চসিক নির্বাচন: বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বেকায়দায় আ'লীগ
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে বিপাকে পড়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। কোনভাবেই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সরাতে পারছে না দলটি। এ মিশনে ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্র থেকে দায়িত্ব পাওয়া নির্বাচন সমন্বয়কারী ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনও।
সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২২০ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। পরে বাতিল হয়েছে ৯ জনের। তিনটি ওয়ার্ড ছাড়া বাকি প্রতিটি ওয়ার্ডেই আওয়ামী লীগের দুই-তিন জন করে বিদ্রোহী আছেন। ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের প্রতিটিতেও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন।
দলীয় একাধিক সুত্র বলছে, ৪১ ওয়ার্ড অন্তত ৪৯ জন বিদ্রোহী থাকলেও তাদের মধ্য থেকে ২২ জনকে চিহ্নিক করা হয়েছে। যারা কোনভাবে দলীয় সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। গত ৫ মার্চ বর্ধিত সভার আয়োজন করে নগর আওয়ামী লীগ। প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করেও বিদ্রোহীদের কারও মন গলাতে পারেননি নেতারা। বরং বিদ্রোহীরা পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন প্রত্যাহার করে কাউন্সিলর পদ উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।
রোববার (৮ মার্চ) মধ্যে যদি প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করে তাহলে দল কঠোর সিদ্ধান্তে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন নেতারা। তবুও অনড় বিদ্রোহীরা।
ওইদিন বৈঠক শেষ করার পর নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বিদ্রোহীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তাদের বলেছি, রাজনীতি করতে হবে নীতি-আদর্শের ওপর ভিত্তি করে। সাময়িক পাওয়া-না পাওয়াকে বিবেচনায় না নিয়ে দলের সিদ্ধান্ত মেনে রাজনীতি করাই একজন প্রকৃত রাজনৈতিক কর্মীর কাজ। দল যাদের মনোনয়ন দিয়েছে, তাদের মেনে নিতে হবে। তাদের জিতিয়ে আনতে হবে। দলকে এগিয়ে নিতে হবে।
নির্বাচন সমন্বয়কারী ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, কেউ যদি দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে তাহলে তাকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। দলের পদ-পদবীতে থাকুক আর না-ই থাকুক, দলের নাম তারা কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। দলের কোনো সুযোগ-সুবিধা তারা ভোগ করতে পারবে না। এ ব্যাপারে দলীয়ভাবে জিরো টলারেন্স অবস্থান থাকবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।
এদিকে নগর আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক বার্তা২৪.কমকে বলেন, দফায় দফায় বিদ্রোহী প্রার্থিদের বোঝানো হচ্ছে। পাশাপাশি দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে, সিদ্ধান্ত নেয়া হবে সেটিও তাদের বলা হচ্ছে। আমরা আশা করছি তারা নিজেরাই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেবেন।
আগামী ২৯ মার্চ চট্টগ্রাস সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।