প্রস্তুত মেডিকেল টিম, নেই করোনা নির্ণয়ে কিটস-স্ক্যানার

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল/ছবি: বার্তা২৪.কম

সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল/ছবি: বার্তা২৪.কম

দেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর থেকে রাজশাহীতেও ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্তরাও দৌঁড়চ্ছেন হাসপাতালে।

সোমবার (৯ মার্চ) সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগে ভিড় বেড়েছে রোগীর। তবে এখনো রাজশাহীতে করোনা আক্রান্তের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। সন্দেহভাজন কারও নামও আসেনি।

বিজ্ঞাপন

তবে বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় রাজশাহীতে নেয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। সংক্রামক ব্যাধি (আইডি) হাসপাতালের পুরোটা, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ৩৫ বেডের দু’টি করোনা ওয়ার্ড এবং মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প বসানো হয়। গঠন করা হয়েছে পৃথক তিনটি বিশেষ মেডিকেল টিম।

 জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্তরাও দৌঁড়চ্ছেন হাসপাতালে

তবে এতোসব প্রস্তুতি থাকলেও রাজশাহীতে নেই করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তে থার্মাল স্ক্যানার এবং কিটস। ফলে উত্তরাঞ্চলে সন্দেহভাজন কোনো রোগী পেলে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হবে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানানো হবে। যা বেশ লম্বা সময়ে প্রক্রিয়া বলছেন খোদ চিকিৎসকরা।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক সাইফুল ফেরদৌস বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সন্দেহভাজন কাউকে পেলে আমরা নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নির্নয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রে (আইইডিসিআর) পাঠাবো। সেখানে পরীক্ষা শেষে তারা রিপোর্ট পাঠাবেন। তবেই জানা যাবে- সন্দেহভাজন ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন কিনা।’

তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে আমরা এখনও কিটস এবং থার্মাল স্ক্যানার পায়নি। দুই সপ্তাহ আগে কিটস এবং স্ক্যানারের চাহিদা ঢাকায় আবেদন আকারে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এখনও কোনো সাড়া মেলেনি। ফলে যে প্রক্রিয়া আমাদের সামনে খোলা আছে, সেটাই অনুসরণ করতে হচ্ছে।’

রামেক হাসপাতালে ৩৫ বেডের দু’টি করোনা ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে

কিটস এবং স্ক্যানারের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আমরা উচ্চপর্যায়ে স্ক্যানার ও কিটসের চাহিদার কথা পুনরায় জানিয়েছি। উনারা দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। হয়তো দ্রুত রাজশাহীতে স্ক্যানার এবং কিটস সরবরাহ করা হবে।’

এদিকে, সোমবার (৯ মার্চ) সকালে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেডিকেল টিম গঠন, সেবাকেন্দ্র প্রস্তুত রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। আক্রান্ত কাউকে পাওয়া গেলে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল ও রামেক হাসপাতালে রাখা হবে। আর সন্দেহভাজনদের রাখার জন্য মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে ক্যাম্প প্রস্তুত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য বলেন, গঠিত বিশেষ মেডিকেল টিমের প্রত্যেকটিতে তিনজন করে চিকিৎসক ও দু’জন করে নার্স রাখা হয়েছে। টিমগুলো সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, রামেক’র বর্হিঃবিভাগ ও মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে মেডিকেল ক্যাম্পে কাজ করবে।

এখনো রাজশাহীতে করোনা আক্রান্তের কোনো খবর পাওয়া যায়নি

তিনি আরও বলেন, ‘গত ২৯ ফেব্রুয়ারি আমরা রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় ১১ সদস্য বিশিষ্ট পৃথক কমিটি করেছি। জেলা পর্যায়ের কমিটিতে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও সিভিল সার্জনকে সদস্য সচিব হয়েছেন। কমিটির সদস্যরা জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ ভাইরাস প্রতিরোধ ও শনাক্ত করতে বিভিন্ন পদক্ষপ গহণ করছে।

অপরদিকে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ থাকলেও করোনা মোকাবিলায় রাজশাহী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এখনও তেমন কোনো প্রচার-প্রচারণা বা সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগে চোখে পড়েনি। ফলে মহানগরীর বাসিন্দাসহ জেলা পর্যায়েও ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপক আতঙ্ক। তবে সোমবার সকাল থেকে নগরী ঘুরে ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতার নমুনা হিসেবে দেখা গেছে ব্যাপক হারে মাস্কের ব্যবহার।