। পুরনো খেলা।

রাজশাহীতে ভোটকেন্দ্রে ১৩৮টি। তিন লাখ ১৮ হাজার ১৩৮ ভোটারের দিকে তাকিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মেয়র পদে পাঁচজন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১শ'৬০ এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৫২ জন প্রার্থী ।

/uploads/files/KgxNTs8A99MOnys9cr25vqZzzwoZjPaty2nnjY3D.jpeg

যে আয়োজন নির্বিঘ্ন করতে সব প্রস্তুতি গুছিয়ে এসেছে নির্বাচন কমিশন।তাদের সহায়তায় থাকছে ১৪শ' পুলিশ, ১৯শ'৩২ আনসার ও ৪শ'৫০ জন র‌্যাব সদস্য ছাড়াও ১৯ প্লাটুন বিজিবি সদস্যে ৩০ জন নির্বাহী ও ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।

এর মধ্যে শনিবার সকাল থেকে টহলে নেমেছে ১৫ প্লাটুন।রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে প্রস্তুত রয়েছে ৪ প্লাটুন বিজিবি।আগের মেয়াদে দায়িত্ব পালন করা আওয়ামী লীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন

২০১৩ সালের রাজশাহী সিটি করপোরেশনে নির্দলীয় নির্বাচনে হেরেছিলেন বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের কাছে।

৪৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে সেই হার রাজশাহী মতো দূর্গে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছিল আওয়ামী লীগকে।

অন্যদিকে প্রচারে পিছিয়ে থাকলেও বিএনপির প্রত্যাশা ভোটে "নিরব বিপ্লবের"। তবে গতবারের সেই ধাক্কা কাটিয়ে আওয়ামী লীগ আগের চাইতে আরো বেশী আত্নবিশ্বাসী। এবার চ্যালেঞ্জও কম নয়। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন।

নগরীর মানুষের রায় নিজেদের পক্ষে নেবার বিষয়েও আশাবাদী আওয়ামী লীগ। তবে ভোটের সেই ব্যবধান কাটিয়ে মেয়র পদে নগর পিতা হবেন রাজশাহী মহানগরীর?

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সদস্য এবং জাতীয় নেতা শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামানের সন্তান এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন  নাকি মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল?

আগামী ৩০ জুলাই নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে এই  প্রশ্নের জবাব দেবেন আম আর সিল্কের নগরী রাজশাহী।

   

আরসার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে: র‌্যাব



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার বিরুদ্ধে র‌্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে। কোন প্রকার তথ্য পেলেই অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে এক প্রশ্নের উত্তরে র‌্যাবের মিডিয়া অ্যান্ড লিগ্যাল উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটা আতঙ্কের নাম আরসা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এই আরসা গোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে হত্যাকানণ্ড অপহরণসহ নানান অপরাধের সাথে জড়িত। এর আগে আমরা নানা ধরনের অভিযান পরিচালনা করে এখন পর্যন্ত ১১০ জন আরসা সদস্যকে গ্রেফতার করেছি এবং বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও অস্ত্র সরঞ্জামাদী উদ্ধার করেছি।

তিনি আরও বলেন, র‍্যাবের অব্যাহত নজরদারি, গোয়েন্দা তাৎপরতা অভিযানের প্রেক্ষিতে আরসা নেতৃত্ব শূন্য হয়ে যায়। পাশের দেশ থেকে অস্ত্র আসছে এমন গোয়েন্দা তথ্য থেকে আমরা গতকাল অভিযান চালিয়ে দুইজন কে গ্রেফতার করেছি।

আরাফাত বলেন, আরসার এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে নিষ্ক্রিয় রাখতে আমরা স্থানীয় থানা এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রাখছি। আমরা তাদের ট্র্যাকিং করছি এবং তাদের বিরুদ্ধে আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে। আমরা যখনই কোন তথ্য পাচ্ছি আমরা অভিযান চালাচ্ছি।

গত বুধবার ভোর রাতে কক্সবাজারের উখিয়ার গহিন পাহাড়ে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট শেল উদ্ধার করেছে র‍্যাব। এ অভিযানের সময় আরসা কমান্ডার মাস্টার সলিমুল্লাহ (৩৮) এবং তার সহযোগী মো. রিয়াজকে (২৭) গ্রেফতার করা হয়। তারা দুজনই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক।

;

উত্তরা, উত্তরখান এলাকায় শনিবার গ্যাস কম থাকবে



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
উত্তরা, উত্তরখান এলাকায় শনিবার গ্যাসের কম থাকবে

উত্তরা, উত্তরখান এলাকায় শনিবার গ্যাসের কম থাকবে

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্যাস পাইপলাইনে নির্মাণের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণ খান এলাকায় গ্যাস সরবরাহ কম থাকবে।

শুক্রবার (১৭ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

এতে বলা হয়েছে, শনিবার সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত মোট ১৫ ঘণ্টা উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণ খান ও এর আশপাশের এলাকায় গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করবে। গ্রাহকবৃন্দের সাময়িক অসুবিধার জন্য তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

;

চিংড়ি ঘেরে মিলল ২ মরদেহ, শর্ট সার্কিট দিয়ে হত্যার অভিযোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজার শহরের খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে চিংড়ি ঘের থেকে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহ দুটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর জানায় স্থানীয়রা।

শুক্রবার (১৭ মে) সকাল ১১ টায় খুরুশকুল মনুপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে এ মরদেহ দুটি পড়ে থাকতে দেখেছে স্থানীয় লোকজন।

নিহতরা হলেন, খুরুশকুল মনু পাড়া এলাকার বাসিন্দা জামালের ছেলে আবদুল খালেক (২৫) এবং আবু তাহেরের ছেলে মো. ইয়াছিন। উভয়ের বাড়ি খুরুশকুল মনু পাড়া এলাকায়। তারা দুইজনে পেশায় মৎস্যজীবী বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।

খুরুশকুলের চেয়ারম্যান শাহজাহান সিদ্দিকী জানিয়েছেন, গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে এসেছেন। মরদেহ দুটি প্রত্যক্ষ করে দেখেছেন তাদের শরীরে একাধিক বৈদ্যুতিক শর্টের চিহ্ন রয়েছে। তারা দুইজন মনুপাড়া এলাকার বাসিন্দা বলে জানান তিনি।

নিহত ইয়াছিন আরাফাতের মা জানিয়েছেন, তার ছেলে গতকাল রাত ১০টার সময় বাড়ি থেকে বের হয়। আজকে সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তবে কে বা কারা তাদের হত্যা করেছে সে বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান তিনি। হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে ছেলে হত্যার সঠিক বিচার দাবি করেন তিনি।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাদের গায়ে মারধরের এবং বৈদ্যুতিক শর্টের আঘাত রয়েছে। কে বা কারা তাদের মেরে ফেলে রেখেছে সেই বিষয়ে এখনো কেউ কিছু বলছে না।

তবে চেয়ারম্যান শাহজাহান সিদ্দিকী এবং সেখানকার ইউপি সদস্য নাসির উদ্দীনের দাবি সাবেক ইউপি সদস্য শামসুল হুদার মাছের ঘেরে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ এর শর্ট সার্কিট দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) শাকিল হাসান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে একজনের পায়ে এবং আরেকজনের বাঁ হাতের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের পর হত্যার মূল কারণ জানা যাবে।

;

দীর্ঘ শত্রুতা ও প্রতিশোধের জেরে হত্যাকাণ্ড, গ্রেফতার ৪



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নড়াইলের লোহাগড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিকদার মোস্তফা কামালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

গ্রেফতারকৃতরা হল- প্রধান আসামি শুটার সাজেদুল মল্লিক (২৫), পাভেল শেখ (২৮), মামুন মোল্যা (২৬) ও মো. রহমত উল্লাহ শেখ (১৯)।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের বায়েজিদ ও নড়াইল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা উক্ত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছে বলে জানান র‍্যাব।

র‍্যাব জানায়, দীর্ঘ বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। ভুক্তভোগী নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপন এর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে শত্রুতা বিরাজমান ছিল।

শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম। 

তিনি বলেন, গত ১০ মে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালকে দুর্বৃত্তরা অতর্কিত হামলা করে ও এলোপাথারি গুলি করে হত্যা করেন। ওই ঘটনায় ভিকটিমের বড় ভাই বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। একজন সাবেক ইউপি সদস্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে র‌্যাব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে মাঠে নামে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে)  রাতে র‌্যাব-৬, র‌্যাব-৭ এবং র‌্যাব-১০ এর যৌথ আভিযানে  ওই  হত্যার ঘটনায় জড়িত শুটারসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

আসামিদের বরাত দিয়ে কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, দীর্ঘ বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। ভুক্তভোগী নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপনের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে শত্রুতা বিরাজমান ছিল।

তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে পূর্ব বিরোধের জের ধরে ভুক্তভোগী মোস্তফা কামাল এবং আকবর হোসেন লিপনের অনুসারীদের মধ্যে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে লিপন গুরুতর আহত হয় এবং তার একটি হাত কাটা পড়ে। পরবর্তীতে লিপন ও তার অনুসারীরা মোস্তফা কামাল এর উপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে। লিপনের নির্দেশনায় ঘটনার দিন সকালে তার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা ভিকটিম মোস্তফা কামালকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী মোস্তফা কামালের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃত সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা সুইচ গিয়ার চাকু, রাম দাসহ বিদেশি অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে ওৎ পেতে থাকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছানো মাত্রই সুযোগ বুঝে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলের হাতে থাকা বিদেশি পিস্তল দিয়ে মোস্তফা কামালকে লক্ষ্য করে ৩ রাউন্ড গুলি করে; যার মধ্যে ২ রাউন্ড গুলি তার বুকে ও পিঠে লাগে।

র‍্যাব জানান, গ্রেফতারকৃত সাজেদুল স্থানীয় একটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর ১ম বর্ষের ছাত্র। সে আকবর হোসেন লিপন এর অন্যতম প্রধান সহযোগী। সে লিপনের নেতৃত্বে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতো বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি, চুরি ও চাঁদাবাজি সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত রহমত উল্লাহ শেখ পেশায় একজন শ্রমিক। সে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ মারামারি, ছিনতাই, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত সাজেদুল এর সহযোগী হিসেবে তাকে উক্ত হত্যাকান্ড সংঘটিত করার জন্য ১ লক্ষ টাকায় চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছিল এবং হত্যাকাণ্ডের সময় সে গ্রেফতারকৃত সাজেদুল সাথে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিল বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি সংক্রান্ত ১টি মামলা রয়েছে এবং উক্ত মামলায় কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত পাভেল স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এইচএচসি পর্যন্ত পড়ালেখা করে। সে লিপনের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি ও চুরি সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত মামুন মোল্যা পেশায় একজন গাড়ি চালক। সে লিপনের নেতৃত্বে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। তার কাছে থাকা ছুরি চাকুসহ অন্যান্য দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে মোস্তফা কামালকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি ও চুরি সংক্রান্ত ২টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

;