হুঁশিয়ারিতে ভ্রুক্ষেপ নেই, মাঠে আ.লীগের ১০৭ বিদ্রোহী প্রার্থী

  • মুহিববুল্লাহ মুহিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম থেকে
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে অভ্যন্তরীণ কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে নগর আওয়ামী লীগ। তার বাস্তবতা মিলেছে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। যাদের পেছনের সেল্টার দলের শীর্ষ নেতারা।

দফায় দফায় বৈঠক, বহিষ্কারের মতো কঠোর হুঁশিয়ারির পরও প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেনি ১০৭ বিদ্রোহী প্রার্থী। আল্টিমেটামের ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও এসব বিদ্রোহী প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি আওয়ামী লীগ।

বিজ্ঞাপন

পরিস্থিতি সামাল দিতে ঢাকা থেকে উড়ে এসেছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। তাদের কোন নির্দেশনায় মানেনি বিদ্রোহী প্রার্থীরা। নগরীর ৫৫টি ওয়ার্ডে (সংরক্ষিতসহ) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের ১৬২ নেতাকর্মী। যাদের মধ্যে ১০৭ জনই বিদ্রোহী প্রার্থী।

চসিক নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বিদ্রোহীদের সঙ্গে বসে মনোনয়ন প্রত্যাহারের কঠোর বার্তা দেন।

বিজ্ঞাপন

এর আগে শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বিদ্রোহীদের ডেকে তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করা আহবান জানান। কিন্তু দফায় দফায় বৈঠক ও কঠোর বার্তা দেবার পরও তাদের নমনীয় করা যায়নি।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, রোববার (৮ মার্চ) ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন। মেয়র পদে একজন, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৫০ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে দুইজন তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। এখন ভোটের লড়াইয়ে আছেন মেয়র পদে ৬ জন, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১৬১ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৫৬ জন।

তাদের মধ্যে অধিকাংশই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এ অবস্থায় নানা চাপে দল সমর্থিত প্রার্থীরা। বিদ্রোহী প্রার্থীদের কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়বেন এমন শঙ্কায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও নানা জটিল সমীকরণে বিএনপি বাড়তি সুবিধা পেতে পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন সময় বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা আলোচনায় আসলেও শেষ পর্যন্ত সেটিও আলোরমুখ দেখছে না। তাই সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নয়, বরং বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে যেন বিএনপি প্রার্থী জিতে না যায় সেদিকেই এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। যেসব ওয়ার্ডে এমন সম্ভাবনা আছে বলে মনে করা হচ্ছে, শুধু সেসব ওয়ার্ডের বিদ্রোহীদের বসিয়ে দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে আওয়ামী লীগ।

নগর আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল এক নেতা বার্তা২৪.কমকে বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত নিলে বিদ্রোহীরা আরও আগ্রাসী হবে সে আশঙ্কায় মত বদলেছে মনোনয়ন বোর্ড। মেয়র প্রার্থীর কথা চিন্তা করে নির্বাচন পর্যন্ত বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না আওয়ামী লীগ।

এবিষয়ে জানতে চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান সমন্বয়ক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে একাধিকবার ফোন ও ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোন সাড়া দেননি।

তবে নগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বার্তা২৪.কমকে বলেন, এটি দলের ইন্টারনাল বিষয়। তবে যারা এখনো কাউন্সিলর হিসেবে দলের প্রার্থীর বাইরে দাঁড়িয়েছে। তাদের আমরা তালিকাভুক্ত করেছি। এ তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হবে। যে সিদ্ধান্ত আসবে, সেটি বাস্তবায়ন করা হবে।