সিলেট মহানগর ছাত্রলীগে সাংগঠনিক স্থবিরতা
প্রায় দুই বছর ধরে কমিটি নেই সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের। এতে সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচিই এখন সিলেট নগরে পালন করা হয় না। আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণও কমেছে।
নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বছরের পর বছর ছাত্রলীগের রাজনীতি করেও দলীয় কোনো পরিচয় পাননি অনেকে। আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সুপারিশে অতীতে অনেকে ছাত্রলীগের নেতা হয়েছেন। যাদের সঙ্গে কর্মীদের কোনো সম্পর্ক নেই। ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে তাদের অপকর্ম দিনশেষে দলের কাঁধে পড়েছে।
জানা যায়, ২০১৫ সালের ২০ জুলাই গঠন করা হয় সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি। কমিটিতে আব্দুল বাছিত রুম্মানকে সভাপতি ও আব্দুল আলীম তুষারকে সাধারণ সম্পাদক, সজল দাস অনিক ও সৈকত চন্দ্র রিমিকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। কমিটির মেয়াদ দেওয়া হয় এক বছর। সেই কমিটি তিন বছর দায়িত্ব পালন করে। তবে তিন বছরেও ছাত্রলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়নি। এতে অনেক ছাত্রলীগ নেতাই নির্ধারিত বয়স পার হয়ে যাওয়ায় পদ-পদবী ছাড়াই ছাত্ররাজনীতি শেষ করেছেন।
এছাড়া নগর কমিটির আওতাধীন বেশিরভাগ ওয়ার্ডে কমিটি হয়নি। মহানগর ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ দুটি ইউনিট সিলেট এমসি কলেজ ও সরকারি কলেজে ছাত্রলীগের কমিটিও হয়নি। কমিটি না হওয়ায় ইউনিটগুলোর নেতাকর্মীদের ক্ষোভ ছিল দীর্ঘদিন ধরে।
২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি। সঙ্গে সংগঠনের নীতি আদর্শ পরিপন্থী নৈতিক স্খলনজনিত গুরুতর অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বহিষ্কার করা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম তুষারকে। অভিযোগ রয়েছে, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। যদিও পরে তুষারের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। তবে নতুন কমিটি আর হয়নি।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান, সিলেটে ছাত্রলীগের কমিটি হয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার সুপারিশে। আর ওই নেতারা শুধু নিজেদের পছন্দের লোকদের কমিটিতে রাখেন। সিলেট ছাত্রলীগ কমিটি গঠনে চারটি গ্রুপের প্রভাব বেশি। গ্রুপগুলো হলো, দর্শন দেউরী গ্রুপ, তেলিহাওর গ্রুপ, টিলাগড় গ্রুপ ও কাশ্মীর গ্রুপ। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের অনুসারীরা দর্শন দেউরী গ্রুপ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খানের ছায়ায় রয়েছে তেলিহাওর গ্রুপ, মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা বিধান চন্দ্র সাহার নেতৃত্বে রয়েছে কাশ্মীর গ্রুপ, সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতা রনজিত সরকারের টিলাগড় গ্রুপ। এই গ্রুপগুলো থেকেই গঠন করা হয় ছাত্রলীগের কমিটি। এতে বঞ্চিত হন দলের ত্যাগী নেতারা।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল বাছিত রুম্মানকে পাওয়া যায়নি। তবে ছাত্রলীগ নেতা আহমেদ সোহেল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘শুনেছি শিগগিরই কমিটি হবে। আমরা যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন চাই।’