নৌকাডুবি: নববধূসহ তিনজনের সন্ধান মেলেনি ৪২ ঘণ্টায়ও
রাজশাহী নগরীর শ্রীরামপুরে পদ্মা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনার ৪২ ঘণ্টা পরও নিখোঁজ নববধূ সুইটি খাতুন পূর্ণিমাসহ তিনজনের সন্ধান মেলেনি। নিখোঁজ অন্য দু’জন হলেন- নববধূর ফুফাতো বোন রুবাইয়া খাতুন (১৩) এবং খালা আখি খাতুন (২৫)।
তাদেরকে উদ্ধার রোববার (৮ মার্চ) সকাল ৭টা থেকে ফের পদ্মায় নেমেছেন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। সঙ্গে রয়েছে বিজিবি, নৌ-পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় জেলেরা। উদ্ধারকারী দলের সাথে রয়েছেন বর আসাদুজ্জামান রুমন ও কনে পক্ষের লোকজন। তবে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নিখোঁজদের সন্ধান পায়নি উদ্ধারকারী দল।
নৌ-পুলিশের রাজশাহী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী মাসুদ জানান, রোববার সকাল ঘটনাস্থলের কিছুটা দূরে উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে- নিখোঁজদের কেউ-ই আর বেঁচে নেই। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা হতে যাওয়ায় মরদেহও ভেসে ওঠার কথা। কিন্তু এখনও কোনো খোঁজ পায়নি।
তিনি বলেন, ‘নদীর ভাটির দিকে নৌ-পুলিশ ও বিজিবি’র টহল দল ট্রলার নিয়ে ভাসমান মরদেহেরও সন্ধানে নেমেছে। আর ঘটনাস্থলে ডুবুরি ও স্থানীয় জেলেদের নিয়ে অভিযান চলছে।’
রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক জানান, নিখোঁজ সকলের সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী বিজিবি, নৌ-পুলিশ এবং ডুবুরিরা কাজ করছেন।
তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার করে টাকা প্রদান করা হয়েছে। যারা আহত হয়ে চিকিৎসাধীন তাদের চিকিৎসাভারও প্রশাসন বহন করছে। ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের একটি দল কাজ করছেন। তাদের দুই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও উঠে আসবে। তা পর্যালোচনা করে হতাহতের পরিবারকে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে।’
এদিকে, নৌকাডুবির ঘটনায় শনিবার (৭ মার্চ) রাত পর্যন্ত ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা হলেন- কনের দুলাভাই রতন আলী (৩২), চাচাতো বোন মরিয়ম (৮), চাচা শামীম (৩১), স্ত্রী মনি খাতুন (৪২), তাদের মেয়ে রোশনি (৭) ও কনের খালাতো ভাই এখলাস হোসেন (২২)।
হতাহতদের পরিবার সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) পদ্মার ওপারে পবা উপজেলার চরখিদিরপুর গ্রামের রুমন আলীর (২৬) সাথে এপারের ডাঙেরহাট গ্রামের সুইটি খাতুনের (২০) বিয়ে হয়। বিয়ের পর সুইটি শ্বশুর বাড়িতে ছিলেন।
শুক্রবার (৬ মার্চ) কনেপক্ষ বরের বাড়ি থেকে নবদম্পতিকে আনতে যায়। সন্ধ্যার কিছুসময় আগে তারা বরের বাড়ি থেকে বের হয়ে দু’টি নৌকায় করে কনের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়। পথিমধ্যে নগরীর শ্রীরামপুরের বিপরীতে নদীর মাঝামাঝি স্থানে নৌকা দু’টি ডুবে যায়।