শিলা বৃষ্টিতে লোকসানের শঙ্কায় আম চাষিরা

  • হাসান আদিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহীতে শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় ঝরে গেছে আমের মুকুল

রাজশাহীতে শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় ঝরে গেছে আমের মুকুল

বিকেলে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে রাজশাহীতে। সেই সাথে হয়েছে শিলা বৃষ্টি, বয়ে গেছে ঝড়ো বাতাস।

বুধবার (০৪ মার্চ) বিকেলে ৪টা ১০ মিনিটে শুরু হয় বৃষ্টি ও ঝড়, চলে বিকেল ৪টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস এই সময়ে ২৫ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।

বিজ্ঞাপন

আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক আব্দুস সালাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, বিকেলে টানা প্রায় ৪২ মিনিট বৃষ্টি হয়েছে। প্রথমে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হয়। মিনিট দশেক পর থেকে শিলা বৃষ্টি পড়ে। তবে সেটি হালকা মাত্রার শিলা বৃষ্টি ছিল।

বুধবার বিকেলে রাজশাহীতে শিলা বৃষ্টি হয়

তিনি আরও বলেন, বৃষ্টিপাতের সময়ে ঘণ্টায় ৮ দশমিক ৭ নটিক্যাল মাইল গতিতে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়, যা কিলোমিটারের হিসেবে ঘণ্টায় প্রায় ১৬ কিলোমিটার। এটা কালবৈশাখী নয়, মৌসুমী ঝড়। চলতি মাসে এমন আরও কয়েকটি ঝড় ও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান এই আবহাওয়াবিদ।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, বৃষ্টির সাথে হালকা শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় আমের মুকুলে ক্ষতির শঙ্কা করছেন আম চাষিরা। কৃষি অধিদফতরের কর্মকর্তা ও কৃষকরা বলছেন, রাজশাহীর গাছে গাছে এখন মুকুল ফুটে আমের গুঁটি বের হচ্ছে। এ সময়ে বৃষ্টি আমের জন্য ভালো হলেও শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় ক্ষতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রাজশাহীর বুধপাড়া এলাকার আম চাষি আব্দুস সামাদ বলেন, বৃষ্টির পরে বাগানে গিয়েছিলাম। কিছু মুকুল ভেঙে পড়েছে, অল্প পরিমাণে ছোট ছোট গুঁটিও ঝরে পড়েছে। তবে কেমন ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। রোদ বের হলে যে মুকুলগুলো শুকিয়ে যাবে, বুঝে নিতে হবে সেগুলো শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রাজশাহী কৃষি অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বার্তা২৪.কমকে বলেন, খুব ভারী শিলা বৃষ্টি হয়নি। এতে ক্ষতি হবে নিশ্চয়, তবে ফলনে প্রভাব ফেলবে না। আশা করি ঝড় ও শিলা বৃষ্টির ক্ষতির চেয়ে ফাল্গুনের এই বৃষ্টি মুকুল ফুটে গুঁটি বের হতেই বেশি উপকারি হবে।

মুষলধারে বৃষ্টিতে রাজশাহী নগরে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা

অন্যদিকে মুষলধারে বৃষ্টিতে রাজশাহী মহানগরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নগরের বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যায়। বৃষ্টি শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা পরও রাস্তাগুলোতে জলাবদ্ধতা দেখা গেছে। ফলে হঠাৎ বৃষ্টি ও রাস্তায় জলাবদ্ধতায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও অফিস ফেরত মানুষদের চরম বিপাকে পড়তে দেখা যায়।

স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফেরার সময় ভিজে একাকার হয়ে গেছে পি এন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সাইয়েদা আফসানা মিমি। সাথে ভিজে গেছেন স্কুলছাত্রী মিমির মা সাইয়েদা রাবেয়া আক্তারও।

তিনি বলেন, বাচ্চাদের স্কুল ঠিক ৪টায় ছুটি হয়েছে। ওরা বের হয়েছে ৫ মিনিট পর। রাস্তায় আসার পরপরই বৃষ্টি। রিকশা ঠিক করারও সময় পাওয়া যায়নি। একদম ভিজে গেছি। এমনিতেই জ্বর-ঠাণ্ডা, তার ওপর বৃষ্টিতে ভিজলাম। এবার অসুখ-বিসুখ বাঁধবে!